বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
যে ক’জন চিন্তাবিদ মানবসমাজের বিকাশের ধারা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন- কার্ল মাকর্স অন্যতম তাদের মধ্যে। তাঁর মত কেবল যৌক্তিকই নয়-বিজ্ঞানভিত্তিক বলে গ্রহনযোগ্যও বটে। মাকর্সের মতে- Human civilization has manifested itself in a series of organizational structures, each determined by its primary mode of production, particularly the division of labor that dominates in each stage.এই হল মার্কস-এর ঐতিহাসিক বস্তুবাদের মূলকথা।
ঐতিহাসিক বস্তুবাদের প্রয়োগ যে কোনও সমাজের ক্ষেত্রেই সম্ভব-এমনকী প্রাগৈতিহাসিক বাংলার ক্ষেত্রেও। প্রাগৈতিহাসিক বাংলার আদিম সাম্যবাদী পর্যায়টি বুঝতে আমরা কেবল মানবসমাজের দুটো পর্যায় নিয়ে আলোচনা করব।
১) ট্রাইবাল সমাজ :
আদিম ট্রাইবাল সমাজে, শ্রেণিবিভাজন বলতে আমরা যা বুঝি-সে রকম শ্রেণিবিভাজন ছিল না। সমাজের মূল ভিত্তি ছিল আত্মীয়তার বন্ধন। গৃহস্থালীর যাবতীয় কাজের দায়িত্ব ছিল নারীর।
আর, পুরুষেরা সব দলবেধে শিকারে বেরুত। মাকর্সের মতে, ট্রাইবাল সমাজের এই স্তরটি অবশ্য একেবারেই প্রাথমিক। তবে প্রাকৃতিক ভাবে নির্ধারিত প্রাথমিক শ্রমবিভাগ পরিবারে ছিল; এই স্তরেই জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দাসশ্রম অনিবার্য হয়ে উঠতে থাকে। তখনও যুদ্ধ হত; বানিজ্যও হত অপরাপর সংস্কৃতির সঙ্গে- কাজেই, মাকর্সের মতে সমাজে পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছিল। দাস সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গেই শ্রেণি বৈষম্যের সূত্রপাত হয়েছিল।
২) আদিম সাম্যবাদ:
"the ancient communal and State ownership which proceeds especially from the union of several tribes into a city by agreement or by conquest" ( Marx, Karl and Frederick Engels. The German Ideology Part One, with Selections from Parts Two and Three, together with Marx's "Introduction to a Critique of Political Economy." New York: International Publishers, 2001.)
এই সময়েই ব্যাক্তিগত সম্পত্তির ধারণা গড়ে উঠছিল।
কাজেই সমাজে শ্রেণিবৈষম্য অনিবার্য হয়ে উঠছিল।
লিঙ্ক:
Click This Link
প্রাগৈতিহাসিক বাংলায় কখন আদিম সাম্যবাদী পর্যায় ছিল?
প্রোটো-অস্ট্রোলয়েড বা আদি-অস্ত্রালদের সমাজই মার্কসকথিত আদিম সমাজ। আদি-অস্ত্রাল নারীরা গৃহস্থালীর কাজ করত;আর আদি-অস্ত্রাল পুরুষেরা দল বেঁধে শিকারে বেরুত।
কিন্তু,প্রাগৈতিহাসিক বাংলায় দাসতন্ত্রের উদ্ভব হল কখন?
আদি-অস্ত্রালদের পরে বাংলায় এসেছিল দ্রাবিড় ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ।
মার্কসের মতে দাসশ্রমের সঙ্গে যুদ্ধবিগ্রহের অনিবার্য সম্পর্ক রয়েছে।
আদি-অস্ত্রালদের যুদ্ধ কি দ্রাবিড়দের সঙ্গেই হয়েছিল?
সেরকম হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কেননা, মাকর্সের মতে- সমাজের এই স্তরেই (আদিম সাম্যবাদ) জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দাসশ্রম অনিবার্য হয়ে উঠতে থাকে। তখনও যুদ্ধ হত; বানিজ্যও হত অপরাপর সংস্কৃতির সঙ্গে- কাজেই, মাকর্সের মতে সমাজে পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছিল।
দাস সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গেই প্রাগৈতিহাসিক বাংলায় শ্রেণি বৈষম্যের সূত্রপাত হয়েছিল।
পরবর্তীতে সে ধনবৈষম্যের ওপর পশ্চিম থেকে বর্ণবাদী আলপাইন আর্যরা এসে বর্ণভেদের প্রলেপ দিয়েছিল যার জের এখনও চলছে।
অবশ্য সে আরও পরের কথা।
ক্রমশ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।