আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাহবাগী ড্রামা রিভিউ by এ ডেডিকেটেড মুভি ক্রিটিক

জীবনে সফল হতে না পারি দুঃখ নেই... একজন ভাল মানুষ হিসেবে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে চাই...

গত ফেব্রুয়ারিতে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার ড্রামা মুভি "গণজাগরণ মঞ্চ" দশ মাস পার করলো।


সাম্প্রতিক সময়ে মুভির বিভিন্ন শট নিয়ে মুভির ঘোরতর শুভাকাঙ্ক্ষীরাও হতাশ।


গতকাল দুই মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি শটে নট-নটীর উপস্থিতির হার দেখুন:



এ-পরিস্থিতিতে "গণজাগরণ মঞ্চ" মুভির গত দশ মাসের পারফরমেন্সের পর্যালোচনা থেকে নিচের দুর্বলতাগুলো বেরিয়ে এসেছে:


১. স্ক্রিপ্ট: এখানে শুরু থেকেই বাংলা পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে কোন কোন অধ্যায় থাকবে, সেটা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। কাদের মোল্লার ফাঁসি, সব রাজাকারের [আওয়ামী লীগ বাদে] ফাঁসি, জামায়াত নিষিদ্ধ, ধর্মভিত্তিক পুরো রাজনীতিই নিষিদ্ধ, নয়া দিগন্ত/আমার দেশ নিষিদ্ধ, দিগন্ত টিভি নিষিদ্ধ, ইসলামী ব্যাংক নিষিদ্ধ ইত্যাদি বিভিন্ন অধ্যায় নিয়ে মঞ্চ নেতৃবৃন্দ নিজেরাই কিছুটা সার্কাসের মধ্যে পড়েন।


কাদের মোল্লার ফাঁসির পর বাংলা পরীক্ষার মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যায় সংযুক্ত হয়।

পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ছেদ, পণ্য বর্জনের গর্জনও বাংলা পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে পাকি পণ্যের তালিকায় ভারতমাতার পণ্য সুপার-ম্যাক্সকেও অন্তর্ভুক্ত করায় স্ক্রিপ্টের দুর্বলতার বিষয়টি আবারও দেবযানী অর্থাৎ উলঙ্গ হয়ে যায়।

২. কাস্টিং: অনেকেই মনে করেন, নামগোত্রহীন এক ব্লগার [কোথায় ব্লগিং করতেন, সেটাও এক রহস্য] ইমরান ও বাম বামন লাকি আক্তারকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে বাছাই করাটা ছিল মঞ্চ-নাটকের অন্যতম প্রধান দুর্বলতা।



এখানে আরো ইম্প্রেসিভ স্টারদেরকে কাস্ট করা উচিত ছিল। যেমন: চেতনাবাদী অভিনেতা ইরেশ জাকের ও চেতনাবাদী অভিনেত্রী অপি করিম হতেন এই দুই চরিত্রের জন্য দারুন পারফেক্ট।





বিশেষত, দ্বিতীয় বিবাহ বিচ্ছেদের পর অপি করিমের জন্য এই চরিত্রটি অনেক প্রয়োজনীয়ও বটে! তবে বিয়ের সংখ্যার দিক থাকে অপি ইতিমধ্যে আরেক চেতনাধারী শমীকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন বলে তিনি অগ্রগণ্য নাও হতে পারেন।


৩. রূপসজ্জা: বাপ্পাদিত্য পশুর ওপর ককটেল হামলার শটের পর মেকআপ ও কস্টিউম ডিজাইন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।



এছাড়া পার্শ্বচরিত্রের অভিনেত্রীদের পোশাক অনেককে চরিত্রহীন করে ফেলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

৪. নৃত্য পরিচালনা (Choreography): শাহবাগের নৃত্য বড় বেশি উন্মাতাল। সময়-অসময় না বুঝে বাঙালি পোশাকে গর্বিত দেহবল্লরীর বিচিত্র অঙ্গভঙ্গি অবশ্য দর্শক ধরে রাখার কৌশল।





কিন্তু হাল আমলের রিয়ালিটি শো-ভক্ত প্রজন্মের কাছে ওসব খুব বেশিদিন রগরগে ঠেকেনি। তাই দর্শকও এক পর্যায়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

অনেকেই মনে করেন, শমী কায়সারের দ্বিতীয় স্বামী আরাফাতের আপত্তি না থাকলে, শাহবাগে Choreography-র দায়িত্বটি শমীর প্রথম স্বামী রিঙ্গোকে দেয়া যেতে পারে!


৫. অতি-অভিনয় (Overacting): শাহবাগের অভিনেতাদের এটিই সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হিসেবে ধরা পড়েছে সাধারণ দর্শকদের চোখে।



বিশেষত পাক দূতাবাস ঘেরাও-এর শটে অনেকেরই অতি-অভিনয় হাস্যরসের সৃষ্টি করে ফেলেছে।

নট-নটীদের অতি-অভিনয়ে বিভ্রান্ত পুলিশও অভিনয়ের খেই ধরে রাখতে পারেনি - ডান্ডা মেরে দিয়েছে কাউকে কাউকে।




৬. পরিচালনা: নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ওরফে জমির চাচার পরিচালনাই আসলে শাহবাগ ড্রামা মুভি "গণজাগরণ মঞ্চ"-এর প্রধান দুর্বলতা।



চেতনাব্যবসার বাইরে এই লোকটির শিল্পজগতে সাফল্যের অংক তেমন সমৃদ্ধ নয়, যদিও লাকিদেরকে ফাঁকি দিয়ে অংকশায়িনী করার সাফল্য নাকি প্রবাদতুল্য! ;-)

অনেকেই মনে করেন, বাচ্চু চাচার টেম্পার শেষ। বাচ্চুর সহযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূরেরই এখন মঞ্চ-পরিচালনায় সরাসরি চলে আসা উচিত।

.... .... ....

তবে নীলফামারির রিয়াল একশন সিকোয়েন্স দেখার পর আসাদুজ্জামান নূরসহ বাকি চেতনাব্যবসায়ীরা যদি এখন মাঠ ছেড়ে পালানোর ধান্দা করে থাকেন, তাহলে জেনে রাখবেন, এই ড্রামা মুভি "গণজাগরণ মঞ্চ"-কে মহাফ্লপ কমেডি বানানোর দায় থাকে আপনারা কেউই মুক্তি পাবেন না!


লেখকঃ Doorer Jatri

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.