আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শৈশবে স্থূলতা, ক্রমেই বাড়ছে সমস্যা

"আমার রঙ্গীন পাল নীল সাগরে, ভেসে যায় তরী আমার ঢেউ এর তরে, চলো স্বপ্ন বুনি নীল দরিয়ায়, অসীম নীলে তরী আমার যায় উড়ে যায়!"

অসংক্রামক ব্যাধি বাড়ছে পৃথিবীতে। তবে চাঞ্চল্যকর খবর এসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন থেকে। দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর ৬০ শতাংশের পেছনে রয়েছে অসংক্রামক ব্যাধি। এসব মৃত্যুর বেশির ভাগ ঘটছে নিম্ন আয় ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে। আরেকটি খবর হলো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, শিশুদের মধ্যে বাড়ছে স্থূলতা।

এ জন্য সবাইকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং নন-অ্যালকোহলিক কোমল পানীয়ের বিপণন হ্রাস করে শিশু-স্থূলতার মহামারির অবসান ঘটাতে হবে। শিশুস্বাস্থ্যের উন্নয়নে নতুন নতুন উপায়ের পরামর্শও দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য, বিশ্বজুড়ে শিশুরা চর্বি, চিনি, লবণবহুল খাবারের বিজ্ঞাপন ও বিপণনের মুখোমুখি। এসব খাবারের প্রতি অনুরাগী হয়ে পড়ছে। তরুণ প্রজন্ম অসংক্রামক ব্যাধির শিকার হচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে ৬০ শতাংশ যে মৃত্যু ঘটছে অসংক্রামক ব্যাধির কারণে, এতে মৃত্যু ঘটছে সাড়ে তিন কোটি লোকের। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বক্তব্য, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হূদেরাগ ও ক্রনিক ফুসফুসের রোগের পেছনে যে চারটি উপাদান, এর অন্যতম হলো অখাদ্য-কুখাদ্য। এসব রোগের কারণে ৯০ লাখ লোকের অকালমৃত্যু ঘটে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তদারকি ও প্রতিরোধ কর্মসূচির সমন্বয়ক টিম আমস্ট্রং বলেন, এদের মধ্যে একটি ঝুঁকি ‘স্থূলতা’, দরিদ্র দেশগুলোর শিশুদের মধ্যে এটি ক্রমে ক্রমে বেড়ে যাওয়ায় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। টিম আমস্ট্রং আরও বলেন, ‘বর্তমানে প্রায় চার কোটি ২০ লাখ শিশু, পাঁচ বছরের নিচে যারা ওজনে ভারী অথবা স্থূল...।

এখানে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, চার কোটি ২০ লাখ শিশুর মধ্যে সাড়ে তিন কোটি শিশুর বাস নিম্ন আয় ও মধ্য আয়ের দেশগুলোয়, ইস্যুটি কিন্তু বেশ বড়, কল্পনা করা যায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্যদেশগুলোর পক্ষ থেকে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ ঘটেছে অবশ্য, এসব ভারী ওজন শিশু যখন একদিন স্থূল-পূর্ণবয়স্ক হয়ে উঠবে, তখন এর পরিণতিতে যে রোগের বোঝা দেশগুলোর ওপর পড়বে, কীভাবে তা মোকাবিলা করা যাবে?’ উদাহরণস্বরূপ একটি ছোট দ্বীপদেশ সামোয়া। এর স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক পালানটিনা টয়েলুপে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় ওই দ্বীপের এক লাখ ৮০ হাজার লোকের বেশির ভাগ লোকই চর্বিবহুল ও স্থূল। এটি ঘটেছে আধুনিকায়ন ও জীবনযাপনে পরিবর্তনের জন্য। পালানটিনা বলেন, অসংক্রামক রোগ বা সংক্ষেপে এনসিডি (নন-কমিউনিকেবল ডিসিজেস) হলো এখন সামোয়া দ্বীপে পূর্ণবয়স্কদের মৃত্যুর বড় কারণ।

শিশুদের মধ্যে স্থূলতা যেহেতু ক্রমে বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে, এখন অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে উঠবে। পালানটিনা সত্যিই উদ্বিগ্ন। ইতিমধ্যে অসংক্রামক ব্যাধিক কারণে মৃত্যু যা ঘটছে এবং এ জন্য যারা রুগ্ণ হচ্ছে, এসব পূর্ণবয়স্ক লোককে নিয়ে বড় সমস্যায় রয়েছে ওই দেশ। আর অসংক্রামক ব্যাধির শিকার শিশুদের ব্যাপক মোকাবিলা করতে হবে। বহুজাতিক কোম্পানি ও সংস্থাগুলোর প্রভাব এড়ানোও কঠিন।

তারা তাদের যেসব চিত্তহারী অথচ অস্বাস্থ্যকর জিনিসের বিজ্ঞাপন শিশুদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে, একে সামলানো সত্যি কঠিন কাজ। এদের নিবৃত্ত করাও কম কঠিন কাজ নয়। গণমাধ্যমের ওপর বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্রভাব অনেক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অস্বাস্থ্যকর খাবারের বিপণনের সিংহভাগ কারণের জন্য দুষছে টিভি বিজ্ঞাপনকে। সংস্থা বলছে, শিশুদের খাবার পছন্দ, খাবার কেনার বায়না ও খাওয়ার নমুনা—সবকিছুর ওপর বিজ্ঞাপন জোরালো প্রভাব ফেলে, এমন তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।

গত বছরের মে মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে সদস্যদেশগুলো শিশুদের খাবার ও কোমল পানীয়ের বিপণনের জন্য নতুন পরামর্শের ব্যাপারে মতৈক্যে পৌঁছেছে। এসব পরামর্শের মধ্যে আছে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট, চিনি ও লবণযুক্ত খাবারের বিজ্ঞাপনের মুখোমুখি যাতে শিশুরা না হয়, সে জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কার্যক্রম এবং নজরদারি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরও পরামর্শ, দেশে দেশে সরকার শিশুদের লক্ষ্য করে ক্ষতিকর এসব বিপণনচর্চাকে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিরোধের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। আমাদের দেশেও বাড়ছে স্থূলশিশু। শিশুদের মধ্যে বাড়ছে ফাস্টফুড ও কোমল পানীয় গ্রহণ।

আমাদের এ বাপারে উদ্যোগী হওয়ার সময় এসেছে। এমন সমস্যা এ দেশেও বাড়তে পারে অদূর ভবিষ্যতে, নীতিনির্ধারকেরা ভেবে দেখতে পারেন। View this link View this link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.