শিক্ষক রাজনীতির উন্মত্ত শিকারে পরিণত হয়েছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। দেশের নেতৃস্থানীয় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও তার ব্যতিক্রম নয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬ দিন ধরে চলছে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন। শিক্ষকদের পরস্পরবিরোধী গ্রুপের রেষারেষিতে শিক্ষা কার্যক্রম এখন অচলাবস্থার শিকার। জনগণের ট্যাঙ্রে টাকায় পরিচালিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় বাজেট থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য। কিন্তু শিক্ষকদের একাংশের শিক্ষক-রাজনীতি ও জবাবদিহিতাহীন মনোভাবের নিষ্ঠুর শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ ৬৬ দিন উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন এবং উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার আশু নিষ্পত্তির কোনো বিকল্প আছে বলে আমাদের জানা নেই। কিন্তু সেদিকে কোনো পক্ষের গরজ রয়েছে বলে মনে হয় না। শিক্ষক রাজনীতির কারণেই প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের একটা বড় অংশ ব্যাহত হয়। শিক্ষকদের এক বড় অংশ বাইরের কাজ নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকেন_ এমন অভিযোগ প্রবল। শিক্ষক রাজনীতির কারণেই প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠন নামধারীদের বেপরোয়া দৌরাত্দ্য চোখে পড়ে। শিক্ষকরা নিজেদের স্বার্থে ছাত্র সংগঠনগুলোকে ব্যবহার করেন এটি ওপেন সিক্রেট। বিশেষ করে যখন যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকে সেই দলের অঙ্গ-সংগঠন হিসেবে পরিচিত ছাত্র সংগঠনের নামে যা ইচ্ছা তাই করা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পক্ষে ও বিপক্ষে শিক্ষকদের যে দলবাজি চলছে তাতে কোন পক্ষের অবস্থান কতটা সঠিক তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। তাদের দলবাজি ও তথাকথিত আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার যে ক্ষতি হচ্ছে, শিক্ষার পরিবেশ যেভাবে বিষিয়ে তোলা হচ্ছে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা নীতিগতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে। কিন্তু এর অর্থ দায়িত্বহীনতা নয়। জনগণের ট্যাঙ্রে টাকায় যাদের জীবিকা নির্বাহ হয়, তারা দেশবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি একটু সজাগ হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অকাম্য পরিস্থিতির উদ্ভব হতো না। আমরা আন্দোলনের নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতির রথী-মহারথীদের বল্গাহীন কর্মকাণ্ডকে ধিক্কার জানাই। আমরা আশা করব, দলবাজি নয়, শিক্ষকরা সুবিবেচনা ও সুবুদ্ধি দ্বারা পরিচালিত হবেন। দেশের
মানুষ তাদের কাছ থেকে তেমনটিই প্রত্যাশা করে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।