১৯৮৯-৯০ সালের ব্রাসেলস সম্মেলনে ঘোষিত আইনে স্বাক্ষরদানকারী রাষ্ট্রসমূহের আফ্রিকান দাস পাচার বন্ধের দৃঢ় ইচ্ছা ঘোষণা সাপেক্ষে,
১৯১৯ সালের জার্মান কনভেনশনে স্বাক্ষরদানকারী রাষ্ট্রসমূহ সব ধরনের দাসত্ব এবং স্থল এবং সাগর পথে দাসত্ব বাণিজ্য দমন নিশ্চিতকরণের দৃঢ় ইচ্ছা ঘোয়ণা সাপেক্ষে,
১৯২৪ সালের ১২ ই জুন জাতিপুঞ্জ কাউন্সিল কর্তৃক অস্থায়ী দাসত্ব কমিশনের রিপোর্ট বিবেচনা সাপেক্ষে,
ব্রাসেলস আইনে ঘোষিত কাজ সমাপ্ত করা এবং জার্মান আইনে পক্ষরাষ্ট্রসমূহের দাসত্ব এবং দাসত্ব বাণিজ্য প্রতিরোধ সংক্রান্ত ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপদান করার উপায় বের করা সাপেক্ষে,
দাসত্বের অনুরূপ জোরপূর্বক শ্রম প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে, নিম্নরূপে সম্মত হয়:
অনুচ্ছেদ-১
দাসত্ব হলো কোন ব্যক্তির এমন এক অবস্থা বা মর্যাদা যার উপর মালিকানা বা সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়৷
দাসত্ব বাণিজ্য বলতে কোন ব্যক্তিকে দাসত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য বন্দীত্ব, দখল বা বিক্রি ; বিক্রয় বা বিনিময়ের মাধ্যমে কোন দাসকে দখলে রাখার জন্য যাবতীয় কার্যক্রম ; বিক্রি বা বিনিময় করার উদ্দের্শ্যে কোন দাসকে বিক্রয় বা বিনিময়ের মাধ্যমে হস্তান্তরের যাবতীয় কার্যক্রম এবং সাধারণভাবে দাসদের পরিবহন বা বাণিজ্য সংক্রান্ত প্রতিটি কাজ৷
অনুচ্ছেদ-২
চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রসমূহের সার্বভৌম দখল, এখতিয়ারাধীন বা কর্তৃতাধীন এলাকাসমূহে যদি নিম্নলিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে না থাকে তবে তা গ্রহণ করবে;
১. দাসত্ব বাণিজ্য থেকে বিরত করা এবং
২. পরিপূর্ণভাবে যত শীঘ্র সম্ভব সর্বপ্রকার দাসত্বের বিলোপ সাধন করা৷
অনুচ্ছেদ-৩
রাষ্ট্রসমূহ দাস ব্যবসায় প্রবৃত্ত হওয়া, দাস পরিবহন দমনের জন্য তার জলীয় সীমানায় এবং তাদের পতাকাবাহী যেকোন পরিবহন চালনা প্রতিহত করার জন্য যাবতীয় প্রয়োজনীয় ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷
অনুচ্ছেদ-৪
দাসত্বের বা দাসত্ব বাণিজ্যের বিলোপ সাধনের উদ্দেশ্যে প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্র একে অন্যকে
সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করবে৷
অনুচ্ছেদ-৫
সদস্যরাষ্ট্র সমূহ স্বীকার করে বাধ্যতামূলক বা জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্যকরণ মারাত্মক পরিণতি নিয়ে আসতে পারে৷ তাই চুক্তিভুক্ত রাষ্ট্রসমূহ তাদের সার্বভৌম দখল, এখতিয়ারাধীন বা দখলে থাকা রাষ্ট্রসমূহে দাসত্বের অনুরূপ বাধ্যতামূলক বা জোরপূর্বক শ্রমদান প্রতিহতকরণে উন্নয়নমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এই মর্মে নিম্নরূপে সম্মত হয়ঃ
১. নিচের ২য় প্যরায় উল্লিখিত স্বল্পমেয়াদী শর্তসাপেক্ষে কেবলমাত্র জনগণের জন্য বাধ্যতামূলক বা জোরপূর্বক শ্রম আদায় করা যাবে৷
২. যেসব এলাকায় এখনও বাধ্যতামূলক ও জোরপূর্বক শ্রম বিদ্যমান সেখানে চুক্তিভুক্ত রাষ্ট্রসমূহ যত শীঘ্র সম্ভব তা নিরসনের প্রচেষ্টা চালাবে৷ জোরপূর্বক বা বাধ্যতামূলক শ্রমের ক্ষেত্রে অবশ্যই যথাযথ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে হতে হবে এবং তার বাসস্থান এলাকা থেকে তাকে সরিয়ে নেয়া যাবে না৷
৩. সর্বক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক বা জোরপূর্বক শ্রম দেখভাল করার জন্য ঐ এলাকার কেন্দ্রীয় কর্তৃত্ব কর্তৃপক্ষের উপর আরোপিত হবে৷
অনুচ্ছেদ-৬
এই কনভেনশনের লক্ষ্য বাস্তবায়নে নির্ধারিত আইনকানুন ভঙ্গের জন্য বর্তমানে যদি যথার্থ শাস্তির বিধান না থাকে তবে এরূপ আইনভঙ্গের জন্য কঠোর শাস্তি প্রণয়ন করবে৷
অনুচ্ছেদ-৭
এই কনভেনশনকে কার্যকর করার জন্য কোন আইন প্রণয়ন করা হলে চুক্তিরাষ্ট্র জাতিপু্ঞ্জ মহাসচিবকে অবহিত করবে৷
অনুচ্ছেদ-৮
যদি চুক্তিরাষ্ট্রসমূহের নিজেদের মধ্যে এই কনভেনশনের ব্যখ্যা নিয়ে কোন বিরোধ দেখা দেয় তবে যদি দ্বিপাক্ষিক সমঝোতায় তা নিষ্পত্তি না হয় তবে সিদ্ধান্তের জন্য তা আন্তর্জাতিক আদালতে প্রেরণ করা যাবে৷ কিন্তু যেখানে বিরোধের যেকোন পক্ষ বা উভয় পক্ষ আন্তর্জাতিক আদালতের এখতিয়ার সম্পর্কিত ১৯২০ সালের ১৬ ই ডিসেম্বরে গৃহীত প্রটোকলের সদস্য নয় সেখানে পক্ষদ্বয়ের পছন্দ এবং উভয় রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদ্ধতি অনুযায়ী আন্তর্জতিক আদালত বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ১৯০৭ সালের ১৮ ই অক্টোবরে গৃহীত কনভেনশন অনুযায়ী গঠিত সালিশীতে বা মীমাংসার জন্য অন্য কোন সালিশী আদালতে প্রেরণ করতে পারে৷
অনুচ্ছেদ-৯
স্বাক্ষর, অনুমোদন বা যোগদানের সময় কোন চুক্তিরাষ্ট্র তার সার্বভৌম দখল বা এখতিয়ারে থাকা সকল এলাকা বা যেকোন অংশের জন্য এই কনভেনশনের অধীন সকল শর্ত বা যেকোন শর্তে বাধ্য না থাকার ঘোষণা দিতে পারে৷ পরবর্তীতে পৃথকভাবে যেকোন এলাকার পক্ষ থেকে যেকোন শর্তে যোগদান করা যায়৷
অনুচ্ছেদ-১০
যদি কোন চুক্তিরাষ্ট্র বর্তমান কনভেনশন বাতিল করতে চায় তবে তাকে জাতিপুঞ্জের মহাসচিবের নিকট লিখিতভাবে বাতিল-নোটিশ প্রদান করতে হবে৷ মহাসচিব তত্ক্ষণাত নোটিশের সত্যায়িত কপি অন্যান্য সকল সদস্যরাষ্ট্রকে যে তারিখে উক্ত বাতিল-নোটিশ সম্বন্ধে অবগত হয়েছেন তা অবহিত করবেন৷
জাতিপুঞ্জ মহাসচিব অবগতির এক বছর পর উক্ত বাতিল কার্যকর হবে৷
অনুচ্ছেদ-১১
আলোচ্য কনভেনশন বাতিল-নোটিশের তারিখ উল্লেখসহ ১৯২৭ সালের ১লা এপ্রিল পর্যন্ত জাতিপুঞ্জের সদস্যরাষ্ট্র কর্তৃক স্বাক্ষরের জন্য উণ্মুক্ত থাকবে৷
জাতিপুঞ্জ মহাসচিব পরবর্তীতে যেসকল রাষ্ট্র বর্তমান কনভেনশনে স্বাক্ষর করেননি এবং যে রাষ্ট্র জাতিপুঞ্জের সদস্যরাষ্ট্র নয় তাদের কাছে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করবেন৷ যোগদান শেষে যোগদানের দলিল মহাসচিব যে তারিখে গ্রহণ করেছেন তা অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রকে অবহিত করবেন৷
অনুচ্ছেদ-১২
আলোচ্য কনভেনশন অনুমোদিত হলে অনুমোদনের দলিল মহাসচিবের কাছে জমাদান শেষে তিনি আবার উক্ত জমাদানের কথা অন্যান্য রাষ্ট্রসমূহকে অবহিত করবেন৷
অনুমোদন বা যোগদানের দলিল জমা দেয়ার পর প্রতিটি রাষ্ট্রের উপর উক্ত কনভেনশন কার্যকর হবে৷
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।