আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমিরাতে বাঙালিদের ঈদপালনের সাতকাহন

সম্পাদনা করি আমিরাত-বাংলা মাসিক মুকুল। ভালবাসি মা, মাটি ও মানুষকে..

ঈদের বাঁকা চাঁদটা আকাশে দেখার পর পরই দেশের মতো লাফিয়ে উঠে আমিরাতে বসবাসরত উৎসবপ্রেমী বাঙালিরা। আর ঈদের কেনাকাটা শুরু করেন ১৫ রমজানের পর থেকেই। সেই থেকে থাকে মোবাইল এর মাধ্যমে দুবাই থেকে আবুধাবী, কিংবা শারজাহ থেকে রাস ইল খাইমাহ সবখানেই চলে ঈদের নিমন্ত্রণ। এইদেশে ঈদ ছুটি থাকে ২ দিনের।

তাই কোম্পানীতে কাজ করা মানুষেরা ঈদের ছুটিতে মিলতে চান পরিজন-প্রিয়জনদের সাথে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আয়োজন করে ঈদ পুনর্মিলনীর। আর সেদিকে পিছিয়ে নেই রাজনৈতিক সংগঠনগুলোও। যদিও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটি দল এখানে সক্রিয়। আবার দুই দলের মাঝে আছে কোন্দল।

রয়েছে একাধিক কমিটি। সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাঝে সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ, আমিরাত শাখা ও আমিরাত-বাংলা মাসিক পত্রিকা মুকুল আয়োজন করে ঈদ পুনর্মিলনীর। আর এতে ছুটে আসেন সকল দল ও মতের বাঙালিজন। এমনটি জানালেন মাসিক মুকুলের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আব্দুল আজিজ সেলিম। অপরদিকে সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নুরুল হকের মতে, দুবাই এর বাঙালিপাড়া খ্যাত দেরা বাংলাবাজার সংলগ্ন এলাকায় জমে ওঠে প্রাণের মেলা।

সকাল হতে সেই নিশিরাত পর্যন্ত চলে কোলাকুলি আর আনন্দের ঢল। এতো গেল ঈদ পালনের সুখপর্ব। এখানে সুখের চেয়ে দুঃখটাই বেশি। বেশিরভাগ বাঙালি শ্রমিক হওয়াতে ঈদ তাদের কাছে আলাদা কিছু বলে মনে করেন না তারা। নিজে না খেয়ে দেশে টাকা পাঠাতে পারলে এতেই আনন্দ পান তারা।

এমনই এক শ্রমিকের নাম আলতাফ হোসেন। আলতাফের বাড়ি ঢাকার মানিকগঞ্জে। নিজের ভাগ্যকে দায়ী মনে করেন তারা। ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না। তাই ঈদ আনন্দ তাদের মাঝে লক্ষ্য করা যায়না।

অপরদিকে পরদেশে পরবাসী হওয়া অনেকেই এই ২ দুদিনের ছুটি ঘুমিয়ে পার করেন। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানার এমন এক তরুণ রাখাল। দেশে থাকলে ঘুরাঘুরি আর বন্ধুদের সাথে হৈ হুল্লুড় করে দিন কাটালেও এখানে কাটে ঘুমিয়ে। রাখালের মতো প্রায় ৮০ ভাগ বাঙালি এমন দিন কাটান বলে জানা গেছে। আর বেশিরভাগ লোকের ধুম পড়ে যায় কথাবলাতে।

দেশের পরিজনদের সাথে কথাবলেই এরা কাটিয়ে দেন ঈদের দিন। আরব আমিরাতে ঈদের বাজার জমে ওঠার সাথে সাথে অনেকটা বিক্রি বেড়ে যায় বাঙালিদেরও। তার মাঝে পৃথিবী বিখ্যাত আতর এর ব্যবসা এখানে জমজমাট। সৌদি আরব, কাতার, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের সবকটি দেশ থেকে ক্রেতা আসেন আতর কিনতে। আর এসব আতর বেশি আসে সিলেট এর সুজানগর থেকে জানালেন ঐ গ্রামের সন্তান খলিলুর রহমান খলু।

ব্যবসা জমে ওঠে আগের চেয়ে অনেক। তাই ব্যস্ততায় পার করা লাগে এমন ধারণা আতর ব্যবসায়ি মশকুর আহমদের। সে বিয়ানীবাজারের ছোটদেশ গ্রামের ছেলে। শুধু আতর নয় বাঙালিরা নেমে পড়েন কেনাকাটায়। তাই ভীড় লেগে থাকে সব দোকানেই।

দেশের মতো এখানে দাম নিয়ে কষাকষি কম হয় বলে স্বস্তি ব্যবসায়ীদের। আর তাতে খুশি ক্রেতারাও। এমনই সুখ-দুঃখের দোলাচল আর জমে ওঠা পরিবেশ নিয়ে কেটে যায় আরব আমিরাতের বাঙালিদের ঈদ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.