পাখি পর্ব চলছে
রাবির ৫৫ বছর: ষড়যন্ত্রের দিন শেষ হবে কবে? (আর খানের প্রতিক্রিয়া)
এই পোস্টটা পড়তে পড়তে মনে হল অনেক কথা। আমি নিজেও রাবির ছাত্র ছিলাম। ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে লেখাপড়ার পাঠ সাঙ্গ করেছি। সেই সূত্রে আমার যে অভিজ্ঞতা তা সেয়ার করছি সবার সাথে।
রাবি এবং শিবির অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।
নানান কারণেই রাবি ক্যাম্পাসে শিবির নামটি বিখ্যাত। হলের সিট দখল, তাদের নিজেদের মতের সাথে না মিললে অন্যদের (বিপরীত মতের) সাথে নানাবিধ ঝামেলা, ক্যাম্পাসে একক আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ক্ষমতার স্থানটি নিজেদের মতের লোকজন দিয়ে দখলের চেষ্টা ইত্যাদি কারণগুলো চোখে পড়ার মতো। আমি নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো সময়টা মেসে কাটিয়েছি নানান কারণে। প্রধান কারণ আমি একটা অরাজনৈতিক সংগঠন করতাম। আমার যে বন্ধুরা নাটক, গান কিংবা অন্যান্য অরাজনৈতিক সংগঠন করতো বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে তাদের অভিজ্ঞতা খুব সুখের নয়।
এ কারণেই পুরো সময়টা মেসে কাটানো। তারপরেও যে অবাঞ্ছিত ঘটনার মুখোমুখি পড়িনি তা নয়।
একবার আমার মেসের রুমে সন্ধ্যার দিকে লুঙ্গিপড়া দু'জন এসে হাজির। তারা ভিন্ন নামের একজনের সাথে দেখা করতে এসেছিল। তাদের জানানো হলো সে নামের কেউ এই রুমে থাকে না এবং বিগত ৫ বছর এখানে ছিলও না।
তারা চলে গেল। কিছুদিন পরে সেই ছেলে দু'টোই আবার এসে হাজির। এবার সন্দেহ হল। মেসের কেয়ারটেকারকে জানানো হলো ঘটনাটা। ছেলে দু'টো এসেছিল বিনোদপুরে শিিবরের যে বড় মেসটা রয়েছে সেখান থেকে।
মেসের কেয়ার টেকার আবার এলে তাকে খবর দিতে বললেন। পরে অবশ্য ছেলে দু'টো আর আসেনি। কিন্তু বিনোদপুরের মোড়ে চা খেতে গেলে আমার আশেপাশে অপরিচিত ছেলেদের আনাগোনা বেড়ে গেল। অবশ্য কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
কিন্তু নানানভাবে অনেক অপ্রীতি ঘটনার সাক্ষী আমার মতো আরো অনেক সাধারণ (!) ছাত্র।
একবার রমজান মাসে তুঁত বাগানে (৩য় বিজ্ঞান ভবনের পেছনে) বিকেলে বসে থাকা জুটিদের আচমকা পিটানো শুরু করে শিবির কর্মীরা। এই আক্রমণটা আসে শহীদ হবিবুর রহমান হল থেকে। এর কোন প্রতিকার হয়নি। এই আক্রমনণ তারা লোহার রড, বৈদ্যুতিক ক্যাবল, গাছের ডাল ব্যবহার করে। পরে শোনা যায় (এক পরিিচত ছাত্রের কাছে শোনা যে ওই হামলায় অংশ নিয়েছিল) তাদের কাছে মেশিনও ছিলো!
২০০১ এর শুরুর দিকে বা ২০০০ সালের শেষের দিকে যে মেহের চণ্ডী ট্রাজেডি ঘটেছিল তার মূলেও রয়েছে শিবির।
কারণ তারা স্থানীয় এক যুবলীগ/আওয়ামীলীগ নেতার জন্য ওই এলাকায় নিজেদের প্রভাব বলয় বিস্তার করতে পারছিল না। ওই নেতা আবার রাবির কর্মচারীও ছিল সে সময়। এই তথ্যটি এক বন্ধুর কাছে শোনা, যে কিনা ছাত্রাবস্থার প্রথম দিকে শিবির করতো এবং সেই ঘটনায় মারামারি করতে গিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ
বিপন্ন করে তুলেছিল। পরে সে শিবির করা বাদ দিয়ে ভালোভাবে লেখাপড়া শেষ করে এখন চাকরি করছে।
ফোকলোর বিভাগের প্রথম ব্যাচের এক ছাত্রকে মাদারবক্স হলের ছাদে নিয়ে গিয়ে মারপিট করা হয়েছিল।
মনে আছে তো? তার কী অপরাধ ছিল ভাই খান সাহেব? এমন বহু ছাত্র অকারণেই মার খেয়েছে শিবিরের হাতে, এখনও খাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন হলে ছাত্রদের মার খাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেগুলো তারা প্রকাশ করে না। তাদের নিকট বন্ধুরা জানে।
শুধু শিবিরের ছাত্র কর্মীরাই নয়।
এর সমর্থ যে শিক্ষকরা আছে তারাও এক একটা ত্রাস। ভাবুন যে বৈশাখী উৎসবের প্রস্তুতিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক তারই ছাত্রদের দিকে রামদা নিয়ে তেড়ে গিয়েছিল। প্রমান দেব। এমন অনেক ঘটনা আছে।
মাদকদ্রব্য সম্পর্কেও অনেক ঘটনা আছে।
শুধু শিবিরের দেষইবা দেই কেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্তারাই তো মেরুদণ্ডহীন। এদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যাবহার, অর্থতসরূপের দায়সহ নানান কাহিনী রয়েছে। তো এরাই প্রমোশনের জন্য শিক্ষককে খুন করবে যে কিনা তারই ডিরেক্ট শিক্ষক। সমস্যা কী।
আরো অনেক কথা আছে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।