তবু সে তো স্বপ্ন নয়, সব-চেয়ে সত্য মোর, সেই মৃত্যুঞ্জয়
সকালে উঠেই রেডিও খুললাম। 'আজকের দিন' অনুষ্ঠানের আর-জ়ে জানালো আজ থেকে মাত্র ১১৩ দিন পরে ববের জন্মদিন, আমি যেন মহল্লার জন্মদিন উদযাপন কমিটির কাছ থেকে আমাকে প্রদত্ত দায়িত্ব বুঝে নেই। আমি মোবাইলের অরগানাইজারে নোট করলাম।
কাছের বব-১১৭ রেস্তরাঁয় আমার নাস্তা সারলাম ২৫ বব খরচ করে। আমাদের এই ববনগরে শুধু এই বব-৪৭৩ নং রাস্তায় নয়, অন্য কোথাও আজকাল এর চেয়ে কম দামে সকালের নাস্তা হয় না।
ববুতুল কোম্পানীর চা বিস্বাদ মনে হয়, কিন্তু উপায় নেই। বব্জয়ের চা আরো দামী। আর ববিনা চা শুধু পাঁচ তারা বব হোটেলে পাওয়া যায়।
পথে এক কপি 'বববার্তা' কিনলাম। এটা 'বব-সংবাদ', 'বব-খবর', 'ববালোক' এসবের চেয়ে হাল্কা।
প্রথম পাতার নির্ধারিত স্থানে বব-৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ডঃ রমজান সাহেব 'ববের জীবন দর্শন ও আমাদের করণীয় -৩৮৩' পর্ব লিখেছেন। এটা আপাতত পড়ার সময় নেই। বব-২১৯ স্টেশন থেকে ১০ ববের টিকেট করে একটা ববগাড়িতে উঠলাম। এটা বব-৩৫৬ স্টেশনে থামলে নেমে অফিসে ঢুকলাম।
আমার অফিসের পাশেই বব-চর্চা গবেষণালয়ে ববের জীবনের নিত্য নতুন কাহিনী সঙ্কলিত ও সম্পাদিত হয়।
আমার এক বন্ধু সেখানে কাজ করে এবং আরামেই আছে। দশতলা ভবনের পেছনে আমাদের অফিস কিছুটা ছোট বলে সহজে চোখে পড়ে না, কিন্তু আমাদের গুরুত্ব কম নয়।
আমার ও আমার সহকর্মীদের দায়িত্ব হলো ববের নাম ব্যবহারের নতুন নতুন ক্ষেত্র নির্ধারণ করা। প্রতিজনের প্রতিদিনের সুনির্দিষ্ট কোটা আছে। এক দিন ফেল করলে মাফ আছে, কিন্তু পর পর কয়েকদিন হলে খবর আছে।
বব মন্ত্রনালয় থেকে ডাক আসে। তার পর কি হয় নাই বা বললাম।
দুপুরে অফিসের বব কেন্টিনে খেয়ে নিলাম। এই রেসিপিটা নাকি বব খুব পছন্দ করতেন, তাই সব সরকারী কেন্টিনে এটাই মুখ্য খাবার। অন্যান্য জায়গাতেও এই রেসিপির জন্য ভ্যাট মাফ।
কাজের শেষে ভাবলাম একটু হাঁটি। বব-২১ প্রধান সড়ক ধরে কিছুদূর গিয়ে ববপার্ক-১৩ তে একটু বসলাম। গাছপালা তেমন নেই। শুধু বিল্বোর্ড- "পাইপের রাজা বব-পাইপ", "বব পাঞ্জাবী অনন্য, পরে সবাই হন ধন্য", ইত্যাদি।
আবার হাঁটা শুরু করলাম বাড়ির দিকে।
পথে দেখি এক টোকাই জাতীয় ছেলে এক পুলিশকে জিজ্ঞেস করছে, "স্যার, কটা বাজে?" ঘড়ি দেখে তিনি বললেন, "সাড়ে পাঁচ"। "ডিজিটাল টাইম?" ছেলেটা জিজ্ঞেস করল। সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড এক চড় - "হারামজাদা, ডিজিটাল টাইম আবার কি, বল বব টাইম। "
রাতে বব-২৭ ক্লাবে গিয়ে কিছুক্ষণ বব-বল খেললাম। এক পর্যায়ে হঠাৎ কেমন ক্লান্তি বোধ করলাম।
কাছেই ফার্মেসী ছিল, ডাক্তার সাহেব আমার বুকে স্টেথোস্কোপ লাগিয়ে অনেকক্ষণ শুনলেন। তারপরে গম্ভীর মুখে বললেন, " সিরিয়াস অবস্থা, আপনার বুক থেকে শুধু 'ধব ধব' আওয়াজ হচ্ছে, হওয়ার কথা 'বব বব'। বব-৫ হাসপাতালে যান তাড়াতাড়ি, আপনার হার্ট-ট্রান্সপ্লান্ট লাগতে পারে। "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।