আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিলম্বিত বর্ষপুর্তি পোষ্ট

মানুষের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা কিংবা অক্ষমতা এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত। তা হলো নিজের উপর নিয়ন্ত্রন

চরম ব্যস্ততা ছিল গত কিছুদিন। ব্যস্ততা কমার পর একদিন ব্লগে ঢুকে দেখি ব্লগ লিখছেন ১ বছর ৩ দিন। খুব দু:খ পাইলাম। কত কিছু লিখব ঠিক করে রেখেছিলাম।

লেখাতো হলোই না উল্টো সময় মতন একটা পোষ্টও দিতে পারলাম না। এই দু:খে কিনা জানি না, পরের ৩ দিন একেবারে বিছানায় সয্যাশায়ী। এত কাহিল হয়ে পড়লাম যে লেখাতো দূরে থাক সোজা হয়ে বসতেই পারছিলাম না। আজ কাল একটু সুস্থ। ভাবলাম লেখেই ফেলি একটা বর্ষপুর্তি পোষ্ট।

ব্লগে লেখা কোনো লেখাই সেভাবে সিরিয়াসলি লিখেছি মনে পড়ে না। আসলে আমার লেখালিখির কারনটাই কিছুটা অদ্ভুত। ইউনি লাইফ শেষে হুট করে জব লাইফে এসে কি করি কি করি দশার মধ্যে পড়েছিলাম। তারপর সামুর লেখা পড়ে বিশাল একটা সময় কেটেছে। কোনো নিকও ছিল না আমার।

শুধু পড়তাম। একসময় আমিও লেখা শুরু করলাম। এক লাইন দুই লাইন লিখতে লিখতে শেষ মেষ বিশাল সাইজ দাড়িয়ে যে লেখাটা হইছে সেটারে না বলা যায় গল্প না বলা যায় উপন্যাস। জগাখিচুড়ি টাইপ একটা কিছু হইছিল সেটা। আমার প্রথম লেখা অপ্রকাশিত।

অপ্রকাশিত লেখাটা আমার জন্য অনেক ইমোশনাল। কারন এই লেখার বেশিরভাগ চরিত্রই আমার খুব কাছের মানুষ জন। লেখার অনেক ঘটনাই সত্য। তাছাড়া এই লেখাটা লিখতে না পারলে হয়তো এতদিন ধরে লিখে যেতেই পারতাম না। তাই লেখাটা যেমনই হোক, সবসময় আমার খুব পছন্দের একটা লেখা হয়ে থাকবে।

এই ফ্লপ (কমেন্টতো দূরে থাক সাইজ দেইখা কেউ খুইলাও দেখে নাই)প্রজেক্টের পর একটু বুদ্ধিমান হয়ে ছোট ছোট আকৃতির কিছু লেখা দিলাম। নাম দিলাম ছোট গল্প। প্রথম লেখা গল্পটা ছিল জীবিকা । প্রতিদিন অফিস যাবার সময় ওয়েস্টিন হোটেলের গ্লাস ক্লিনারদের দেখে ওদের মধ্যে নাম না জানা কোনো না কোনো একজনকে নিয়ে লিখেছিলাম। খুবই কাঁচা হাতের লেখা, তবে শেষ পর্যন্ত একজন পাঠককে মনে হয় ধরে রাখতে পেরেছিল লেখাটি।

যথারিতী এই লেখাও কাছের বন্ধুরা ছাড়া কেউ পড়েনি। বিজনেস গল্পের প্লটটা বেশ পেছনে। ঈদের ভীড়ে যখন সিলেট রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতাম, তখন ব্ল্যাকে টিকেট ফেরি করে বেড়ানো ছেলেগুলোকে নিয়ে কিছু লিখব কখনো ভাবিনি। সেদিন ঠিক কারনে এই গল্প লিখেছিলাম আজ মনে পড়ছে না। তবে লেখার সময় সিলেট রেল স্টেশনকে কল্পনায় এনেই লিখেছিলাম এটুকু মনে আছে।

সোনালী দিন গল্পটাও সিলেটের প্রেক্ষাপটে, কিন ব্রীজের রিকশা ঠেলে দুই টাকা কামাই করা শিশুদের উৎসর্গ করে লেখা। বন্ধু প্রসূন বাবা হবে, এই সংবাদ পাবার পর কেমন যেন স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছিলাম। তারপ লিখে ফেললাম প্রথম স্মৃতিচারণ পোষ্ট বন্ধুত্বের বয়স বাড়ে না । প্রসূনের পরিচিতির কারনেই হয়তো ওই পোষ্টটা অনেকে পড়লেন। ওই পোষ্ট হিট হয়েছে বলে ঠিক না,কিছুদিন পর আমি আরেকটা সিরিজ স্মৃতিচারণ পোষ্ট লেখা শুরু করলাম,চাইছি তোমার বন্ধুতা ।

এই পোষ্টটা আমার খুব কাছের বন্ধুদের কীর্তিকলাপ নিয়ে। এই সিরিজের সবচেয়ে মজার দিক হলো, এর প্রতিটা পর্বে মজার মজার ঘটনাগুলো বলার চেষ্টা করলেও, আদতে সিরিজের পর্বগুলো আমি লিখতাম যখন আমার অনেক মন খারাপ থাকতো। এই সিরিজটা আমাকে অনেক অনেক ভালো সময় দিয়েছে। আর এর প্রতিটা পর্বে যারা কমেন্ট দিয়েছেন তাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা জানাই। হয়তো কেউ জানেনই না আমার কতটা খারাপ সময়ে কি দারুন সঙ্গ ছিল সেটা।

এলোমেলো কথামালা ১ , এই লেখাটা ঠিক সম্পূর্ণ নয়। উদ্দেশ্য বিধেয়হীন কিছু কথাবার্তা। তবে এই লেখাটা আমার নিজের ভালো লাগে কারন বেশ কিছু কঠিন কঠিন চিন্তাভাবনার প্রকাশ পেয়েছে এখানে। এবং সেই কঠিন চিন্তা ভাবনাগুলো খুব সাবলিল ভাবে ফুটে উঠেছে। শুধু দুইজন মানুষের কথোপকথনে এরকম বিষয় সাধারনত আসে না।

দুইজন মানুষ সামনা সামনি বসে এত কঠিন কঠিন কথা কখনোই বলে না। তারপরেও এটা আমার প্রিয়। বেশ কয়েকটা গম্ভীর গম্ভীর ছোট গল্প লেখার চেষ্টার পরে মনে হলো এবার একটা রম্য লিখি। অবশেষে আবুল কহিল বিষাদে এ জীবন আমি আর রাখপ না , এটা একটা রম্য লেখার অপপ্রয়াস ছিল। গল্পের চরিত্র পুরাই কাল্পনিক ছিল।

যদিও দুষ্টলোকে বলে আমি নাকি বিশিষ্ট জনপ্রিয় ব্লগারকে নিয়া লেখছি। রম্য লেখা হলো, এবার তাহলে একটা প্রেমের লেখার চেষ্টা করা যাক। অন্ধকারের গান অথবা একটা নিছক সাদাকালো ভালোবাসার গল্প নামের লেখাটিও আরো একটি অসম্পূর্ণ লেখা। ব্লগে লেখাটা দেয়ার পর অনেকেই বললো লেখাটি যেন আর না বাড়াই। আমারো আর সাহস হয়নি।

কারন আমার ধারনা ছিল লেখাটা বাড়ালে আমি নষ্ট করে ফেলতাম। তার চেয়ে এই ভালো হয়েছে। শেষের দিকের সুখি মানুষেরা কিংবা ফ্লপ সো জনতা এক্সপ্রেস লেখার স্টাইলে ভিন্নতা আনার চেষ্টা ছিল। কতটুকু সফল হয়েছি জানিনা। মাঝখানে খেলা নিয়া একটা স্মৃতিচারন পোষ্ট আর ব্লগ ক্যাচালের সময় দুইটা হুদাই পোষ্ট ছিল।

সব মিলিয়ে এই ছিল এক বছরের সফর। আসলে আমার ব্লগিংটা স্রেফ আমার নিজের জন্য। যেই সময়টায় ব্লগিং করি সেই সময়টায় অন্য অনেক কিছু করতে পারতাম। তাতে সময়টা কেমন কাটতো জানি না। কাছের বন্ধুরা যখন অনেক ব্যস্ত হয়ে গেল তখন এই ভার্চুয়াল বন্ধুদের সাথে অনেক অনেক ভাল সময় কেটেছে।

আড্ডা হয়েছে, হাসি তামাশা হয়েছে, অনেক মজাও হয়েছে। এই জন্য সামুকে ধন্যবাদ। সহ ব্লগারদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ যারা সব সময় সাথে ছিলেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.