ইরান যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলোর বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি, সিরিয়ার লড়াইয়ের প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ ও আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা মূলত এই উদ্বেগের কারণ।
আগামী ১৪ জুনের নির্বাচন সামনে রেখে ইরানের কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেয়নি। তবে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির প্রতি যাঁরা অনুগত, শুধু তাঁদেরই প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে কোনো উদারপন্থী ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার সামান্য সুযোগটিও আর থাকছে না।
সিরিয়ার সংকট নিরসনের প্রশ্নে আগামী মাসে জেনেভায় শান্তি সম্মেলন করার উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। সম্মেলনের পক্ষে সমর্থন লাভের জন্য তারা প্রচেষ্টাও অব্যাহত রেখেছে। তবে এ ক্ষেত্রে দামেস্ক ও তেহরানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে ক্রমাগত নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরাঁ ফ্যাবিয়াস গত রোববার বলেছেন, দিনের পর দিন ইরানের বাহিনীগুলো প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পক্ষকে জোরালো মদদ দিচ্ছে। আর এটা শান্তিপ্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার কোনো ভালো পদক্ষেপ নয়।
জেনেভার সম্মেলন সামনে রেখে গতকাল সোমবার প্যারিসে লরাঁ ফ্যাবিয়াস ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সিরিয়ার ইস্যুতে ইরানের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
পশ্চিমা শক্তিধর দেশ ও আরব দেশগুলোর অভিযোগ, বাশারের বাহিনীকে অস্ত্র ও সেনা পাঠিয়ে মদদ দিচ্ছে তেহরান। শীর্ষস্থানীয় একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি কুশায়েরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য ইরান তার লেবাননের শিয়া মিত্র হিজবুল্লাহর মাধ্যমে বাশারের বাহিনীকে মদদ দিচ্ছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইরান বলেছে, তেহরান কখনোই সিরিয়ায় সেনা পাঠায়নি এবং ‘কখনোই এ ধরনের কাজ করবে না’।
গত সপ্তাহে ইরানের সাংবিধানিক নজরদারি কর্তৃপক্ষ গার্ডিয়ানস কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য কয়েক শ প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেয়নি। ফলে নির্বাচন ইরানে পরিবর্তন আনবে, এমন সামান্য সম্ভাবনার ক্ষেত্রটিও উড়ে গেল। ওই কর্তৃপক্ষ ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির অনুগত আট ব্যক্তিকে নির্বাচন করার ছাড়পত্র দিয়েছে। বিশেষ করে, সংস্থাটি ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট উদারপন্থী আকবর হাশেমি রাফসানজানিকে নির্বাচন করার সুযোগ দেয়নি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ওই পদক্ষেপ ইঙ্গিত দেয় যে, খামেনি ক্ষমতা কুক্ষিগত করছেন এবং নির্বাচন সামনে রেখে কোনো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীর আবির্ভাব হোক, তা তিনি চান না।
পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, ইরান শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির নামে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ইরান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এ নিয়ে দুই পক্ষই কয়েক বছর ধরে আলোচনা করলেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।