আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিসিবি সভাপতি আপনি ক্রিকেট খেলাটা আগে বুঝুন তারপর কথা বলুন

ভাবনারা মাথার ভিতর অবিরত তুলছে ঢেউ
কালের কন্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনঃ হতাশায় শেষ হলেও ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট থেকে স্বাগতিকদের প্রাপ্তি নেহায়েত কম নয়। বীরেন্দর শেবাগকে প্রমাণ করা গেছে যে, বাংলাদেশ গড়পড়তা দল নয়, তুলে নেওয়া গেছে তাদের ১৮ উইকেট। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও ঝলমলে। সেঞ্চুরি পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান-শাহাদাত হোসেনরা পেয়েছেন ইনিংসে পাঁচ উইকেট_এ রকম আরো কত কী! টগবগে আত্দবিশ্বাস নিয়ে তাই দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামার কথা সাকিব আল হাসানের দলের। তা কি হচ্ছে? হচ্ছে না।

দায়টা বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামালের। কাল এক অনুষ্ঠানে ক্রিকেটারদের আত্দনিবেদন ও দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাতেই এলোমেলো হয়ে গেছে খেলোয়াড়দের মনোজগৎ। বিমর্ষ সবাই। স্বাভাবিক কারণেই এ স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হলেন না কেউ।

তবে সমস্বরে জানিয়ে দিলেন, ক্রিকেটই তাঁদের ধ্যান-জ্ঞান; এর চেয়ে অন্য কিছু তাঁদের কাছে গুরুত্ব পায় না। মঞ্চে থাকা সভাপতির জবাব ওই মঞ্চেই দিয়ে এসেছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তাঁর বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু মোস্তফা কামালের অমন কথার পর চুপ করে থাকার উপায় কী? তাই তো উপস্থাপকের কাছ থেকে মাইক্রোফোন চেয়ে নিয়ে সাকিব বললেন, 'প্রতিটি খেলোয়াড় শতকরা ১০০ ভাগ উজাড় করে দেওয়ার জন্যই মাঠে নামে। এ বিষয়ে কারো কোনো সন্দেহ থেকে থাকলে সেটা ভুল।

আর যাঁরা আমাদের দায়িত্ববোধ নিয়ে কথা বলেন, আশা করব, তাঁরা আরো দায়িত্বশীল হবেন। ' সবার সামনে এমনটা বলেছেন বটে অধিনায়ক। কিন্তু পরে বিসিবি সভাপতির কাছে একপ্রকার ক্ষমাই চাইতে হয়েছে। তাই তো আর এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি কোনো ক্রিকেটার, মনের ভেতর পুষে রাখা ক্ষোভটা তুষের আগুনের মতো জ্বললেও। সভাপতির ক্ষোভের একটি হচ্ছে চট্টগ্রাম টেস্টে ভারতের ২৪৩ রান করার পর বাংলাদেশ কেন ২৪২-এ থেমে গেল? এ জন্যই তিনি ক্রিকেটারদের দায়বদ্ধতাকে দাঁড় করিয়েছেন প্রশ্নের মুখে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রিকেটারের প্রতিক্রিয়া, 'ভারত তো র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর; আমরা ৯। এখন আমাদের বিপক্ষে ২৪৩ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছে দেখে কি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি তাঁর ক্রিকেটারদের আত্দনিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন?' আরেকজন তো অফ দ্য রেকর্ডে প্রশ্ন তুলেছেন মোস্তফা কামালের ক্রিকেটজ্ঞান নিয়েই, 'মাঠে নেমে প্রত্যেক ম্যাচেই জিততে হবে, কী হাস্যকর! এমন কথা তারাই বলতে পারে, যার ক্রিকেট সম্পর্কে নূ্যনতম ধারণা নেই। ' বিসিবি পরিচালকদের পাশে পাননি খেলোয়াড়রা। তবে ক্রিকেটারদের নিয়ে অনুক্ষণ যাঁকে কাজ করতে হয়, সেই কোচ জেমি সিডন্স দাঁড়িয়েছেন খেলোয়াড়দের পক্ষে, 'মাঠে বলুন কিংবা মাঠের বাইরে, কখনোই আমার কাছে মনে হয়নি, তাদের কমিটমেন্টে কোনো ঘাটতি আছে। ' ক্রিকেটারদের মুখে কোড অব কন্ডাক্টের শৃঙ্খল।

যতই ক্ষুব্ধ হোন তারা, প্রতিক্রিয়া জানানোর উপায় নেই। সাবেক ক্রিকেটারদের সে সমস্যা নেই। সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ যেমন সরাসরিই বলেছেন, এমনটা বলা উচিত হয়নি বিসিবি সভাপতির, 'তাঁর মতো দায়িত্বশীল পদে বসা কেউ এমন কথা বললে, প্রভাব ভালো হয় না। ' বৃহত্তর প্রেক্ষাপটেও বাংলাদেশ ক্রিকেটের মলিন ছবিটাই ভেসে উঠছে তাঁর চোখে, 'মাঠের খেলায় বাংলাদেশের ক্রিকেট যে কোথায় আছে, সে তো সবাই দেখছেন। বিসিবি সভাপতির এমন বক্তব্যে এখন সবাই বুঝবেন, মাঠের বাইরেও আমরা কতটা পিছিয়ে।

' দ্বিতীয় টেস্টের আগে দলে এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন খালেদ মাসুদ, 'ক্রিকেটাররা কিছু বলবেন না; কিন্তু এ কথা ভুলে যাওয়াও তো সম্ভব নয়। দ্বিতীয় টেস্টে তাঁরা যখন মাঠে নামবেন, তার রেশ তাই থাকবেই। ' অভিন্ন মত আরেক সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমানেরও। পাশাপাশি বিসিবি সভাপতির মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন তিনি, 'ক্রিকেট যদি না থাকত, তাহলে বিসিবি সভাপতি বলেও কেউ থাকতেন না। এখন যে সম্মানটা পাচ্ছেন, তেমন সম্মানও পেতেন না।

তিনি এমনটি বললে ক্রিকেটাররা মাঠে নামার উৎসাহই পাবে না। ভালো খেলবেন কিভাবে?' বাংলাদেশের ক্রিকেটের পথ পরিক্রমায় বিসিবি সভাপতির এমন বক্তব্যকে অন্তরায় বলে মনে করছেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক, 'সভাপতিই যদি এমনটি বলেন, তাহলে এ দেশের ক্রিকেট এগোবে কিভাবে?' ..................................................................................................... বিসিবি সভাপতি লোটাস কামালের বক্তব্য সত্যিই বিস্ময়কর । একটি টেস্ট খেলোড়ে দেশের ক্রিকেট বোর্ড সভাপতির যদি ক্রিকেট এরকম থাকে তাহলে অবশ্যই তাকে সড়িয়ে দেওয়া উচিত । সকল ক্রিকেটমোদী যখন খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে খুশি তখন বোর্ড সভাপতি কী করে খেলোয়াড়দের বিষোদগার করতে পারলেন! সত্যি সেলুকাস কি বিচিত্র এ দেশ ।
 


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।