আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাহবাগী চেতনা ও তারুণ্যের জাগরণ

ফেরার পথে দেখা, আর রব না একা বরিশাল তথা দক্ষিণ বাংলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের নতুন অধ্যক্ষ প্রফেসর শঙ্কর চন্দ্র দত্ত দায়িত্ব বুঝে নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেননি। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তিনি কাজে যোগদান করতে কলেজে এসেছিলেন। গেট পর্যন্ত আসার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রলীগের একদল জঙ্গি কর্মী তাকে ধাওয়া করে। তিনি পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন; কিন্তু বেশিদূর যেতে পারেননি। ছাত্রলীগের সদস্যরা তাকে ধরে ফেলে, কিলিয়ে কাঁঠাল পাকানোর মতো তার শরীরে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে মিডিয়ার খবর হচ্ছে, তিনি শেষ পর্যন্ত কয়েক জনের সহায়তায় প্রাণ নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। লোকমুখে চাউর হয়ে গেছে যে, তার হেনস্থা হওয়ার পেছনে বিদায়ী অধ্যক্ষ ড. ননী গোপাল দাসের হাত রয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তাকে অন্য কলেজে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। তখন থেকে তার বদলির আদেশ বাতিলের জন্য বিএম কলেজে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছে ছাত্রলীগের কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী। ধারণা করা হচ্ছে, তারা বিদায়ী অধ্যক্ষের দুর্নীতির সুবিধাভোগী।

ওই অধ্যক্ষ চলে গেলে তাদের সুবিধার অবসান তো ঘটবেই, উপরন্তু সবকিছু ফাঁস হয়ে গিয়ে ‘ভাবমূর্তি’ ক্ষুণ্ন হতে পারে। তাই তারা পিটিয়ে হলেও বিএম কলেজে নতুন কোনো অধ্যক্ষের আগমন ঠেকাতে বদ্ধপরিকর। অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে মনে হয় নতুন অধ্যক্ষকে কলেজে ঢুকতে হলে আরও শক্তিশালী পেটোয়া বাহিনীর সঙ্গে রফা করতে হবে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে যেভাবে ‘তারুণ্যের জাগরণ’ শুরু হয়েছে তার অভিঘাতে প্রায় সব শিক্ষাঙ্গন এখন বেহাল দশায় উপনীত। এমন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলোতে ছাত্রলীগের অঙ্গুলি হেলন ছাড়া গাছের একটি পাতাও নড়ে না।

শিক্ষকদের মধ্যে প্রচণ্ড দলাদলি এবং সাবেক ছাত্রলীগারদের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে ঢালাও নিয়োগদান পরিস্থিতিকে চরম অবনতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। শিক্ষকে শিক্ষকে হাতাহাতি, ছাত্রলীগ ছাত্রলীগে খুনোখুনি এখন আর চোখ কপালে ওঠার মতো কোনো ব্যাপার নয়। বাকি ছিল শিক্ষকদের গায়ে হাত তোলা। ছাত্রলীগের উদ্ধত সদস্যদের কল্যাণে সেটাও এখন ডাল-ভাতে পরিণত হতে যাচ্ছে। এই শিক্ষক পিটিয়ে হাত পাকানো ছাত্ররা যখন লেখাপড়া শেষ করে অথবা অসমাপ্ত রেখে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে, সমাজের নেতৃত্ব নেবে তখন দেশের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে ভাবতেও ভয় লাগে।

আমরা দুঃখিত, এই ধরনের ঔদ্ধত্য ও উচ্ছৃঙ্খলতাকে ‘তারুণ্যের জাগরণ’ বলে সাধুবাদ জানাতে পারছি না। শাহবাগী চেতনা !!!!!! Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.