পাখি এক্সপ্রেস
আলাদীনের চেরাগ পেলে ঘঁষা মেরে দৈত্যের কাছে মারবেল আর লাটিম খেলার শৈশবে ফিরে যেতে চাইতাম কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে আমার এ লেখার উদ্দেশ্যটার সঠিক বর্ণনার বিষয়ে আমার সক্ষমতার কিছু অবশ্যই চাইতাম। ভাবনাগুলো বেজায় বিদঘুটে, নোংরা এবং অশ্লীল। অন্য কিছু নয়, নারী, বাণিজ্য আর মিথ সংক্রান্ত। এ তিনেই ঘুরপাক খাবো।
নারীর অধিকার নিয়ে চিল্লাচিল্লি করতে কিছুটা শরম লাগে। তবে জন্মের পর সিথানে বেশি করে লজ্জাবতী লতা দেয়াতেই রক্ষা, নইলে নিশ্চিত বেগুনি বা খয়েরি হয়ে যেতাম। দোভাগা, তেভাগা আর হতভাগাদের অত্যাচারে নারীর স্ব-ভাগে নির্লজ্জ ভাগাভাগির টি-টুয়েন্টি শটগুলো ওভার বাউন্ডারির পরের বিশেষন খুঁজতেছে। যতো ভয় এটা নিয়ে।
ভাবতেছি- আর কতো রকম রমনীয় প্রসাধন বাজারে আসতে পারে! নারী অংগসমূহ বিশেষ বিবেচনায় আলাদাকরণের মাধ্যমে এর ঘঁষামাজার প্রয়োজনীয়তা এবং উপায় নিয়ে কর্পোরেট টেনশনের আগাগোড়ায় কোন রসায়ন হঠাৎ বিশেষত্ব পেয়ে যায়! সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাজারে প্রচলিত অংগভিত্তিক প্রসাধন ব্যবহার করে শেষ করা একজন রমনীর পক্ষে কতোটা সাধ্যের ব্যাপার?
মাথা একখান সবারই থাকে।
মাথার উপরে চুল থাকে আবার মগজও থাকে। এ মাথার ভেতর মগজে এক নারী কতটুকু জ্ঞান ধারণ করতে পারে, এটা নিয়ে সচেতনতা নিয়ে কোন টেনশন নেই। কিন্তু চুল শক্ত হলে কিভাবে ত্যাড়া প্রেমিককে বেঁধে রাখা যাবে, চুল সুন্দর না হলে ভালো পাত্র ঝুটবে কি ঝুটবে না এ সংক্রান্ত বিষয়ে টেনশন করতে করতে পুরুষ স¤প্রদায়ের কর্পোরেট মগজে পলি সংকট দেখা দিচ্ছে। এক নারী তার বুকে কতটা গর্ব ধারণ করতে পারে, এ বিষয়ে ভাবনা সব গোল্লায় যাক। তার বুকে যে নরম মাংসের স্তুপ আছে, এ বিষয়ে আসা যাক।
এ মাংস পুরষের খুবই পছন্দের। সুতরাং এটার কোমল্ত্ব ধারণ করার জন্য ক্ষারযুক্ত সাবানের পরিবর্তে কোন প্রসাধন ব্যবহার ঠিক হবে, মাংস যেন ঝুলে না যায় তার জন্য কোন ক্রীমের দরকার? এগুলো বসে বসে ঠিক করি। চুল বলি আর নখ বলি আর বুকই বলি সব কিছুর গন্তব্য ওই পুরুষ এবং তার যৌনাচার।
প্রতিটি অংগের জন্য আর কতরকমের সাজগোজ অথবা প্রসাধন আবিষ্কারের প্রয়োজন আছে?- এমন গবেষনা কাজে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব ব্যাপকাকারে নিরসন হলে মুখে তালা লাগিয়ে নিবো।
বাংলাদেশের টেলিভিশনওয়ালা সংসারগুলোতে স্থায়ী সদস্য হিসেবে স্যাটেলাইট চ্যানেলের হিন্দি সিরিয়ালগুলো স্থান করে নিয়েছে।
যে হিন্দি সিরিয়ালগুলো দেখার জন্য সংসারের শৃঙ্খলা নষ্ট করতেও রাজি আছে গৃহীনিরা। নারীর পিছিয়ে থাকাকে পুঁজি করে উদ্ভট কাহিনী নিয়ে নির্মিত এসকল সিরিয়ালে অভিনেত্রীরা সর্বক্ষণ উৎকট সাজগোজ নিয়ে থাকে। অভিনেত্রীদের পরিহিত বস্ত্র ক’দিন পর বিভিন্ন নামে বাজারে আসে এবং ওইসকল গৃহীনিরা দলবেঁধে নেমে আসে বস্ত্রগুলো ক্রয় করার জন্য। এ সিরিয়ালগুলোকে ঘিরে হাজার হাজার কোটী টাকার বাণিজ্য।
নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী কিছু সামাজিক সংগঠনের কাজের ধরন দেখলে “মেয়েলী” বমি আসে।
এ আন্দোলন করতে গিয়ে নারীদের জন্য আলাদা ঋণ, আলাদা মহিলা শিক্ষালয়, হাসপাতাল, বাস, পার্লার এসব কিছুর সৃষ্টি হবার পর হয়তো মহিলা ফুটপাত, মহিলা চটপটি হাউস. মহিলা টি-স্টলসহ হাবিজাবি অনেক কিছুই দেখতে পাবো।
সভা সেমিনার, বিজ্ঞাপন, নাটক সিনেমাসহ সবক্ষেত্রে নারীকে বুঝাতে হবে তুমি অবশ্যই আরামদায়ক এবং লোভনীয় কিছু। হয় এই আরাম বা লোভ নিজে উপভোগ করার জন্য তোমাকে সচেতন হতে হবে, নইলে পুরুষ যেন তোমার এই আরাম অন্যায়ভাবে ভোগ করতে না পারে সেজন্য নিজেকে আলাদা করে নিতে হবে।
সব কিছুর শেষ হচ্ছে তুমি নারী। মানে লোভনীয় এবং আরামদায়ক কিছু।
কর্পোরেট শুয়োরের বাচ্চারা নারীকে মানুষ হতে দিবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।