একদিন তৎকালীন আব্বাসীয় রাষ্ট্রপ্রধান বাগদাদের মাদরাসা পরিদর্শনে আসেন ছদ্মবেশে এবং গোপনে ছাত্রদের মানসিকতা যাচাই করেন-তারা কি উদ্দেশ্যে ইলম অর্জন করছে ? তাই তিনি একজন ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি উদ্দেশ্যে পড়া-লেখা করছ ? সে বলল, আমি এজন্য পড়াশুনা করছি যে, আমার পিতা একজন বিচারক । আমি আলিম হলে আমিও বিচারক হতে পারব । এরপর তিনি দ্বিতীয় ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলেন, সে বলল, আমার পিতা মুফতি । আমি মুফতি হওার উদ্দেশ্যে পড়াশুনা করছি । মোটকথা যাকেই জিজ্ঞেস করলেন, সে দুনিয়াবী কোন উদ্দেশ্যে বলল ।
বাদশাহ খুব রাগান্বিত হলেন যে, আফসুস ! ইলমে দ্বীন দুনিয়ার জন্য পড়া হচ্ছে এবং হাজার হাজার টাকা অপচয় হচ্ছে। অতঃপর প্রকোষ্টের এক কোণায় বসা এক বালককে দেখতে পেলেন অত্যন্ত সাধারণ পোশাকে বসে কিতাব পড়ছে । তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেন পড়ছ বাবা ? সে উত্তরে বলল, আমার এখন কথা বলার কোন সময় নেই; অন্য সময় আসেন । রাষ্ট্রপ্রধান পরিচয় গোপন করে বললেন, আমি দূর থেকে মাদরাসাটি দেখতে এসেছি, তোমাদের সাথে একটু কথা বলেই ফিরে যাবো । আবার কখন আসি তো বলা যায় না ।
ছোট ছেলেটি বলল, আমি কুরআন-হাদীস ও যুক্তিবিদ্যা অধ্যয়নে জানতে পেরেছি আমাদের একজন প্রকৃত মালিক আছেন, যিনি আসমান ও জমিনের অধিপতি । আর মালিকের আনুগত্য করা আবশ্যক । তার সন্তুষ্টি অনুযায়ী চলতে হয়, অসন্তুষ্টি থেকে বাঁচতে হয় । আমি এজন্য পড়ছি যে, আমি তার সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির বিষয় সম্পর্কে অবগত হব । বাদশাহ শুনে খুশি হলেন এবং পরিচয় দিলেন যে, তিনি বাদশাহ ।
তিনি বললেন, আমি স্বিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম যে, এ মাদরাসা বন্ধ করে দিব কিন্তু তোমার জন্যই তা বহাল রাখা গেল । ইলম অর্জন এ উদ্দেশ্যেই হওয়া চাই ।
সে ছোট ছেলেটি হলেন- ইমাম গায্যালী (রহঃ) ।
--মাসিক আত্-তাওহীদ (জুলাই' ১০)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।