বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর লন্ডনে বসবাসরত নেতাদের আর্থিক বৃত্তি নিয়ে বর্তমানে ১১৫ জন ব্যারিস্টার লন্ডনে পড়ালেখা করছেন। এ ছাড়া গত ১ বছরে জামায়াতের টাকায় লেখাপড়া করে ৪০ জন ব্যারিস্টার বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছেন বলেও জানা গেছে। লন্ডনে বসবাসরত নেতাদের পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, চ্যারিটি সংস্থা, সংবাদ মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে কমপক্ষে দেড় হাজার কর্মীর। মূলত ইস্ট লন্ডনসহ লন্ডনের অন্যান্য শহরে ট্রাভেলস, মানি ট্রান্সফার, সলিসিটার ফার্ম, কলেজ ব্যবসা, স্টুডেন্ট কনসালটেন্সি, গ্রোসারি শপের ব্যবসার একটি বড় অংশের ব্যবসায়ী লন্ডনে বসবাসরত জামায়াতের নেতারা। লন্ডনে যেখানে একজন সাধারণ ওভারসিজ স্টুডেন্টের চাকরি পাওয়া অনেকটা সোনার হরিণের মতো জামায়াত নেতাদের সহায়তায় বাংলাদেশ থেকে আসা ছাত্রশিবিরের কর্মী ও নেতাদের লন্ডনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই চাকরি নিশ্চিত হয়ে যায়। ইস্ট লন্ডনে জামায়াতের ব্যারিস্টারদের পরিচালিত ফার্মের সংখ্যা ১০ এর অধিক। একেকটি ফার্মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ৫ থেকে ৭ জন ব্যারিস্টার ও সলিসিটার। ইস্ট লন্ডন থেকে প্রকাশিত ১৪টি নিয়মিত পত্রিকার মধ্যে অন্তত ৭টি পত্রিকা রয়েছে জামায়াত নেতা পরিচালিত যার মধ্যে বেশিরভাগই শুক্রবারে বিভিন্ন মসজিদের সামনে ফ্রি বিতরণ করা হয়। এবং এসব পত্রিকার বিজ্ঞাপনদাতার বড় অংশ হচ্ছেন জামায়াত নেতাদের প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া লন্ডন থেকে প্রচারিত ৬টি টেলিভিশনের অন্তত ৩টিতে জামায়াতের সক্রিয় কর্মীরা কাজ করছেন। ইস্ট লন্ডন থেকে পরিচালিত বেশ কয়েকটি কলেজের মেজর শেয়ার হোল্ডার হচ্ছেন ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান নেতারা। এসব ভিসা কলেজের মাধ্যমে ব্যাপকহারে দলীয় কর্মী আনা হয়েছে লন্ডনে স্টুডেন্ট ভিসায়। এদের সক্রিয় করে বেশ কিছু অঙ্গসংগঠন সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে লন্ডনে। এসব সংগঠন বিভিন্ন দিবসে ইস্ট লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে অবস্থিত শহীদ মিনার দখল, বাংলাদেশ হাই কমিশন ঘেরাও, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে মানববন্ধনসহ বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার লক্ষ্যে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে জামায়াতের সদস্যরা বিভিন্ন শহর থেকে বাস রিজার্ভ করে শত শত কর্মীদের দিয়ে অনুষ্ঠান সফল করে। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সেক্রেটারি সাংবাদিক সৈয়দ আনাস পাশা বলেন, জামায়াত সবসময়ই এখানে সক্রিয় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এমনভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে অনেক আগেই যেন তারাই ব্রিটেনের মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করে। এ ছাড়া তাদের বেশকিছু প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই মূলধারার সঙ্গে জড়িত যার ফলে তাদের ব্রিটেনের রাজ পরিবারের সঙ্গেও ভালো যোগাযোগ রয়েছে। জামায়াতের ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা বলেন, জামায়াতে ইসলামী কখনো কোনদিন দলীয় কর্মীদের লেখাপড়া বা অন্য কিছুর জন্য ফান্ডিং করে না। ১১৫ জন ব্যারিস্টার জামায়াতের টাকায় পড়ছে সংবাদটি ঠিক নয়। তবে তিনি স্বীকার করেন, জামায়াত সমর্থন করে এমন অনেক ব্যারিস্টার বাংলাদেশে ফিরে গেছেন তাদের ভবিষ্যৎ কেরিয়ার চিন্তা করে। লন্ডনে জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, জামায়াতে ইসলামী কোনোদিন কোনো জায়গায় ব্যবসা করেনি তবে জামায়াতের অনেক নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং অনেক জামায়াত কর্মী সেখানে কাজ করে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।