বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
কোটো। জাপানের জাতীয় বাদ্যযন্ত্র। এই তারযন্ত্রটির সুরতরঙ্গ যেন জাপানের সৌম্য সংস্কৃতিরই প্রতীক ; সেই সঙ্গে গভীর স্তব্ধতার প্রেক্ষাপটে যন্ত্রটির সুরধ্বনি কেমন অলীক মনে হয় ... কোটোর ইতিহাসও কম বিচিত্র নয়, য়াটসুহাসি কেনগিও নামে সপ্তদশ শতকের একজন অন্ধ সংগীতবিদের নিরন্তর প্রচেষ্টায় কোটোর ব্যাপক পরিবর্তন হয়ছিল ...
জাপানের মানচিত্র ।
বিশ্বে জাপানই সম্ভবত একমাত্র দেশ যে দেশের আধুনিক ইলেকট্রনিক গেজেটস্ আর হাজার বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক উপকরণ বিশ্ববাসীকে সমানভাবে আকর্ষন করে ...একটি লেটেষ্ট মডেলের সনি ভায়ো ল্যাপটপ আর জেন উপাসনালয়ের আকর্ষন আজও বিশ্ববাসীর সমান তীব্র ...
ফুজি পাহাড়ের ছবি; ঐ পাহাড় শীর্ষের সংলগ্ন স্তব্ধতাই যেন কোটোর প্রেক্ষাপট ...
জাপানে কখনও কখনও কোটোকে বলা হয় সো। যাই হোক। বাদ্যযন্ত্র কোটো কে আমরা আজ যেমন দেখছি- বরাবরই এটি ঠিক এরকম ছিল না, থাকার কথাও না। খ্রিস্টীয় ৫ম শতক এর প্রাথমিক রূপটির কথা জানা যায় । যন্ত্রটির আদিরূপ চিন থেকে জাপানে আসে খ্রিষ্টীয় ৭ম/৮ম শতকে।
তখন এটির তার ছিল ৫টি; পরে হয় ৭টি। অস্টম শতকের শেষের দিকে তারের সংখ্যা হয় ১২ টি ।
কোটো।
আধুনিক কোটোর উদ্ভব বাদযন্ত্র গাকুসু নামে একটি থেকে। এটি ছিল মূলত দরবারি বাদ্যযন্ত্র।
জাপানজুড়ে অভিজাত মহলের রোমান্টিক বাদ্যযন্ত্র হিসেবে কোটো সমাদৃত। এর একক বাদনকে বলে সোকিয়োকু। ষোল শতক থেকে জাপানে কোটোর ইতিহাস পরিস্ফুট হয়ে উঠতে থাকে। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা কোটো বাজাতেন। সপ্তদশ শতকের বিশিষ্ট সংগীতাচার্য য়াটসুহাসি কেনগিওর (১৬১৪-১৬৮৫) নাম আগেই বলেছি।
কেনগিও কোটোর সুর করার (টিউনিং) পদ্ধতির ব্যাপক পরিবর্তন আনেন। ফলে সপ্তদশ শতকে কোটোর যেন নবজন্ম হয়। য়াটসুহাসি কেনগিও জাপানে ‘আধুনিক কোটোর জনক’ বলে অবহিত করা হয়।
কোটো।
আরেক জন অন্ধ মিউজিশিয়ান মিচিও মিয়াগি (১৮৯৪-১৯৫৬) কোটোর বিকাশে গভীর অবদান রাখেন।
উনিশ শতকেই জাপানে ইউরোপীয় ভাবধারা অনুপ্রবেশ করে। মিচিও মিয়াগিই প্রথম পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী কোটো সংগীতের ফিউশন করেন। পশ্চিমে প্রভাবে যখন জাপানি লোকসংগীত হুমকির মুখে পড়েছিল
বলতে গেলে মিচিও মিয়াগির একক প্রচেষ্টায় কোটো টিকে থাকে। মিয়াগি ১৭ তারের বাস কোটো উদ্ভব করেছিলেন এবং এর বাদন শৈলীও উদ্ভব করেছিলেন।
কোটো।
কোটোর দৈর্ঘ্য ১৮০ সেন্টিমিটার। এটি কিরি কাঠে তৈরি হয়। কিরি কাঠ পাওয়া যায় পাওলওনিয়া টোমেনটোসা গাছ থেকে। তার তৈরি হয় প্লাসটিক দিয়ে, কখনও রেশম এর। সাধারনত কোটোর তার থাকে ১৩ টি, সেই সঙ্গে থাকে পরিবর্তনশীল ব্রিজ।
এসব পরিবর্তনশীল ব্রিজ সরিয়ে তারের সুর করতে হয়; ব্রিজ কে বলে জি; এটি তৈরি হয় হাতির দাঁতে। মধ্যমা, বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনী -এই তিনটি আঙুলের পিক (হাওয়াইন গিটারের মতো) পরে কোটো বাজাতে হয় ।
কোটো। একক পরিবেশনা। মনে থাকার কথা কোটোর একক বাদনকে বলে সোকিয়োকু।
কোটো। সমবেত পরিবেশনা
কোটো। একক পরিবেশনা
১৭ তারের বাস কোটো
উৎসর্গ: নতুন রাজা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।