আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ত্রিমুখী সংঘর্ষঃ ছাত্রলীগের দুই পক্ষ-পুলিশের এক!!!!!



 সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটঃ সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ এগিয়ে এলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সময় এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপে পুলিশসহ ১৪ জন আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চারজনকে আটক করে। আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বিকেলে ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা ছাত্রলীগের পক্ষটি বঙ্গবীর সড়ক অবরোধ ও পাঁচটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিকেলে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ ও ছাত্রসংগঠনগুলোর মিছিল-সভার ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় সিলেট নগর আওয়ামী লীগের সদস্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশিক আহমদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ মিছিল নিয়ে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। তাঁরা গত ১৩ মে কথিত ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সৈকত চন্দ্রকে অভিযুক্ত করে তাঁকে ইনস্টিটিউট থেকে বহিষ্কারের দাবি জানায়। বিক্ষোভকারীদের বহিরাগত দাবি করে তাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সৈকতের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের অপর পক্ষ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার একদল পুলিশ ইনস্টিটিউটে যায়।

ফটকের বাইরে থাকা ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে তাঁদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল, নাজিম ও তিন কনস্টেবল আহত হন। এ পর্যায়ে পুলিশ ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা ছাত্রলীগের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ চলার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র আরিফ আহমদ, শফি আহমদ, বহিরাগত রহমান আলী ও সেলিম মিয়াকে আটক করে।

এ পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আসে। আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বিকেল সাড়ে তিনটায় ছাত্রলীগের একটি পক্ষ সুরমা নদীর কিন ব্রিজের মুখে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে ঢিল ছোড়া হয়। পরে তাঁরা বঙ্গবীর সড়ক অবরোধ করে। সেখানে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-৯) একটি দল উপস্থিত হলে বিক্ষোভকারীরা চলে যায়।

ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও পুলিশের লাঠিপেটায় দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম, পলাশ চৌধুরী, মামুনুর রশীদ, কাহের আহমদ, সাহেদুল হক, শহিদুল ইসলাম, মইনউদ্দিন, বাবর আহমদ ও পথচারী কামিল আহমদ আহত হন। এদের মধ্যে নুরুল ইসলাম, পলাশ চৌধুরী, কামিল আহমদ ও মামুনুর রশীদকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। সিলেট কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নারায়ণ দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, দুই এসআই ও তিন কনস্টেবল আহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সৈকত চন্দ্র দাবি করেন, তাঁদের সঙ্গে কারও সংঘর্ষ হয়নি।

আশিক বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে তাঁরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে কথা বলতে একাধিকবার চেষ্টা করেও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশিক আহমদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে পুলিশের হাতে আটক চারজনের মুক্তির দাবিতে বিকেলে সড়ক অবরোধকারীদের পক্ষে বক্তব্য দেন কাউন্সিলর আশিক আহমদ। সেখানে আশিক বলেন, ছাত্রলীগের সৈকতের ইন্ধনে পুলিশের বাড়াবাড়ি ভূমিকায় এ ঘটনা ঘটল।

সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ সুশান্ত কুমার বসু প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিকেলে প্রশাসনিক পরিষদের জরুরি সভা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনার জের ধরে যাতে আর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ছাত্রসংগঠনগুলোর মিছিল, সভা নিষিদ্ধ করা হয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.