যে বেসেছে ঝর্ণা ভালো, যে বেসেছে ঝিনুক। তার হাতে আয়ু রেখায় ভীষন রকম অসুখ।।
(অজন্তা গুহাচিত্রের মূল মডেল যে মানবী, তাকে...)
শুণ্য, আলতামিরার গুহায় আমাদের
গ্রন্থি চিনে উঠতে পারিনি বলে, অভিমানে
তুমি আজও আমাকে অস্বীকার করছ, সে
কথা জানি।
সেদিন সন্ধ্যায়, অরণ্যের
সব'চে বড়ো বাইসনটির রক্তে
আমাদের ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে, যখন
ঘুরে ঘুরে নাচছিলাম আমরা, দু'পায়ে
তাল ঠুকে, উদ্দাম কন্ঠ নালীতে অভ্যস্ত
গুটি কয় সুর পাহাড়ে পাহাড়ে ছড়িয়ে দিতে
দিতে, আমি যখন আরেক ভাঁড় সোমরসের
তৃষায় জ্বলছি, তুমি তোমার অঙগার পুরে
দিলে আমার রোম-কূপে,
দগদগে জ্যান্তব সেই পাহাড়ী
সন্ধ্যায়, তোমার অরণ্যে আমি যখন
গ্রন্থিল উত্তেজনায় সুতীব্র বাইসন শিকারে
দক্ষ অধিকতর নিপুন ক্রীড়াময় হয়ে উঠছিলাম;
তখন-
বাইরে কাষ্ঠ-খন্ডের ফাঁকে
বেমালুম গেঁথে যাওয়া বাইসন পুড়ছিল
চড়্ চড়্ সুস্বাদু ভোজের প্রতিশ্রুতি নিয়ে;
তখন সোল্লাস আকাশ ছুঁলে-
গুহার আরক্তিম উত্তেজনায়
পেলব আদুরে থরথর তোমাকে - তোমার
সুদীর্ঘ দেহ খন্ডকে গেঁথে ফেলতে
উদ্যত আমার বর্ষাফলক কেমন বদলে
গেলো কাঠ-কয়লার তুলিতে,
কাঠ কয়লায় তখন বাইসন,
তার পেলব পেশী,
উদ্যত শিং তখন কাঠ কয়লায় , প্রতি
আঁচড়ে তুমি আহত প্রত্যাখাত বেদনায়
অভিমানের বিপুল কষ্টে সরে যাচ্ছ বহু
যোজন যোজন যোজন জেনেও , ধারাবাহিক
উন্মত্ত নেশাগ্রস্থ একাগ্রতায় গুহার দেয়ালে
চিত্রিত হয়ে এলো মায়াবী বাইসন-
আজ সময় এলো
তোমাকে এ কথা জানানোর - আলতামিরা
গুহার দেয়ালে আঁকা সেই চিত্রিত বাইসনের
কাঠ-কয়লার রেখাচিত্রে, তার অসংখ্য অগুনিত
রেখার আড়ালে; গেঁথে রেখেছিলাম তোমার
ক্রীড়াময় দ্যুতিময় পেলব সৌন্দর্য;
আমাদের গ্রন্থির প্রথম সার্থক মনুষ্যতর
পদক্ষেপ-
এ কথা আজ জানানো গেল,
বলে ফেলা গেল লক্ষ্ বছরের প্রাগৈতিহাসিক
এক গূঢ় কথা-
জেনে-
ভাঙবে আজ তোমার অভিমান?
১৫/০৭/২০০৮
(ছবিটি উইকিপিডিয়া হতে সংগৃহীত
A bison from the Altamira cave ceiling
painted by unknown prehistoric artist)
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।