আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাবির গবেষকের ‘জমজ চাল উদ্ভাবন’

গবেষকরা বলেন, নতুন উদ্ভাবিত এই জাতের একটি ধানে দুটি করে চাল পাওয়া যাবে। এছাড়া অন্য ধানের চেয়ে এর ফলন পনের শতাংশ বেশি হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল হক এবং তার ছাত্র হাফিজুর রহমান যৌথভাবে এ গবেষণা করেন।
তারা ব্রি-২৮ জাতের ধানে কৃষি প্রযুক্তি প্রয়োগ করে বহুভ্রুণিতা (পলিএমব্রায়নিক) তৈরি করেন, যা থেকে জমজ চাল পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
অধ্যাপক আমিনুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাধারণত বহুজাত ভ্রুণ একবীজপত্রী উদ্ভিদে দেখতে পাওয়া যায়, দ্বিবীজপত্রী উদ্ভেদের ক্ষেত্রে তা হয় না।


এই বিষয়টিকে সম্ভবপর করতে তারা ২০১২ সালে গবেষণা শুরু করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় ধান জাত ব্রি-২৮ বীজ নিয়ে।
গবেষণার এক পর্যায়ে কৃষি প্রযুক্তির সহায়তায় ধানের ফুলকে দ্বিনিষেক করার চেষ্টা এক সময় সফল হয়। দেখা যায়, একটি ধান বীজের দুটি ডিম্ব একত্রিত হয়ে দুটি চাল পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ষোলটি বিশেষ ক্ষুদ্র পুষ্টি উপাদানের (মাক্রোনিউট্রিয়েন্ট) মধ্যে কার্বন, হাইড্রোজেন বাদ দিয়ে তরল সার প্রস্তুত করেন তারা। ওই সার ধান গাছের পাতায় ছিটানো হয়।

এই সার প্রচলিত ইউরিয়া থেকে শতকরা চল্লিশ ভাগ ব্যবহার সাশ্রয়ী।
বরেন্দ্র এলাকায় জমজ ধান অতি সহজেই চাষ করা যায়। এখানে পানি কম লাগে। ধান গাছ আকারে লম্বা, নিচু জমিতে চাষ করা যাবে এবং ঝড়ো হাওয়ায় সহজে নুয়ে পড়বে না। এক ধানে দুটি চাল হওয়ায় ফলন ব্রি-২৮ এর চাইতে বেশি হবে।

ধানের ছড়াও ব্রি-২৮ এর চেয়ে লম্বা এবং দানার সংখ্যাও বেশি।
“এতে প্রচলিত ব্রি-২৮ ধানের চেয়ে এর ফলন পনের শতাংশ বেশি হবে,” বলেন অধ্যাপক আমিনুল।
তার দাবি, এই উন্নতজাতের ধান বছরে দুবার ফলানো যাবে এবং প্রতি বিঘা জমি থেকে ৪০-৪৫ মণ ধান পাওয়া সম্ভব।
এই ধানের জিনগত পরিবর্তন (জেনেটিক মডিফাই) সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের এই ডিন বলেন, প্রাথমিকভাবে তারা জমজ চালে সীমাবদ্ধ থাকছেন। তবে পরবর্তীতে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে ক্রোমাসোমাল স্টাডি করা হবে।


অপর গবেষক হাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জমজ ধানের ফলন ভাল। জলবদ্ধতায়ও জন্মে এবং চালের মানও ভাল।
তাই এটি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের গবেষণা করা দরকার।
এটি বাংলাদেশের কৃষকদের মধ্যে বিস্তার করতে পারলে দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন তিনি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সারওয়ার জাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম যে উন্নতজাতের ধান উদ্ভাবন করেছেন, তা দেখার জন্য আমরা সম্প্রতি তার গবেষণা কেন্দ্র গিয়েছিলাম।


নতুন জাতের জমজ চাল ব্যাপকভাবে পাওয়া গেলে বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.