বিভিন্ন জেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে সাতক্ষীরায় এক শিবির কর্মী নিহত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ২৯ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- সাতক্ষীরা : সদর উপজেলার পূর্ব ভোমরা গ্রামে যৌথবাহিনীর সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে ছোটন নামের এক শিবির কর্মী নিহত হয়েছেন। সে উপজেলার পদ্মশাখরা গ্রামের শহর আলীর ছেলে। তবে জেলা জামায়াতের দাবি, পুলিশ আসামি ধরতে গিয়ে শিবির কর্মী ছোটনকে গুলি করে হত্যা করেছে। সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি ইনামুল হক জানান, গতকাল ভোরে পূর্ব ভোমরা এলাকায় যৌথবাহিনী আসামি ধরতে গেলে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা যৌথবাহিনীর গাড়ির সামনে গাছের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড দেয়। এক পর্যায়ে তারা যৌথবাহিনীকে লক্ষ্য করে ১১ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে যৌথ বাহিনীও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে শিবির কর্মী ছোটন (১৮) গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় আহত হয় সদর থানার এসআই আবুল কাসেম। ছোটনকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে আনা হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছোটনের বিরুদ্ধে ৯ জানুয়ারি পদ্মশাখরা এলাকায় ভোমরা পোর্ট থেকে ঢাকাগামী মালবাহী ট্রাকে পেট্রলবোমা ছুড়ে অগি্নসংযোগ করার ঘটনায় সদর থানায় মামলা রয়েছে। চট্টগ্রাম : বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের ৯ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া এবং সীতাকুণ্ডে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। সীতাকুণ্ড থানার ওসি ইফতেখার হাসান জানান, পৌর এলাকায় শিবিরের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। লোহাগাড়া থানার ওসি মো. শাহজাহান জানান, পুঠিবিলা থেকে জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সাতকানিয়া থানার ওসি খালেদ হোসেন বলেন, নাশকতার মামলার দুই আসামিসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লালমনিরহাট : শুক্রবার রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরসহ ১৮ দলের ১৮ কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সহকারী পুলিশ সুপার মাহফুজ জানান, নির্বাচনকালীন সময়ে সহিংসতার ঘটনায় ৫ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। মৌলভীবাজার : সংসদ নির্বাচনে বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নাশকতার দায়ে ২ শিবির কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, দক্ষিণভাগ ইউপির দোহালিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (২৪) ও ময়নুল আহমদ (১৯)। শনিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে পুলিশ। তবে উপজেলা শিবির নেতা জুয়েল আহমদ আটককৃতরা তাদের কর্মী নয় বলে দাবি করেন। ঝিনাইদহ : এদিকে, কোটচাঁদপুর থানায় নিজের কাছে থাকা শটগানের গুলিতে রিপন হোসেন নামে এক কনস্টেবল আহত হয়েছে। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার হরিন্দিয়া মামুনশিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওসি শাহাজান আলী খান জানান, নির্বাচনের দিন দুর্বৃত্তরা উপজেলার হরিন্দিয়া মামুনশিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ মামলার আসামিদের ধরতে গিয়ে অসাবধানতাবস্থায় কনস্টেবল রিপনের কাছে থাকা শটগানের গুলি বেরিয়ে ঊরুতে লেগে গুরুতর আহত হয়েছে।
নূরের গাড়িবহরে হামলাকারী নিহত : সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের গাড়ি বহরে হামলা এবং আওয়ামী লীগের চার নেতা-কর্মী হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর (৩৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পলাশবাড়ী ইউনিয়নের নীলফামারী-ডোমার সড়কের আরাজি পলাশবাড়ী মাস্টারপাড়া থেকে রব্বানীর লাশ পুলিশ উদ্ধার করে নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
রব্বানী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের দুবাছড়ি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে এবং লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পলাশবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তপন কুমার রায় জানান, স্থানীয়রা সকালে ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন সড়কটির গোচামারী ব্রিজসংলগ্ন ধারে লাশটি পড়ে থাকতে দেখলে বিষয়টি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রব্বানীর লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি/তদন্ত) বাবুল আকতার জানান, দুপুরে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে মৃত্যুর কারণ। তবে তার ডান গালে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান ওসি।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ ডিসেম্বর রামগঞ্জে নীলফামারী-২ (সদর) আসনের এমপি ও বর্তমানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী নূরের গাড়ি বহরে হামলা এবং আওয়ামী লীগের চার নেতা-কর্মী হত্যার ঘটনায় লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা গোলাম রববানীকে প্রধান আসামি করে মামলা করে পুলিশ। ওই ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত ৪৬ জনকে আটক করে পুলিশ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।