রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশম হিজরিতে শেষ হজব্রত পালন করেন। মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পর তার পক্ষে আর হজ করার সুযোগ হয়নি। তিনি উপলব্ধি করেন পৃথিবী থেকে তার বিদায়ের দিন শেষ হয়ে আসছে। তিনি তাই তার উম্মতদের নিয়ে হজব্রত পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই ইচ্ছার কথা ব্যাপকভাবে প্রচার করা হলো। দশম হিজরির হজব্রত পালনে সাহাবিদের ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। বিভিন্ন জনপদে খবর দেওয়া হয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গী হওয়ার জন্য। প্রিয় সাহাবি ও জামাতা হজরত আলী (রা.) কে ইয়ামেন থেকে ডেকে আনা হয়। ২৬ জিলকদ মদিনায় মসজিদে নববি থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হজ কাফেলার যাত্রা শুরু হয়। তার আগে তিনি গোসল করে জোহরের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে শুরু হয় হজ কাফেলা। এ কাফেলায় হাজার হাজার অনুসারী অংশ নেন। আল্লাহর প্রশংসা ও লাব্বাইক শব্দে আকাশ-বাতাস ধ্বনিত, প্রতিধ্বনিত হতে থাকে।
জিলহজ মাসের ৪ তারিখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হজ কাফেলা মক্কায় হাজির হয়। তিনি পবিত্র কাবা শরিফ তওয়াফ করেন। তারপর মোকামে ইব্রাহিমে শোকরানা নামাজ আদায় করেন। সেখান থেকে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে যান আল্লাহর রাসূল। তারপর মক্কায় অবস্থান নেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৮ জিলহজ মিনায় অবস্থান করেন। পরদিন ফজরের নামাজ আদায় শেষে আরাফাতের ময়দানের দিকে রওনা দেন। দুপুরের পর তিনি আরাফাতের ময়দানে হাজির হন। আরাফাতের ময়দানে তখন হাজার হাজার মুমিনের আল্লাহু আকবর ধ্বনি এক ঐশীআবহ সৃষ্টি করছিল।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি উটের ওপর আরোহণ করে উম্মতদের উদ্দেশে খুতবা দেন। মুসলমানদের চলার পথের পথ-নির্দেশিকা হিসেবে অভিহিত করা হয় বিদায় হজের এই খুতবাকে। খুতবা শেষ হওয়ার সঙ্গে হজরত জিবরাইল (আ.) এসে আল্লাহর রাসূলকে দীনের পূর্ণতা সম্পর্কিত সুখবর দেন। বস্তুত এ বার্তা প্রদানের মাধ্যমে দুনিয়ায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিশন সুসম্পন্ন হওয়ার আভাস দেওয়া হয়।
লেখক : ইসলামী গবেষক।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।