কিছুই বলার নাই...
কানাডা দেশটা মজার আর আজব। এখানে আসার প্রথম দিন ছিল বৃহষ্পতিবার, আগস্ট মাস। আমি আর আমার স্ত্রী, এয়ার কানাডার ঢাকার ১৩নং বাসের (যে কেউ চাইলে ৭নং ও পড়তে পারেন) মত চীপা সীটে লন্ডন থেকে প্রায় ৭-৮ ঘন্টা জার্নি করে যখন আমাদের ভাড়া করা বাসার সামনে নামি তখন আমাদের দুজনেরই খিঁদেয় পেট চো চো করছে। তাছাড়া এয়ারপোর্ট থেকে আসার পথে বাসের ড্রাইভারের বকবকানি (আমাদের সাথে না, ১টা মেয়ের সাথে) র ঠেলায় কানও ঝালাপালা হয়ে গেছে। বাসায় বাক্সপেটরা রেখে আমাদের সদ্য বাড়িওয়ালেকে জিজ্ঞাসা করলাম, কোথায় খাওয়া যায়।
সে আমাদেরকে সরল(!) মনে বলল কাছেই একটা ভিয়েতনামীজ রেস্তোরা- "ফো দা বো" আছে, সেখানে ভালো, কমদামী নুডুলস পাওয়া যায়। ও আমদেরকে রেস্তোরাটা চিনিয়ে দিল, আমরা ঢুকলাম সেখানে। কিন্তু মেন্যু দেখেতো পড়ে গেলাম বিপদে, কিছুইতো পরিচিত মনে হচ্ছে না। শেষে একটা আইটেম দেখে মনে হল যে এটা ভেজিটেবল নুডুলস টাইপ, দামও কম মাত্র ৫ ডলার (এটা আসলে এখন কম মনে হচ্ছে, প্রথমদিন এসে মনে হচ্ছিল ৫ ডলার মানে ৩০০ টাকার উপরে) কিছুক্ষন অপেক্ষার পরে আসলো আমাদের ভেজিটেবল নুডুলস, কিন্তু সেটা আমাদের পরিচিত নুডুলসের ধারেকাছেও না, মনে হল শুধু গরম পানিতে কিছু নুডুলস আর কিছু সবজি সিদ্ধ যার আবার বেশীরভাগ অপরিচিত ( আসলে ছিল ব্রকলি, আরো কিছু চাইনীজ সবজি যার নাম আমি আজো জানি না) আর তার যে কি গন্ধ। তখন আমাদের চেহারাটা দেখার মত হয়েছিল ।
খিদেয় নাড়ীভুড়ী জ্বলে যাচ্ছে আর এমন সময় এরকম খাবার যা খেতে পারবো না তখন কেমন লাগে। । আমরা কিছুক্ষন খাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করে সেখান থেকে বের হয়ে আসলাম। আমি এখনো থোবড়াদের দোকানে খুব বাধ্য না হলে খাইনা।
যাইহোক সেখান থেকে বের হয়ে আমরা অন্য কোন খাওয়ার দোকান খুজঁতে লাগলাম, কিন্তু মোটামুটি সব দোকানই বন্ধ, আমরাতো বিশাল অবাক।
শালা কোন দেশে আইসা পড়লাম, এতো তাড়াতাড়ি সব দোকান বন্ধ হয়ে যায়??!! শেষে একটা চাইনীজ গ্রোসারী শপ পেলাম (এটাকে যে গ্রোসারী স্টোর বলে সেটা অবশ্য পরে জেনেছি) কিন্তু সেখানে ঢুকতেই তীব্র ঝাঝালো গন্ধ ( সেটা ছিল পর্কের মাংসের রান্নার গন্ধ যেটা এখনো আমি সহ্য করতে পারি না)। সারা দোকানে ঘুরেও কোন খাবার পছন্দ করতে পারলাম না তখন । বের হয়ে হাটঁছি, এমন সময় এক মাতাল আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করলো তোমারা কোথ্থেকে আসছো? নর্থ পোল থেকে? সেটা ছিল রাস্তায় প্রথম কোনো আমাদের মাতাল দেখা, আমারা তাড়াতাড়ি সেখান থেকে সরে গেলা্ম। পরে বুঝতে পেরেছিলাম কেন সে আমাদের এই প্রশ্ন করেছিল, কারন তখন আমরা দুজনেই ফুল জ্যাকেট পড়ে হুডি তুলে হাঁটছিলাম অথচ তখন মাত্র আগস্ট মাস।
অনেক খোজাখুজি করেও পছন্দমত খাবার না পেয়ে শেষে আবার সেই চাইনীজ দোকানে গিয়ে আমরা কেক কিনেছিলাম।
তবে ঐদিন আমাদের কেন যে পাউরুটি আর জেলী/কলার কথা মাথায় আসে নাই সেটা আমি এখনো বুঝতে পারি না ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।