আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেনেডি না সাইফুর? কে বাংলাদেশের জন্য বেশী গুরুত্বপূর্ণ?

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

গতকাল দুপুর আড়াইটা-তিনটার দিকে সাইফুর রহমান যখন এক্সিডেন্ট করলেন তখনই এদেশীয় চ্যানেলগুলাতে ব্রেকিং নিউজে লেখা উইঠা গেলো। ভাষা ছিল, সাইফুর রহমান সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে সদর হাসপাতালে। তারপরে নিউজ হইলো তিনি মারা গেলেন। তারপরে, কোন জায়গায় এক্সিডেন্ট হইলো, কয়টার সময় হইলো, কোন হাসপাতালে নেয়া হইলো, কয়টার সময় মারা গেলো ইত্যাদি নানা বৃত্তান্ত। বোঝা যাইতেছিলো সংবাদমাধ্যম যতটুকু সংবাদ পাইতেছে তাই সাথে সাথে আপডেট দিতেছে।

সিনেটর টেড কেনেডী মারা গেছে এক সপ্তাহের উপর হইলো। সে বাংলাদেশের জন্য মেলা কিছু করছে - এমন বক্তব্য মারতে মারতে ফারুক চৌধুরী মুখের ফেনা বের কইরা ফেললো। তার কথা শুইনা মনে হয় কেনেডির বাংলাদেশ ছাড়া আর কোন চিন্তাই ছিলো না। আর ফারুক চৌধুরী তার সাথে সার্বক্ষনিক লেপ্টালেপ্টি কইরা চলতো। সাতদিন যাবত টেড কেনেডির স্মৃতিচারণ কইরা এই দেশের প্রাক-কুটনৈতিক আর সাংবাদিকরা মোটামুটি তারে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের যাবতীয় কৃতিত্ব দিয়া দিলো।

দিতেই পারে, কোনো অসুবিধা নাই। যার যার মুখ তার তার অধিকারে। দাঁত দিয়া কি চাবাইলো আর কি শোনাইলো সেইটা তার ব্যাপার। কিন্তু দুঃখজনক হইলো সাইফুর রহমান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হবার পরে দেখলাম সাইফুরের চাইতে কেনেডির মৃত্যু নিয়ে শোকাহুত আমাদের কুটনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংবাদিককূল। কয়েকটা চ্যানেলে দায়সাড়া গোছের কিছু নিউজ দেখাইলো, কিন্তু বেশীরভাগ টকশোগুলোতে কেনেডিই থাকলো মধ্যমনি।

সাইফুর রহমানের কুলঙ্গার পুত্ররা হয়তো দূর্ণীতি করছে, থাকতে পারে সাইফুরের মেলা দূর্বলতা, কিন্তু এইদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সাইফুরের ভূমিকা নিয়া আলোচনার প্রয়োজন কেনেডির চাইতে অনেক বেশী। সাইফুরের কি কি বাজে পদক্ষেপ আমাদের অর্থনীতিকে ভাসাইয়া দিছে আর কোন অবদানগুলোর স্বীকৃতি পাওয়া আবশ্যক এইসব এদেশের মানুষের জন্য জানা বেশী আবশ্যক। একজন টেড কেনেডি আম্রিকার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হইতে পারে কিন্তু সাইফুর বাংলাদেশের জন্য কেনেডির চাইতে হাজারগুণ বেশী গুরুত্বের দাবী রাখে। কিন্তু গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত টিভিগুলা দেইখা মনে হইলো সাইফুর রহমান মরছে তো কি হইছে! হতভাগা দেশ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.