আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিনির দাম এক বছরেও কমবে না

zahidmedia@gmail.com

চিনির দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই চলছে। বুধবার এক দিনের মধ্যেই চিনির দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ থেকে আট টাকা। রোযা তো দূরের কথা নিকট ভবিষ্যতেও চিনির দাম কমবে না বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। তাদের দাবি, আগামী এক বছরের মধ্যে চিনির আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। স্থানীয় সংকট কাটাতে তাই এখনই সরকারকে ২ লাখ মেট্রিক টন চিনি আমদানির পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির প্রথম সারির উৎপাদকদের তালিকায় ব্রাজিলের পরই ভারত। সেই ভারতে এবার উৎপাদন ঘাটতির আশংকা রয়েছে। টালমাটাল আন্তর্জাতিক বাজার। বিশ্ব বাজারে ওঠানামা করছে ‘র’ সুগারের দাম। ভারতে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস চিনির উৎপাদন মৌসুম।

এ মৌসুমে এবার চিনি কম উৎপাদনের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ পূর্বাভাস বাস্তব হলে চিনির বাজারে ভয়াবহ অবস্থা হবে বলে আশংকা করছেন আন্তর্জাতিক চিনি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থানীয় প্রতিনিধিরা। চিনি আমদানীকারক রবিউল ইসলাম আজাদ ফোকাস বাংলা নিউজকে জানান, ‘বর্তমান বাস্তবতায় টিসিবির মতো ফাঁকি না রেখে সরকারকে ঠিক পথে চিনি আমদানি করতে হবে। রোযার মাসকে সামনে রেখে টিসিবির সাড়ে ১২ হাজার মেট্রিক টন চিনি আমদানির কথা থাকলেও তা আদৌ জাহাজে ওঠার পর্যায়েই পৌঁছেনি। এ কারণে ব্যবসায়ীরা গুরুত্ব দিচ্ছেন চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের মাধ্যমে পর্যাপ্ত চিনি আমদানির।

’ চিনির বাজারে দামের সকাল-বিকাল ওঠা-নামায় ঝুঁকি নিতে রাজি হচ্ছেন না ব্যবসায়ীদের অনেকেই। প্রমাণ মেলে বাংলাদেশ ব্যাংকে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে এলসি খোলার কমতি থেকে। এদিকে রাজধানীসহ দেশের আনাচে-কানাচে খুচরা বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা কেজি দরে। এক দিন আগেও এর দর ছিল ৫২ টাকা। বুধবার সরকারি বিক্রয়কারী সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তালিকায় অবশ্য চিনির কেজি সর্বোচ্চ ৫২ টাকা লেখা রয়েছে।

টিসিবির তালিকামতে, এক সপ্তাহ আগে চিনির দর ছিল ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, আর এক মাস আগের দর ছিল ৪২ থেকে ৪৪ টাকা। এই হিসাবে এক মাসে চিনির দর বেড়েছে ১৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। এক বছর আগের তুলনায় বৃদ্ধি ৩৮ শতাংশ। বাংলাদেশ চিনি পরিশোধনকারী সমিতির মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ফোকাস বাংলা নিউজকে বলেন, খুচরা দোকানদারদের অতিলোভী মানসিকতা, বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধি এবং গণমাধ্যমের প্রচারণা কারণে চিনির দাম বাড়ছে। তিনি জানান, চিনির দাম নাগালের মধ্যে রাখতে আগামী ১ অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী ডিলার নিয়োগ করবে দেশবন্ধু চিনিকল।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নির্ধারিত দরে চিনি বিক্রি করা হবে। অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান ২৬ আগস্ট চার প্রধান চিনি পরিশোধনকারী মেঘনা গ্রুপ, দেশবন্ধু, ঈগলু রিফাইনারি ও সিটি গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। বৈঠকে ৩৯ টাকা কেজি দরে মিল গেট থেকে চিনি সরবরাহের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পাইকারি বাজারে তা ৪০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৪২ টাকার বেশি হওয়ার যুক্তি নেই বলে মেনেও নিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এই সিদ্ধান্তের দুই দিন পর থেকেই বাড়তে থাকে চিনির দাম।

সম্প্রতিক সময়ে তা প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে না বলে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান ও সংশিস্নষ্ট যুগ্ম-সচিবকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন রিফাইনারি এসোসিয়েশনের সচিব। একই সঙ্গে তিনি ৪টি মিলগেট থেকে ডিও অনুসারে প্রতিদিনের সরবরাহের পরিমাণও লিখিতভাবে জানাচ্ছেন। তার পাঠানো তথ্যমতে সর্বশেষ ৬ সেপ্টেম্বর রোববার দেশের ৪টি মিলগেট থেকে ৩ হাজার ৮০০ টনেরও বেশি চিনি সরবরাহ করা হয়েছে বলে ফ্যাক্সযোগে জানিয়েছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.