ভাতের মজা কিছুতেই পাই না।
যাত্রাপথ সিলেট থেকে ঢাকা। এক ঘন্টা অপেক্ষার পর বাসের দেখা, অতঃপর আসন গ্রহন। আরো আধা ঘন্টা নষ্ট অধিক যাত্রীর আশায় ড্রাইভারের পথ চেয়ে থাকা। বাস প্রায় খালি ই বলা চলে।
ড্রাইভারের পেছনের সিটেই বসলাম। আমি সাধারনত সামনের সিটগুলোতে বসিনা। আজকে বসলাম। আমার হাতে জন্ম নিবন্ধনের একটা সার্টিফিকেট ছিল তাই এটাকে রক্ষা করার জন্য হকারের কাছ থেকে একটা সংবাদপত্র কিনলাম। সার্টিফিকেট টা রাখলাম তার ভেতরে।
সংবাদপত্রটা কোলের উপর। পাশে এসে বসলেন একজন মার্জিত ভদ্রলোক। চোখাচোখি হতেই হাসি বিনিময় হল। ভদ্রলোক গল্প জূঁড়ে দিতে পারেন, তাই তাড়াতাড়ি সংবাদপত্রে মনোনিবেশ করলাম। বাসের মধ্যে গল্প গুজব করা আমার অপছন্দনীয় কাজগুলোর একটি।
আমি একমনে পড়েই চলেছি। সাথে যে সাময়িকী দিয়েছে তার ভেতর সার্টিফিকেট টা রেখে দিয়েছি। পাশের ভদ্রলোক হঠাত সাময়িকীটা ধরে টান দিলেন। আমিও দিয়ে দিলাম আর বললাম এটার ভেতর একটা সার্টিফিকেট আছে। ফেলে দিয়েন না।
ভদ্রলোক তাড়াতাড়ি সাময়িকীটা ফেরত দিয়ে দিলেন। ভাল কথা। কান্ডজ্ঞান আছে তাহলে!
এইবার শুরু হল আরেক জ্বালা। আমি পত্রিকা পড়ছি সেই সাথে পাশ থেকে মাথা বেঁকিয়ে ভদ্রলোকও পড়ছেন। আমি পত্রিকা পড়ি খুব দ্রুত।
প্রথমে শুধু হেডলাইনগুলো পড়ে যাই। পরে যে খবরটা ভাল লাগে তা বিস্তারিত পড়ি। তাই আমি পাতা উল্টাচ্ছিলাম খুব দ্রুত। পাশের ভদ্রলোকের খুব আশাভঙ্গ হল আমার দ্রুত পড়ায়। উনি ভাল করে কোন খবর ই পড়তে পারছিলেন না।
আর তাতে আমারও অস্বস্থি লাগছিল। উনি এমনভাবে ঘাড় ব্যাঁকা করে বসেছিলেন মনে হয় আমি পত্রিকাটা রাখলেই উনি ক্ষুধার্ত পথশিশুদের মত ঝাঁপিয়ে পড়বেন। যেন এটা একটা খাবার আর উনি অনেক দিনের অভুক্ত! উনার প্রতি করুণা হল। তাই সাময়িকী বাদে পুরো পত্রিকাটাই উনাকে পড়ার জন্য দিয়ে দিলাম। যাক বাবা, উনার ক্ষুধার্ত নজর থেকে আপাতত বাঁচি!
পড়ার প্রতি আগ্রহ থাকা ভাল।
তবে এইরকম আগ্রহটা ভাল না মন্দ ঠিক বুঝতে পারি না!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।