আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি প্রতিবেদন

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আলোকিত করতেই কাজ করছি: লায়ন বাশার সম্প্রতি শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের সংহতি প্রকাশ করতে আসা নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা আসার জন্য অনুমতি চাইলেও কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়নি। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা লায়ন এম কে বাশার নিজেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে শাহবাগে আসেন। দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে ক্যামব্রিয়ান ইতিমধ্যেই বেশ ইতিবাচকভাবে নিজের অবস্থান করে নিয়েছে। ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে প্রতিষ্ঠানটি অনেকেরই নজর কেড়েছে।

সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান লায়ন এম. কে. বাশারের সঙ্গে বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা টাইমসের নিজস্ব প্রতিবেদক লিংকন মাহমুদ। ঢাকা টাইমস: শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে আপনার প্রতিষ্ঠানের কিছু ছাত্রকে যেতে না দেয়ার যে অভিযোগ রয়েছে এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি? লায়ন এম কে বাশার: পরিকল্পিতভাবে একটি চক্র এ কাজ করেছে। পত্রিকায় যেসব ছাত্রের বহিষ্কারের খবর ছাপা হয়েছে ওই নামের কোন শিক্ষার্থীই আমাদের নেই। এটা প্রমাণিতও হয়েছে। আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এটা করা হয়েছে।

এর মাধ্যমে তারা কিছু সুবিধা নিতে চেয়েছিল। কিন্তু দুষ্ট লোকের অপপ্রচারে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের কিছু হবে না। কারণ স্কুলের শিক্ষার্থী অভিভাবকরা অনেক সচেতন। ঢাকা টাইমস: শিক্ষাক্ষেত্রে আপনি কেন আসলেন? লায়ন এম কে বাশার: আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা চরমভাবে অবহেলিত। বিশ্বের অনেক দেশ থেকে আমরা পিছিয়ে আছি।

অর্ধেক জনশক্তি এখানে এখনো নিরক্ষর। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আলোকিত করতেই আমি কাজ করছি। আমার প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তুকি দিয়ে শিক্ষার মান ধরে রাখার জন্য কাজ করছি। এদিকে না আসলে হয়তো অনেক টাকার মালিক হতে পারতাম। কিন্তু তা দেশের মানুষের কোন উপকারে আসতো না।

আর শিক্ষা বিস্তারে কাজ করতে গিয়ে দেশের মানুষের অভূতপূর্ব সমর্থন পেয়েছি। দেশি বিদেশী অনেকগুলো পুরস্কারের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। ঢাকা টাইমস: দেশের মানুষকে অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন করার ব্যাপারে আপনার কি কোন পরিকল্পনা আছে। থাকলে সেটা কি? লায়ন এম কে বাশার: অবশ্যই আছে। সেটা আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত।

আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি মানুষকে অন্তত অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন করার পরিকল্পনা আমাদের আছে। বর্তমানে দেশের অর্ধেক মানুষ অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন। প্রতিটি মানুষ অন্তত একজনকে অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন করার দায়িত্ব নিলে এটা খুবই সহজ হয়ে যেত। তবে আমাদের দেশের প্রতিটি গ্রামে অন্তত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। ওই গ্রামের মানুষকে অন্তত অক্ষরজ্ঞানদান করার ব্যাপারে একটি প্রকল্প চালু করলেই এটা সহজ হয়ে যেত।

ঢাকা টাইমস: ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের আপনি চেয়ারম্যান। এ প্রতিষ্ঠানটিকে আপনি প্রথম থেকেই ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে এসেছেন। সরকার এটিকে সারাদেশের জন্য কিভাবে ব্যবহার করতে পারে। লায়ন এমকে বাশার: আমাদের প্রতিটি ক্যাম্পাসকে ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে এনেছি। প্রতিটি ক্লাসে মাল্টিমিডিয়ার আওতায় নিয়ে এসেছি।

আমাদের নিজস্ব সফটওয়ার রয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করে থাকি। ভিডিও ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বইয়ের প্রতিটি লেস্নের জন্য ভিডিও ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই ভিডিও আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করে দিচ্ছি।

যে কেউ আমাদের এ গবেষণা তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করতে পারে। সবার জন্য এটা উম্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়াও আমাদের ক্লাসগুলো লাইভ করে অনলাইনে দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে সারাদেশের সবাই ঘড়ে বসেই ক্লাস করতে পারবে। ঢাকা টাইমস: শিক্ষার্থীদেরকে কিভাবে ডিজিটাল ক্লাসের আওতায় নিয়ে আসলেন? লায়ন এমকে বাশার: আমাদের প্রতিটি ছাত্রদেরকে একটি করে ল্যাপটপ দেয়া হচ্ছে।

ল্যাপটপের মধ্যে তার সিলেবাসের সবগুলো বই ই বুক আকারে দিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে করে কারো বইয়ের দরকার হচ্ছে না। ক্লাসের লেকচারগুলো ই-মেইলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হচ্ছে। সাথে সাথে সেগুলো আমাদের নিজস্ব সাইটে দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে যেকেউ আমাদের তৈরি করা ক্লাসগুলো দেখতে পাবে।

এটাও উম্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। ঢাকা টাইমস: আপনি কি মনে করেন দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করা সম্ভব। এ ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী। লায়ন এমকে বাশার: এ ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।

ভিশন ২০২১ অর্থাৎ স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে আমাদের দেশ হবে নিরক্ষরতা মুক্ত। আমাদের পদ্ধতি অনুসরণ করে ভারতও তাদের দেশকে তাদের স্বাধীনতার একশো বছরে নিরক্ষরমুক্ত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সে হিসাবে ভারত থেকে আমরা পঞ্চাশ বছর এগিয়ে রয়েছি। তারা আমাদের সফটওয়ার ব্যবহার করছে। ২০০৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে ক্যামব্রিয়ান পরিবারের সবাই কালো কাপড় পড়ছি।

যতোদিন না আমাদের দেশের মানুষ শিক্ষিত হবে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে ততদিন আমাদের সংগ্রাম চলবেই। তাছাড়া আমরা শিক্ষানুরাগীদের উৎসাহিত করবো। তাদেরকে বিভিন্ন পুরস্কার দিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করানোর জন্য উৎসাহিত করবো। ঢাকা টাইমস: ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ এত ভালো করার কারণ কি? লায়ন এমকে বাশার: দেখুন রাজধানীর শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো শতভাগ এ প্লাসধারীদের ভর্তি করায়। কিন্তু আমরা শতকরা ২০ভাগ এ প্লাসধারী শিক্ষার্থী ভর্তি করি।

তাদের মধ্য থেকে ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ শিক্ষার্থী পরবর্তী ক্লাসে এ প্লাস পায়। এটা আমাদের জন্য বিরাট একটি সফলতা। এর কারণ হলো আমাদের আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক পাঠদান পদ্ধতি। নবীন বরণের দিনেই প্রতিটি শিক্ষার্থী বাৎসরিক একাডেমিক ক্যালেন্ডার পেয়ে যায়। এতে করে কত তারিখে কি পড়ানো হবে কত তারিখে কোন সময় সমাপনী অনুষ্ঠান হবে সব জানতে পারে।

ওইভাবে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। তাছাড়াও প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের অভিজ্ঞ শিক্ষকরা ক্লাসে পড়িয়ে থাকেন এজন্যই আমাদের এত সফলতা। ঢাকা টাইমস: সরকার থাকতে আপনি কেন দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করার জন্য কাজ করছেন? লায়ন এমকে বাশার: দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে, দেশের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সরকারও কাজ করছে। তবে তারা অনেক পিছিয়ে আছে।

বর্তমান সরকার শিক্ষায় নতুন কারিকুলাম চালু করতে গিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। তাতে তারা ৮০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করার উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে প্রশিক্ষণের কাজ সম্পন্ন করার ঘোষণা রয়েছে। কিন্তু আমরা মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে আমাদের সকল শিক্ষককে নতুন কারিকুলামে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলেছি। পৃথিবী এখন অনেক এগিয়েছে।

সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একই পাতা টাইপ করার কোন দরকার নেই। বরং একটি পাতা টাইপ করে প্রযুক্তি ব্যবহার করে তা সবার কাছে পৌছে দেয়া সম্ভব। পৃথিবীর যেকোন দেশে বসেই যেকোন অনুষ্ঠান বা ক্লাসে যোগ দেয়া সম্ভব। প্রযুক্তি আমাদের অনেক এগিয়ে দিয়েছে। এর সর্বোচ্চ ব্যবহার করে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারি।

ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ সেই কাজটিই করছে। শিক্ষকদের স্ব-উদ্যোগে প্রণীত বিভিন্ন শিক্ষা সহায়ক পুস্তক, আধুনিক ল্যাব, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, মাল্টি-মিডিয়া তথা প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ক্যামব্রিয়ান কলেজে। দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য সুপারভাইজরি স্টাডি প্রোগ্রাম নামে নবতর শিক্ষার ধারণা চালু করা হয়েছে। শিক্ষকদের মান উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ চালু করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদেরকে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে রাজনীতি ও ধুমপানমুক্ত আদর্শ মানুষ, ভালো ছাত্র ও সুশৃঙ্খল হিসেবে তৈরীর লক্ষ্যে স্কাউট প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

ঢাকা টাইমস: আপনাকে ধন্যবাদ। লায়ন এমকে বাশার: আপনাকেও ধন্যবাদ। Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.