পিনপতন নিস্তধ্বতা
গত বছর (২০০৯) এই সময়টাতে (জুলাই) আমি খুবই টেনশনে ছিলাম নিজেকে নিয়ে। কোন কিছুতেই স্থিরতা ছিলোনা। আসলে আমার স্বভাবে স্থিরতা জিনিসটার একটু ঘাটতি আছে। সেটা অবশ্য প্রকাশিত হয়না। আমি ভেতরে ভেতরে অনেক বেশি ছটফটে।
যেটার প্রকাশ সামান্যই ঘটে আমার আচরণে। যাইহোক আমার টেনশনের মূল কারণটা ছিলো স্থিরতা দরকার। কোন একটা জিনিসের মধ্যে আটকে ফেলতে হবে নিজেকে, না হলে এই জীবনে আমার কিছু হবেনা। এই চিন্তার পিছনে যথেষ্ট কারণও ছিলো। ছোটবেলা থেকে পড়ালেখার বাইরে আমার গুন (এক্সট্রা কারিকুলাম একটিভিটিজ) বলতে মোটামুটি একটা জিনিসই ছিলো, সেটা হচ্ছে লেখালেখি।
গুন বলতে আসলে মাঝে মাঝে পত্রিকায় লেখা ছাপা হতো, ছোটদের পাতায়! আর পরে পাঠক সংগঠনের পাতাগুলোতে। পরিমান তেমন ছিলোনা। কিন্তু আগ্রহ ছিলো। লিখতে থাকতাম। লেখালেখি নিয়েই কিছু একটা করার ইচ্ছা ছিলো।
কিন্তু ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর যেন ভাটা পড়লো। লেখালেখির পরিমান কমে গেলো। এ নিয়ে একটু হতাশও ছিলাম যে লেখালেখি মনে হয় আর হবেনা আমাকে দিয়ে। শেষ একটা চেষ্টা করলাম, দেখি পারি কিনা। শীর্ষ নিউজ ডটকম এর বিজ্ঞাপন দেখলাম পত্রিকায়।
রিপোর্টার নেবে সারা দেশে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধির জন্য একটা সিভি পাঠিয়ে দিলাম। হলে হবে, নাহলে নাই। এটাই অফিসিয়ালি আমার প্রথম সিভি জমা দেয়া। এবং কপাল ভালো ছিলো, হয়ে গেলো।
নতুন কাজ পুরো আগ্রহে শুরু করলাম। এক বিষয়ে যেমন আমার দীর্ঘদিন আগ্রহ থাকেনা তেমনি নতুন কোন কাজে আমার আগ্রহের শেষ নেই। এই কাজটা শুরু করে লাভ তো হলোই বাড়তি গতিও যোগ হলো লেখালেখিতে। আমার লেখালেখির পুণর্জাগরণ বলা যায়। নিয়মিত লেখা শুরু করলাম।
লেখাগুলো ছাপাও হতে থাকলো। আগ্রহও বাড়তে লাগলো। এখন তো লেখালেখির উপরই আছি। পত্রিকা, নিউজ, কবিতা, ব্লগ, ফেইসবুক লেখার কোন জায়গা ফাঁকা নেই। এই কাজটা মনে হয় আর ছাড়তে পারবোনা।
সাংবাদিকতার এক বছরে অর্জন অনেক কিছু, আমার তুলনায় অনেক বেশি। অফিসিয়াল ফাঁপড় কাকে বলে কয়েকবার শিক্ষা হয়ে গেছে। ফুলটাইম চাকরিতে ঢুকলে পুরোনো ভূলগুলো আর হবেনা। আর সাংবাদিকতার কারনে ভাবনার পরিধিও বেড়েছে। জাতীয়, আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছি, লিখছি।
বাংলা টাইপিং এর প্র্যাকটিস হয়ে যাচ্ছে। নিজে নিজে আয় করতে শিখেছি। নিজের আয় যে কি জিনিস, সেই স্বাদটা পাচ্ছি, বেশ সুস্বাদু!!
সবকিছু মিলিয়ে যে জিনিসটা চাচ্ছিলাম সেটা হয়ে গেছে একটা রুটিনের মধ্যে এসে গেছি। অন্তত চাকরিবাকরির ব্যপারে সিরিয়াস কিছু চিন্তাভাবনা মাথায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। অভিজ্ঞতা বাড়ছে।
লেখালেখি চলছে, চলবে। সবকিছু মিলিয়ে নিজের জীবনটা দারুনভাবে উপভোগ করছি। পুরোটাই লাভ!
২২৭/বি শহীদ সালাম বরকত হল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
১৯ শ্রাবণ, ১৪১৭। ৩ আগস্ট,২০১০।
মঙ্গলবার। ১৬.৩৬
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।