আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক: ফেনীতে চামড়া শিল্পে ধস



অ্যানথ্রাক্স আতঙ্কে গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া কমে যাওয়ায় ফেনীতেও ধস নেমেছে রপ্তানি আয়ের তৃতীয় বৃহত্তম খাত চামড়া শিল্পে। এ শিল্পে যুক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, অ্যানথ্রাক্স ছড়িয়ে পড়ার পর গরু-ছাগলের চামড়ার সরবরাহ আগের চেয়ে প্রায় ৮৫ ভাগ কমে গেছে। পাঁচগাছিয়া বাজারের কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ীরা বলেন, "রোজার ঈদে যেখানে ফেনীতে ৪ শতাধিক গরু জবাই করা হয়। সেখানে এবার মাত্র শতাধিক গরু জবাই হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে গড় অনেক নেমে এসেছে।

আসছে কোরবানির ঈদের আগে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে এ শিল্পে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট সিরাজগঞ্জের বেলকুচি ও কামারখন্দ উপজেলায় প্রথম গরুর মধ্যে তড়কা বা অ্যানথ্রাক্স রোগের সংক্রমণ দেখা যায়। পরে তা মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার পর্যন্ত ১২ জেলায় ৫৮৩ জন মানুষ অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছে। চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আতঙ্কিত না হওয়ার কথা মুখে বলা হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য জোরালো কোনো সরকারি উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

ফেনী মুক্ত বাজারের নুরনবীর মাংস দোকানসহ ৫টি দোকানে প্রতিদিন গড়ে ১০মণ গরুর গোশত বিক্রি হতো। এখন তা নেমে এসেছে ২/৩ মণে। ছাগলের মাংস বিক্রিও কমেছে অনেক। নুরনবী বলছেন, আতঙ্কে গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া ছেড়েছে ফেনীবাসী। তিনি বলেন, "অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গরু মারা যাওয়ার কথা।

অনেক পথ পাড়ি দিয়ে আসা অসুস্থ গরুর বেঁচেই থাকারই কথা নয়। এখন সুস্থ গরু জবাই দেওয়া হলেও মানুষ অনেক কম কিনছে। এছাড়া প্রতিদিন পৌরসভার পশু কর্মকর্তারা জবাইখানা পশু পরীক্ষা করে জবাই ও গোশতে সীল মারছে। অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে আসছে মাংস ব্যবসায়ীরা। রবিবার পাঁচগাছিয়ায় মাংস ব্যবসায়ী কমিটির সভায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন।

তারা বলেন, সম্প্রতি ফেনীর ছাগলনাইয়ায় 'ষড়যন্ত্র' করে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। তারা এর তদন্তও দাবি করেন। "কেবল মাংস ব্যবসায়ী নন। এর সঙ্গে জড়িত কসাই ও সহযোগী মিলিয়ে বড় একটি জনগোষ্ঠী এখন মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন। ক্ষতির মুখে চামড়া শিল্পও।

পাছগাছিয়ার গরু ও চামড়া ব্যবসায়ী নুরনবী মেম্বারের হিসাবে ফেনীতে বছরে যে পরিমান গরু জবাই হয়। এর মধ্যে অর্ধেকই জবাই হয় কোরবানির সময়। এ সময় লাখ লাখ গরু-ছাগল কোরবানি দেয়া হয়। কোরবানির আগে আতঙ্ক দূর করা না গেলে চামড়া শিল্পে বিপর্যয় ঠেকানো যাবে না। আতঙ্ক দূর করা না গেলে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবে ।

ফেনীর সিভিল সার্জন ডাঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলছেন, অ্যানথ্রাক্স নতুন কোন রোগ নয়। আগেও এ রোগ ছিল। এটি কোনো মরণব্যাধিও নয়। রোগটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। আক্রান্ত রোগী অতি সাধারণ চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে যায়।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আমীর হোসেন বলেন, কেবল আক্রান্ত পশুর সংস্পর্শে এলে রোগটি ছড়ায়। আর মানুষ আক্রান্ত গরুর গোশত খেলে এ রোগে আক্রান্ত হয়। তিনি বলেন, ফেনীতে কোন অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগী বা পশু পাওয়া যায়নি। সুতারাং আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। Click This Link


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.