সব কিছুর মধ্যেই সুন্দর খুঁজে পেতে চেষ্টা করি............
অপরিকল্পিত জনসংখ্যা
আজ সব খবরের কাগজেই একটা নিউজ-তাহচ্ছেঃ বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৪৪ লক্ষ! ১ লক্ষ ৫৫ হাজার বর্গমাইলের দেশে এত মানুষ!! ম্যালথাশিয়ান থিউরীও কি আমাদের দেশের জন্য বিকল হয়ে গেল!!!
অধিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি কোনো কোনো দেশে আশীর্বাদ হলেও আমাদের দেশের জন্য রীতিমত অভিশাপ। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে না পারলে জাতির জন্য অবধারিতভাবে তা বোঝা স্বরূপ। সীমিত পরিসরে ক্ষুদ্র এই বাংলাদেশে বর্তমানে মানুষ প্রতিবন্ধকতার মধ্যে বসবাস করছে এবং প্রতিনিয়ত যে হারে অপরিকল্পিতভাবে লোকসংখ্যা বাড়ছে তা রোধ করা না গেলে ভবিষ্যতে এদেশে ভয়াবহ সমস্যার সৃষ্টি হবে। দেশের সংখ্যাধিক্য জনগণের অশিক্ষা-কুশিক্ষা, অজ্ঞতা, উদাসীনতা, একাধিক কন্যা সন্তানের পর পুত্র লাভের প্রত্যাশা, সামাজিক-ধর্মীয় কুসংস্কারের কারণে ব্যাপক গতিতে লোকসংখ্যা বেড়ে চলেছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের "পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর" এর কার্য্যক্রম গত ৩/৪ বছর যাবত স্থবির হয়ে আছে।
বর্তমানে ইউ এস এইড পরিচালিত এস এম সি'র কার্য্যক্রমও সীমিত হয়েগিয়েছে। সেইসংগে রাষ্ট্রীয়, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে প্রচারণাও যথেষ্ঠ কম হচ্ছে।
অনিয়ন্ত্রিত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এদেশের প্রথম ও প্রধান সমস্যা। পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাবে বেকারের সংখ্যা বাড়ায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটচ্ছে। ইউরোপসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনুপাত মাইনাসের দিকে।
চীনে কোন দম্পতি একাধিক সন্তান নিতে চাইলে তার সম্পদের হিসাব দাখিল করে সরকারি সন্তুষ্টি অর্জন করতে হয়। স্বচ্ছল পরিবার প্রথম বাড়তি সন্তানের জন্য ছয় হাজার ডলার রাস্ট্রীয় কোষাগারে জমাতো দিবেই-সেই সংগে রাস্ট্রীয় নাগরিক সেবার সুযোগ বঞ্চিত হবেন। কেউ আইন অমান্য করলে (নিয়ন্ত্রিত সন্তান গ্রহণের ব্যাপারে) তাকে অবশ্যই জেল-জরিমানা ভোগ করতে হয়। কঠোর আইন ও এর প্রয়োগের ফলে চীনে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আছে। চীন এবং ভারতে আড়াইশ কোটি মানুষের বাস।
অথচ ঐ দুটি দেশের বিশাল আয়তনের কারনে বোঝার উপায় নেই-ঐ দুটী দেশে জনসংখ্যার আধিক্য! আমাদের ঢাকার গুলিস্তান, ফার্মগেইট, মালিবাগ, যাত্রাবাড়ি, মহাখালি কিম্বা মগবাজার মোড়ে দাঁড়িয়ে যত লোক সমাগম দেখা যাবে-তার চার ভাগের এক ভাগ মানুষের জটলাও ভারত কিম্বা চীনের কোথাও দেখা মিলবেনা!
নব্বই দশকের মাঝামাঝি পাক-ভারত পারমাণবিক অস্ত্র প্রদর্শনের সময় পৃথিবীব্যাপী তীব্র উত্তেজনার সময় টাইম ম্যাগাজিনে একটি কার্টুনের কথা বেশ মনে পড়ছে। ঐ কার্টুনটিতে দূর ভবিষ্যতে পৃথিবীর এক কম্পিত চিত্রে দেখানো হয়েছিল রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি, মাঠ-প্রান্তর সর্বত্র মানুষ আর মানুষ। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ধরনী মানুষ ধারণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। কার্টুনের ক্যাপশনে লেখা পৃথিবী ধ্বংসের জন্য পারমাণবিক যুদ্ধের প্রয়োজন নেই, মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যাই যথেষ্ট।
বাংলাদেশের অপরিকল্পিত জনসংখ্যা বৃদ্ধি আর ব্যঙ্গচিত্রের (কার্টুনটির) বিষয়বস্তুর মধ্যে মিল যেন খুঁজে পাওয়া যায়। রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারকদের এ ব্যাপারে ভাবনার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।