একবারতো লিখলাম
গত ৫/৭ বছর যাবত আমরা দেখে আসছি সিগেরেটের প্যাকেটে গায়ে কিছু মেসেজ দেয়া হয়। প্রথম প্রথম দেয়া হতো ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’। পরবর্তীতে এই মেসেজের পরিধি আরো বেড়েছে। যেমন : ধুমপান ফুসফুস রোগের কারণ, ধুমপানে ক্যান্সার হয়, ধুমপানে কিডনীর ক্ষতি হয় - এরকম আরো কিছু। আগে এগুলোর কিছুই ছিল না।
সরকার আইন করে সিগেরেটের প্যাকেটের গায়ে এই মেসেজ গুলো দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন, এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ। কিন্তু এই মেসেজগুলো থাকা সত্বেও ধূমপায়ীর সংখ্যা কি কমেছে ? মোটেই না। ধূমপান যদি এতোই ক্ষতিকারক, তাহলে এতো লোক কেন ধূমপান করবে ? এর কারণ ধুমপানের কিছু উপকারীতা আছে, তা সকলে না জানলেও ধূমপায়ীরা ঠিকই জানেন। তাই সকলের অবগতির জন্য নীচে ধূমপানের উপকারীতা সমূহ তুলে ধরা হলো :
১. ধূমপান কুকুরের দংশন থেকে রা করে
২. ধূমপান বাড়িতে চুরি হওয়া রোধ করে
৩. ধূমপান পরিবারে শান্তি আনয়ন করে
৪. ধূমপান বন্ধুত্ব, সৌহার্দ ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে
৫. ধূমপান রোগ-বালাই থেকে রা করে
৬. ধূমপান মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা রা করে
৭. ধূমপান অর্থনীতিকে সচল ও চাঙা রাখে
একটু ব্যাখ্যা না দিলেই নয় :
১. কুকুরের দংশন থেকে রা করে :
ধুমপায়ীকে অল্প বয়সেই হাতে লাঠি নিতে হয়। আর কুকুরের কি সাহস, তার কাছে ঘেঁষে।
২. বাড়িতে চুরি হওয়া রোধ করে :
ধুমপায়ী সারা রাত কাশাকাশি করেন। ফলে চোর বাড়িতে ঢোকার সাহসই পায় না।
৩. পরিবারে শান্তি আনয়ন করে :
অতিরিক্ত কাশির ফলে যেহেতু কথা বলতে কষ্ট হয় এবং কথার পরিমাণ হ্রাস পায়, তাই স্ত্রীর সাথে ঝগড়া-ঝাটি কমে যায়। আর আল্লাহ্ চাহেতো কানে সমস্যা দেখা দিলেতো কথাই নেই, স্ত্রী যতো কথাই বলবেন, শোনার কোন ব্যবস্থা নাই। তাই পরিবারে শান্তি আর শান্তি।
৪. বন্ধুত্ব, সৌহার্দ ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে :
যেখানে আমরা একজন আরেকজনের মুখ দেয়া গ্লাসের পানিই খাই না, একজনের এঁটো করা খাবার আরেকজন খাওয়ার প্রশ্নই আসেনা, সেখানে ধূমপায়ীরা খুব সহজেই একজনের মুখ দেয়া সিগেরেট বা বিড়ি আরেকজন গ্রহণ করেন। এছাড়া ধুমপায়ীদের মধ্যে আলাদা একটা টান কাজ করে, যা তাদের বন্ধুত্বের গভীরতাকে বাড়িয়ে দেয়।
৫. রোগ-বালাই থেকে রক্ষা করে :
ধূমপায়ীর রক্তের সাথে যে নিকোটিন মিশে যায়, তা একজন ধূমপায়ীর তেমন কোন তি করতে না পারলেও তাকে যে মশা কামড়ায়, তার জন্য তা ভয়ংকর। ফলে প্রতি বৎসর ধূমপান জনিত রোগে হাজার হাজার মশা মৃত্যুবরণ করে। এর ফলে মশা জনিত বিভিন্ন রোগ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ রক্ষা পায়।
৬. মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা রক্ষা করে :
প্রতি বৎসর বাংলাদেশ থেকে অনেক লোক চিকিৎসা করার জন্য বিদেশ গমণ করে থাকেন। বিদেশে যাওয়ার সময় তারা টাকা ভাঙিয়ে ডলার বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যান এবং বিদেশ গিয়ে সেগুলো খরচ করে আসেন। কিন্তু ধূমপানের কারণে যদি ক্যান্সারের মতো একটি দামী রোগের গর্বিত অধিকারী হওয়া যায়, যখন বাঁচার আর কোন আশা থাকেনা, তখন বিদেশ যাওয়ারও আর কোন প্রয়োজন থাকেনা। ফলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হয়।
৭. অর্থনীতিকে সচল ও চাঙা রাখে :
যদি ক্যান্সারের মতো একটি দামী রোগের গর্বিত অধিকারী নাও হতে পারেন একজন ধূমপায়ী, তিনি কিন্তু সর্দি, কাশি, হাঁপানি, প্রেশার, জন্ডিশ, গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি রোগে প্রায়ই আক্রান্ত থাকেন।
এর ফলে ডাক্তারের কাছে প্রায়ই যেতে হয়। ফলে ডাক্তাররা একদিনেই একজন সরকারী কর্মকর্তার একমাসের বেতনের চেয়েও বেশী আয় রোজগার করতে পারেন। এর ফলে বাজার থেকে দামী খাবার, দামী পোশাক, দামী গাড়ি, দামী টিভি, দামী ফ্রিজ তারাই ক্রয় করতে পারেন। ফলে দেশের অর্থনীতিতে চাঙা ভাব চলে আসে আর দেশ খুব দ্রুত এগিয়ে যায়। এছাড়া ঔষধের সাথে সম্পর্কিত যাবতীয় ব্যবসাকে বহুলাংশে সচল রাখে এই ধূমপান।
অতএব, সিগেরেট ও বিড়ির প্যাকেটের গায়ে শুধুমাত্র এর তিকারক দিকগুলো তুলে না ধরে এর উপকারী দিকগুলোও তুলে ধরা দরকার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।