ফেনী জেলার ধলিয়া ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের জনৈক ব্যবসায়ী এবিএম ইয়াহইয়া পায়ের চিকিৎসা করাতে ঢাকা আসেন। উঠেন মোহাম্মদপুরের শেখেরটেকে অবস্থিত ছেলের বাসায়। পরদিন সকালে বাসা থেকে রিক্সায় করে রওয়ানা দেন ডাক্তারের উদ্দেশে। রিক্সায় উঠেই তিনি বারবার নেমে যেতে চাইছেন। পাশে থাকা ছেলেকে বলছেন, রাস্তার যে করুণ অবস্থা তাতে হেঁটে যাওয়াটাই ভালো।
শংকর বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে ১৫ মিনিটের জায়গায় লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা। ডাক্তার দেখিয়ে দুপুর ২টার দিকে বাসায় এসে দেখেন বিদ্যুৎ নেই। নামাজ পড়বেন কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় পানিও নেই। বিকেল ৫ টায় বিদ্যুৎ আসে। বাসায় এসে জানলেন সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত গ্যাস ছিলনা।
একা একা নিজের অজান্তেই আফসোস করে বলতে লাগলেন, একটি দেশের রাজধানীর অবস্থা যদি এমন হয় তাহলে দেশের উন্নতি কি করে সম্ভব? অথচ রাজধানীকে বিবেচনা করা হয় দেশের প্রতিচ্ছবি হিসাবে। এ ছাড়াও হত্যা, চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি, দখল, টেন্ডারবাজি, নারী নির্যাতন, যৌন ব্যবসা, এসিড নিক্ষেপ, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ বিড়ম্বনায় বিপর্যস্ত রাজধানীর জনজীবন। এসবের সাথে সরকারদলীয় নেতা কর্মীরাই বেশী জড়িত। আইন-শৃংখলার চরম অবনতির কারণে ঢাকা পরিণত হয়েছে মৃত্যু পুরিতে। দিন যতই যাচ্ছে ততই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শহর ঢাকা।
অপরাধ : প্রকাশ্যে হত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ব্যবসায়ীকে অপহরণ, গণডাকাতি আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের বক্তব্যে তা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠে। সংসদে তিনি বলেছেন, গত ১৭ মাসে দেশে ৫ হাজার ৬৩৫টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। নারী নির্যাতনের মামলা হয়েছে ১৮ হাজার ৬২৩টি। সেন্টার ফর মিডিয়া রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (এমআরটি) ষান্মাষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, গড়ে প্রতিদিন দেশে ৭ জনেরও বেশী খুনের ঘটনা ঘটছে।
বছরের প্রথম ৬ মাসে খুন হয়েছে ১ হাজার ৩০১টি। রাজধানীতে গত ৫ মাসে খুন হয়েছে ১১৪টি। গত ৬ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে ৬১। সাংবাদিক নির্যাতন ৫২টি, ধর্ষণ ২৯১টি, নারীর উপর সহিংসতা ১৬৩টি, রাজনৈতিক সহিংসতা ১১৩টি। প্রকাশ্যে অনেক খুনের ঘটনা ঘটলেও খুনিরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
এখন আবারো শুরু হয়েছে গুপ্তহত্যা। এটি '৭২-৭৫ সালে বেশী ছিল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর তা আবার শুরু হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম নিখোঁজ রয়েছে। দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তিনি গুপ্তহত্যার শিকার হতে পারেন।
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। ঢাবি শিক্ষক ও বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীসহ সারাদেশে খুন, ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডাবাজি সবকিছুই বেড়েছে এবং প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। কারা এর সাথে জড়িত তা সরকারও জানে। রাজনৈতিক আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে এসব অপরাধ বেড়েই চলছে।
গত মে মাসে রাজধানীতে খুনের ঘটনা ঘটেছে ২৬টি।
এছাড়াও ৬টি ডাকাতি, ১৮টি দস্যুতা, ১১১টি নারী ও শিশু নির্যাতন, ৫টি অপহরণ, বিভিন্ন ধরনের চুরি ১২১টি এবং গাড়ি ও মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে ৫৬টি। ৮৩৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার, উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪২ লাখ ১২ হাজার ৬৪৮ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। চাহিদা অনুযায়ী দুই লাখ টাকা ঘুষ দিতে না পারায় রমনা থানার একজন এসআই বাবুল গাজী (৪০) নামের একজন অটোরিকশা ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে নিহতের পরিবার থেকে অভিযোগ উঠেছে। রাজধানীর মগবাজারের নয়াটোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মায়ের কোলও সন্তানের জন্য নিরাপদ নয়।
অপহরণ : মায়ের কোল থেকে শিশুসন্তানকে ছিনিয়ে নিয়ে মুক্তিপণ দাবির মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে। ৩০ জুন মা জুলেখা আখতার ১০ মাসের শিশু সানজিদা আখতার মাহিকে নিয়ে বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। সাভার থেকে গাড়িতে চড়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ওভার ব্রিজের নিচে পৌঁছলে জুলেখা আখতারের কোল থেকে এক যুবক শিশু মাহিকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে মিরপুরের দারুস সালাম এলাকা থেকে মাহিকে উদ্ধার করে। অপহরণকারীরা ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
হুমকি দেয়া হয় মুক্তিপণ না দিলে শিশুটিকে হত্যা করা হবে। পুলিশ পরিচয়ে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে অপহরণের চেষ্টার সময় ৩০ লাখ টাকা ও দুই ব্যবসায়ী উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঢাকার আশুলিয়ার এক স্কুল ছাত্রকে অপহরণের পর তার বাবার কাছ থেকে মুক্তিপণ বাবদ ৫ হাজার টাকা আদায় করেছে পুলিশের এক সোর্স। ঘটনা তদন্ত শেষে র্যা ব নিশ্চিত হয়েছে পুলিশের ঐ সোর্সের সঙ্গে রাজধানীর কয়েকটি থানার ওসির সম্পর্ক রয়েছে। অপহৃত স্কুল ছাত্রের পিতা মোশারফ হোসেন জানান, তার ছেলে সাখাওয়াত হোসেন আশুলিয়া শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র।
গত ১৩ এপ্রিল সাখাওয়াত স্কুলে যাওয়ার পর পূর্ব ডেন্ডাবরের বাড়িতে আর ফিরে আসেনি। ১৬ এপ্রিল সকালে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি তাকে ফোন করে জানায়, সাখাওয়াত তার কাছে আছে। তাকে ফেরত পাওয়ার জন্য মুক্তিপণ বাবদ দিতে হবে এক লাখ টাকা।
চাঁদাবাজি : নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বেস্টনী ডিঙিয়ে রাজধানীর কমলাপুর ইনার কন্টেইনার ডিপোতে ঢুকে (আইসিডি) পিএসআই কোম্পানির প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি করছে সন্ত্রাসীরা। চাঁদার পরিমাণ ১ লাখ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
চাঁদা না দিলে আইসিডি থেকে বের হওয়ার পর তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এ কারণে অনেকেই ভয়-আতঙ্কে নীরবে চাঁদা দিয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে কমলাপুর আইসিডিতে ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিষয়টি মতিঝিল থানা পুলিশকে লিখিত জানানো হয়েছে। রাজধানীর সর্বত্র একই চিত্র।
ফুটপাতের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের ব্যবসায়ীকে চাদা দিতে হচ্ছে। এর সাথে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরাই জড়িত বলে ভিকটিমরা জানান।
নারী নির্যাতন : নারী ও শিশু নির্যাতন সম্প্রতি আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে গেছে। নারী নির্যাতনের ধরনও পাল্টে গেছে অনেকটা। ইভটিজিং-এর পাশাপাশি এখন মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটেও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত।
এমনকি তরুণীদের ছবি ব্ল্যাকমেইল করে সিডি তৈরির পর বাসাবাড়িতে পাঠিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবির ঘটনাও ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ নেত্রীরা ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইডেন মহিলা কলেজের নিরীহ অনেক ছাত্রীকে দিয়ে দেহব্যবসা এবং নেতাদের মনোরঞ্জনের জন্য নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠে। এ নিয়ে অনেক বাবা-মা মেয়েকে ইডেন কলেজ থেকে সরিয়ে অন্যত্র ভর্তি করিয়েছেন বলেও জানা গেছে। গত ১৭ মার্চ ঢাকার উত্তরা থানায় এক অসহায় পিতা একটি জিডি করেন। জিডি নং ১৩১৫।
উত্তরা রাজউক মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী তার দুই মেয়ের ছবি ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করা হচ্ছে তার কাছে। জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সম্পাদক এভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি বলেন, আইনগত নানা জটিলতার কারণে এসব ঘটনার প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা। তিনি জানান, ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ঘটনা নারী নির্যাতন ও অপরাধের একটি নতুন ডাইমেনশন। এসব ঘটনায় অনেক পিতা-মাতা ও পরিবার অসহায়। তিনি বলেন, এই ঘটনাগুলো কি হারে বাড়ছে তা কল্পনাও করা যায় না।
গত ৯ মে ঢাকায় একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বারে ঢাকার ইডেন কলেজের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে। চলছে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। এসব ছাড়াও যৌতুক, অ্যাসিড নিক্ষেপসহ নারী নির্যাতনের প্রচলিত ঘটনাও ক্রমেই বাড়ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে ছাত্রলীগের এক নেতার ধর্ষণের সেঞ্চুরি উৎসবকেও হার মানাচ্ছে এসব ঘটনা। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের এক নেতা ধর্ষণের সেঞ্চুরি উৎসব করেছিল।
পরে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল।
১লা বৈশাখের দিন ঢাবিতে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে শ্লীলতাহানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৩০ জন ছাত্রী। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভিকারুননেসা স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে তার মায়ের সামনে থেকে অপহরণ করা হয়। গত ৬ মাসে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে নিহত হয় ২০ জন। ডিএমপির তথ্য মতে ২০০৯ সালে নারী ও শিশু নির্যাতিত হয়েছে ১৩৭৪ জন।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো প্রকাশিত এক বছরের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে শুধু ধর্ষণের পর হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ৯৭ নারী ও কন্যাশিশু। আর ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪৫৪ জন নারী। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ২১১ জন এবং কন্যাশিশু ২৪৩ জন। গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯৭ প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও ৭৯ কন্যাশিশু। এই পরিসংখ্যান মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের।
অধিকারের জানুয়ারি মাসের হিসাব অনুযায়ী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩৬ নারী ও কন্যাশিশু। এদের মধ্যে ১৩ নারী ও ২৩ কন্যাশিশু। ২৩ কন্যাশিশুর মধ্যে একজনকে ধর্ষণের পর হত্যা ও ৫ জনকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। ১৩ প্রাপ্তবয়স্ক নারীর মধ্যে ১ জন পুলিশ কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। অধিকার প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ৩০ নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
এর মধ্যে ১৫ নারী এবং ১৫ কন্যাশিশু। ১৫ নারীর মধ্যে ৩ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এবং ১০ জন গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ১৫ কন্যাশিশুর মধ্যে ৩ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে, ৬ জন গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এবং একজন আত্মহত্যা করেছে।
বিদেশে চাকরির নামে নারী পাচার ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে মহিলা পরিষদ। স্মারকলিপিতে মহিলা পরিষদ নারী পাচার ও যৌন নিপীড়ন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানায়।
গত ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বরাবরে পাঠানো বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এ চিঠিতে বলা হয়, প্রতিদিনই বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় নারী পাচারসহ নারীদের শোষণ-নির্যাতনের রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে।
২০০৯ সাল পর্যন্ত ১ লাখ ২৪ হাজার ২৭৩ নারী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে ২০০৯ সালেই গেছেন ২২ হাজার ২২৪ জন। মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে তাদের নিপীড়নের যে চিত্র, তা এক কথায় হতাশাজনক। সম্মানজনক কর্মসংস্থানের কথা বলে ফাঁদে ফেলে অনেককে যৌন দাসত্বে বাধ্য করা হয়।
মহিলা পরিষদ ইউনিসেফ প্রকাশিত প্রতিবেদন তুলে ধরে জানায়, গত ৩০ বছরে ১০ লাখ নারী পাচার হয়েছে। প্রতি মাসে ৪শ' নারী এবং বছরে ১ লাখ ২০ হাজার শিশুকে বিক্রি করে দেয়া হয়। গত ১০ বছরে ১২ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৩ লাখ নারী ও শিশু ভারতে পাচার হয়। পাকিস্তানে বিক্রি হয়েছে ২ লাখ নারী ও শিশু। একই সঙ্গে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ৫ বছরের নারী নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে জানায়, ২০০৫ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে ৫ হাজার ৪৯৫টি খুন ও ধর্ষণের পর হত্যা, গণধর্ষণ ও ধর্ষণ ৩ হাজার ২৪৬টি, এসিড নিক্ষেপ ৬৫৫টি, পাচার প্রায় ২ হাজার, পুলিশের নির্যাতন ৪৮৪টি এবং অপহরণের ১ হাজার ৩২১টি ঘটনা ঘটেছে।
নারী নির্যাতনের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্য নারীনেত্রীরাও। সূত্রটি বছরওয়ারী পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানায়, ২০০৮ সালে নারী নির্যাতন কমলেও ২০০৯ সাল থেকে তা আবারও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। ২০০৮ সালে মোট ৩ হাজার ১৫০টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। কিন্তু ২০০৯-এ নির্যাতনের পরিসংখ্যান বেড়ে ৩ হাজার ৬৭৯টি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। চলতি বছরের গত এক মাসেই ৩৭২ নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে খুন ৭০টি, ধর্ষণের পর হত্যা ৭টি, এসিডদগ্ধ ১২টি, নারী ও শিশু পাচার ৪০টি হত্যার চেষ্টা দুটি, ধর্ষণ ৩৭টি, গণধর্ষণ ১৩টি, আত্মহত্যা ২৭টিসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঘটনা রয়েছে।
গুপ্ত হত্যা : রাজধানীসহ সারাদেশে গুপ্তহত্যা বেড়েই চলেছে। র্যা ব, পুলিশসহ বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে ধরে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে হত্যা করা হচ্ছে। রাজধানীতে সর্বশেষ গুম করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর চৌধুরী আলমের ব্যাপারে।
গত ২৫ জুন তাকে ফার্মগেট এলাকা থেকে সাদা পোশাকধারী কিছু লোক ধরে নিয়ে যায়। পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে তার অবস্থানের ব্যাপারে দাবি জানালেও সরকার এখন পর্যন্ত কিছুই করতে পারেনি। সর্বশেষ গত সোমবার বিএনপি চেয়ারপারসন চৌধুরী আলমের বাসায় তার পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বলেছেন, তাকে গুম করা হয়েছে। তাকে ফিরিয়ে দেয়ার দায়িত্ব সরকারের।
যানজট : যানজটে থেমে যাচ্ছে নগরবাসীর ব্যস্ত সময়।
মানুষের জীবন থেকে কেড়ে নেয়া হচ্ছে মূল্যবান সময়। মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। রাস্তার পাশে অপরিকল্পিতভাবে মার্কেট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, রাস্তায় ব্যবহারের অনুপযোগী গাড়ির আধিক্য, ট্রাফিক ব্যবস্থা না মানা, রিক্সার মিছিল, ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ি পার্কিং, এ যানজটের অন্যতম কারণ। সরকারের পক্ষ থেকে ২০ বছরের অধিক পুরনো যানবাহন উচ্ছেদের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তা কার্যকর করা নিয়েই নগরবাসীর সন্দেহ।
গত ১ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীতে লেন পদ্ধতি চালু হয়। একই দিন সিগন্যাল বাতি অনুসরণ করে গাড়ি চলারও কথা। কিন্ত সেটাও কেউই মানে না। এখনো পুলিশের হাতের ইশারায় চলে সব কিছু। এছাড়া গত ৮ ডিসেম্বর থেকে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, যাত্রী উঠানামা করার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়।
কিছুদিন যাবার পর এখন সেটা আর দেখা যাচ্ছে না। এখন আবারো যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, যাত্রী উঠানামা নিত্য দিনের ঘটনা। বাড়তি আয়ের জন্যে পুলিশ এসব দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।
ভূমিকম্প : সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে ২০টি ভমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। অপরিকল্পিত নগরায়নই এর প্রধান কারণ।
৭ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প হলে রাজধানী মৃত্যুপুরিতে পরিণত হবে এমন আশংকার কথা মন্ত্রীই প্রকাশ করেছেন। নিকট ভবিষ্যতে কি বিপদ অপেক্ষা করছে তা নিয়েই শংকিত ঢাকাবাসী। অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীর ৭০-৮০ শতাংশ বাড়িই রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী তৈরী করা হয়নি। ফলে ৭ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে রাজধানী ঢাকা শহর।
বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট : বর্তমান আওয়ামী মহাজোট সরকার আসার পর রাজধানীসহ সারাদেশে ভয়াবহ লোডশেডিং দেখা দেয়।
খোদ রাজধানীতেই ১৮-২০ ঘন্টা বিদ্যুৎ ছিল না। যা এখনো বহাল রয়েছে। দেশে এখন ৬ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয় ৪ হাজার দুই মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ঢাকায় সাড়ে ১৪'শ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ হয় মাত্র ৬ শ মেগাওয়াট। পিকআওয়ারে ডেসকোতে ৫শ' মেগাওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ মাত্র ৩'শ মেগাওয়াট।
অনেক সময় তাও সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায়ই প্রায়শ গ্যাস থাকে না। রান্না করতে গৃহিণীদের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। অনেকেই কেরোসিনের চুলা অথবা বাসার ছাদে বিকল্প মাটির চুলা দিয়ে রান্না করে থাকেন। গভীর রাত থেকে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত রান্না নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় গৃহিণীদের।
দেশে ২৩'শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ১৯'শ মিলিয়ন ঘনফুট। ঘাটতি প্রায় ৫শ' মিলিয়ন ঘনফুট। অনেক সময় উৎপাদন এর চেয়ে অনেক কমে যায়। ফলে রাজধানীসহ আশপাশের শিল্পাঞ্চলে ১৫-১৬ ঘণ্টা গ্যাস থাকে না। গ্যাস না থাকায় অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
শত শত শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবার পথে রয়েছে। বিশেষ করে মাঝারি ও ছোট মানের শিল্প-কারখানায় উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে গেছে। সংকট সমাধানের নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও এই সরকারের অর্জন একেবারেই নেই। আছে শুধু ফাইল নাড়াচাড়া। গ্যাস সংকটের কথা স্বীকার করে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর এ প্রতিবেদককে বলেন, শীঘ্রই এ সংকট কাটবেনা।
তবে কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রাজধানীর উপকূলে পরিত্যক্ত কামতা গ্যাস ক্ষেত্রে কাজ শুরু হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের মাঝামাঝিতে এখান থেকে ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। ফলে তা গাজীপুরসহ রাজধানীর আশেপাশে সরবরাহ করে এ অঞ্চলে সংকট দূর করা যাবে।
পানিবদ্ধতা: প্রবল বর্ষণে এবছরও পানিতে ভাসবে ঢাকার অধিকাংশ এলাকা।
গেল বছর সরকার ও ঢাকা ওয়াসা জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্যে নানা প্রতিশ্রুতির কথা শোনালেও সেগুলো মূলত বক্তব্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তাদের ঘোষণা মত উদ্ধার হয়নি দখলী খাল ও নিচু ভূমিসমূহ, পরিষ্কার করা হয়নি বন্ধ খালগুলো, বাড়ানো হয়নি খালের নাব্যতাও। জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা ওয়াসা কি পদক্ষেপ নিয়েছে দৈনিক সংগ্রামের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের সোজা জবাব, অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে আমাদের কিছুই করার নেই। স্বাভাবিক বৃষ্টি হলে তেমন কোন সমস্যা হবেনা। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগের বৃষ্টির পর জলাবদ্ধতা সৃষ্টির জন্য কিছু কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে।
এখন সমস্যাগুলোকে সামনে রেখে কাজ করা হচ্ছে। অতিবৃষ্টি সামাল দেয়ার কোন প্রস্তুতিই নেই ঢাকা ওয়াসার। গত বছর জুনে রাজধানী ঢাকায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছিল ৩৬ মিলিমিটার। এতে ঢাকার প্রায় অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়।
কথা সাহিত্যিক ও ঢাবি শিক্ষক প্রফেসর আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, ঢাকার রাস্তায় পানি জমার প্রধান কারণ রাস্তা নির্মাণে ত্রুটি এবং রাস্তার দু পাশ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকা।
ঢাকার কোনো রাস্তাই বাস্তবসম্মতভাবে নির্মিত নয়। পানি নিষ্কাশনের জন্য ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের পাইপ বসানোয় পানি ঠিকমত যেতে পারে না। এ ছাড়া রাস্তার ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ফলে পানি এসব ময়লার কারণে সরে যেতে পারে না। আবার অনেক সময় ময়লা রাস্তার উপরে উঠিয়ে রাখা হলেও তা দীর্ঘদিন ধরে সরিয়ে নেয়া হয়না।
ফলে বৃষ্টি হলে এসব ময়লা ড্রেনে গিয়ে পানি সরতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
পানি : রাজধানী ঢাকার সর্বত্র পানির জন্য হাহাকার- এটা নতুন কিছু নয়। অবস্থা এমন যে চাহিদার ৪ ভাগের দুইভাগ পানিও এখন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছেনা। নগরবাসী এখন আর বাসায় অপেক্ষা করেনা তারা অপেক্ষায় থাকেন ওয়াসার মোডস জোনগুলোর সামনে। তাই সারা দিন হাতে বোতল ও কলসি নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকেন সেখানে।
বিদ্যুৎ আসলে অন্তত খাবারের পানিটুকু নিয়ে বাসায় যেতে পারবেন এ আশায়। প্রায়শ এখান থেকে খালি হাতে বাসায় ফিরে যেতে হয় তাদের। সামান্য এ পানিই যেন এখন অমাবস্যার চাঁদের মত হয়ে গেছে রাজধানীবাসীর কাছে। সারাদিন অপেক্ষার পর যেটুকু পানি পাওয়া যায় তাতেও মারাত্মক দুর্গন্ধ। তারপরও নিশ্চিৎ বিষপান জেনে জীবন বাঁচাতে মারাত্বক দূষিত এ পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে।
পানি ও বিদ্যুতের দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ করেছে নগরবাসী। প্রতিদিন গড়ে পানির চাহিদা ২১০ কোটি লিটার। বিদ্যুৎ সমস্যা কম থাকলে ওয়াসা চাহিদার বিপরীতে প্রতিদিন ১৯০ থেকে ১৯৭ কোটি লিটার পানি উত্তোলন করতে পারে। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ সিস্টেম লস বাদ দিলে নগরবাসী প্রতিদিন পানি পাচ্ছে ১৩০ কোটি লিটার । প্রতিদিন প্রায় ৭০/৮০ কোটি লিটার পানি ঘাটতি নিয়েই চলছে ঢাকা ওয়াসা।
রাস্তাঘাট : বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ৪ দলীয় জোট সরকারের পর থেকে রাজধানীর অধিকাংশ রাস্তায় নতুন করে কার্পেটিং হয়নি। গত কয়েকটি বর্ষায় অধিকাংশ রাস্তা এখন যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে গলির রাস্তাগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। রাজধানীর ভিআইপি সড়কগুলোতেও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ছোট ছোট রাস্তায় বড়বড় গর্তের কারণে অনেকেই রিক্সা বা সিএনজিতে না গিয়ে হেঁটেই গন্তব্যস্থলে যান।
বিশেষ করে মোহাম্মদপুর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ি, গাবতলী, পুরান ঢাকাসহ সর্বত্রই ছোট রাস্তা গুলো এখন যান চলাচলের জন্য নিরাপদ নয়। প্রতিদিনই নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া এসব এলাকায় যান চলাচলে সমস্যা হওয়ায় ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ কর্মকান্ড ঘটেই চলেছে।
প্রত্যেক দেশের নাগরিকদের প্রত্যাশা থাকে তার দেশের রাজধানী হবে সুন্দর এবং আধুনিক একটি শহর। রাজধানীকে বিবেচনা করা হবে দেশের প্রতিচ্ছবি হিসাবে।
কিন্ত আমাদের ৪০০বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকা আজ পরিণত হয়েছে মৃত্যুকুপে। বিভিন্ন সংকটে আজ বিপর্যস্ত রাজধানীবাসী। দিন যতই যাচ্ছে ততই এই শহর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে।
আবাসন সংকট : রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিনই মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে। কিন্তু সেই তুলনায় বাড়ছেনা আবাসন ব্যবস্থা।
ফলে প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ মানুষের এই ঢাকা শহরে আবাসন সংকট ক্রমশই বাড়ছে। এই সংকট কমার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। ব্যাপক জায়গা থাকা সত্ত্বেও সরকারের উদাসীনতা, উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাব, আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগে অসঙ্গতি এবং যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ঢাকায় আবাসন সংকট কমছে না। অথচ ধারণ ক্ষমতার চাইতে অস্বাভাবিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ঢাকা এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৩ লাখেরও অধিক মানুষ বসবাস করছে।
গ্রামে কাজের ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিনই কাজের সন্ধানে মানুষ ছুটে চলেছে ঢাকার উদ্দেশ্যে। প্রতি বছর এখানে জনসংখ্যা বাড়ছে ৫ লাখ করে। সেই হিসাবে ২০১৫ সালে এখানে প্রায় দেড় কোটি মানুষ বসতি গড়ে তুলবে। একদিকে নিজের কোন আবাসন ব্যবস্থা নেই। থাকতে হয় ভাড়া বাসায়।
এতে দারুণ সমস্যায় থাকতে হয় রাজধানীর ৮০ ভাগ মানুষকে। প্রতিদিনই বাসার মালিকের নানান অজুহাত। সামান্যতেই বাসা ছাড়ার নোটিশ দেয়া হয়। এ ছাড়া বাসা ভাড়া বাড়ানো হয় যখন তখন। ১৯৯১ সালের বাড়ি ভাড়া আইনানুযায়ী ডিসিসি ঢাকা মহানগরীর ৯০টি ওয়ার্ডের ১০টি কর অঞ্চলে ৬৭৩টি এলাকার বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়।
এলাকাভেদে বাড়ি ভাড়ার হারও ভিন্ন। কিন্তু কেউই এ আইন মানেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।