স্বজনদের সঙ্গে যারা ঈদ করতে ঢাকা ছেড়েছিলেন তাদের কর্মস্থলে ফিরতে বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হচ্ছে। ঈদের পরপরই দুই দিন হরতাল থাকায় লাখ লাখ মানুষের ঢাকায় ফেরা বিলম্বিত হয়। বৃহস্পতি ও শুক্রবার ঢাকায় ফেরার পথে তারা অসহনীয় যানজটের শিকার হয়েছেন। ৫-৬ ঘণ্টার রাস্তা পার হতে অনেকের দেড় দিন পর্যন্ত সময় লেগেছে। শনিবারও মহাসড়কগুলো ছিল যানজটে অচল। ঈদে যানজট নিরসনে এ বছর কর্তৃপক্ষীয় উদ্যোগ ছিল চোখে পড়ার মতো। ঈদের তিন দিন আগে মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ঈদ উপলক্ষে সড়ক মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়ায় যাত্রীদের ঘরে ফেরার ধকল ছিল অপেক্ষাকৃত কম। কর্মস্থলে ফেরার সুবিধার্থে ঈদের পর তিন দিন মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। কিন্তু দুই দিন হরতাল থাকায় সে সুফল আদৌ অনুভূত হয়নি। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক বৃহস্পতি ও শুক্রবারের যানজটে অচল হয়ে পড়েছিল। প্রায় ৫০ কিলোমিটারজুড়ে ছিল যানজটের থাবা। ঢাকা-দিনাজপুর সড়কেও সৃষ্টি হয় একই অচলাবস্থা। সময় মতো গাড়ি না পেঁৗছার কারণে বাস কাউন্টারগুলোতে শত শত মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। অব্যবস্থাপনা আর কাণ্ডজ্ঞানহীন রাজনীতির কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে লাখ লাখ যাত্রী। যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা পড়ে অসহ্য গরমে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়েন। দেরিতে কর্মস্থলে ফেরার জন্য শত শত কোটি টাকার উৎপাদন ক্ষতিরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রেও ঢাকায় ফেরার বিড়ম্বনা অপপ্রভাব সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সড়ক পথের তুলনায় লঞ্চযাত্রীদের ভোগান্তি ছিল অনেক সহনীয়। বাড়তি ভিড়ের কারণে ভোগান্তি কিছুটা বাড়লেও নৌপথে সময় মতো কর্মস্থলে ফেরার সুযোগ পেয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। তবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক পথের যাত্রীদের ফেরি ঘাটগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে পর্যাপ্ত ফেরির অভাবে। প্রশ্ন হলো, এ দেশের মানুষ হরতালের নেতিবাচক রাজনীতির কাছে আর কতকাল জিম্মি হয়ে থাকবে? জনগণের জন্য রাজনীতি- মুখে এ স্লোগান তোলা হলেও কার্যক্ষেত্রে তাদের জিম্মি করা সত্যিকার অর্থে দুর্ভাগ্যজনক। এ প্রবণতার অবসান হওয়া দরকার।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।