সব কিছুর মধ্যেই সুন্দর খুঁজে পেতে চেষ্টা করি............
নাগরিক যন্ত্রনা-১
নাগরিক যন্ত্রনা-২ (রুচিহীন লিফলেট)
মহানগরী ঢাকার ট্রাফিক সিগনাল, বাস টার্মিনাল, ব্যস্ত রাস্তায় অথবা মার্কেটের সামনে বোরখা পরিহিত নারী কিম্বা বিদ্ধস্ত যুবকদের দেখা যায়-গাড়ি রিকশা, প্রাইভেট কার কিম্বা বিভিন্ন পরিবহনে থাকা যাত্রীদের জানালার ফাঁক ফোকর দিয়ে লিফলেট ছুঁড়ে দিতে। এসব লিফলেটের অধিকাংশই রাজধানী এবং রাজধানীর আশে পাশে গড়ে ওঠা কথিত বিভিন্ন ইউনানী, হারবাল বা ভেষজ চিকিতসা কেন্দ্রের প্রচারপত্র। এসব লিফলেটের ভাষা যেমন কুরিচুপুর্ণ তেমনি যাত্রীদের পড়তে হয় উটকো ঝামেলা এবং বিব্রতকর অবাস্থায়।
ঢাকা সিটির যেখানেই যাবেন দেখা মিলবে কুরুচিপুর্ণ অশ্লীল লিফলেট বিতরণ করার জন্য ভিয়া ইউনানী, হারবাল বা ভেষজ চিকিতসার কেন্দ্রগুলোর নিয়োগপ্রাপ্ত লোকেরা নগরীর বাসস্টান্ড, রেল স্টেশন, লঞ্চ ঘাট এবং গুরুত্বপুর্ণ স্থাগুলোতে যেখানে লোক সমাগম বেশী হয় সেইসব যায়গায় দাড়িয়ে লিফলেটগুলো বিতরণ করে। এসব লিফলেট চলন্ত বাসের জানালা দিয়ে ছুঁড়ে মারা হয়-যা অনেক সময় যাত্রীদের নাকে-মুখে এসে পড়ে।
বর্তমানে এসব লিফলেট বা পোস্টার শুধু যাত্রীদের মধ্যে বিতরণের মাঝেই সীমাবদ্ধ নেই। এগুলো বাসের সামনে কাঁচে সাটানো থাকে। এসব পোস্টারে বিজ্ঞাপনের ভাষা এতই অশ্লীল আর কুরুচিপুর্ণ যা মহিলা যাত্রীদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এই পোস্টারগুলো নর্মালী লাগানো হয়-যেখানে মহিলা যাত্রীরা বসেন। একজন যাত্রী বললেন-বাসে চড়লেই ছুড়েমারা লিফলেটের সাথে যোগ হয়েছে বড় বড় পোস্টারে নারী-পুরুষের গোপন রোগের বিস্তারিত অশ্লীল কথামালা।
এই অশ্লীল পোস্টার আর লিফলেটের কারনে বাসে বৌ-বাচ্চা নিয়ে চলাচল করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন কি বাচ্চাদের স্কুলে আনা-নেয়ার সময়েও বোরখাওয়ালী মহিলারা রিকশায় লিফলেট ছুঁড়ে মারে।
রাজধানীর ফার্মগেট, মালিবাগ, মগবাজার, শেরাটন সোনারগাঁও হোটেলের সামনে, প্রেসক্লাব, পল্টন মোড়, সদরঘাট, আজিমপুর, যাত্রাবাড়ি গাবতলীতেই এই ছোট ছোট লিফলেট ছুঁড়ে মারার দৃশ্য খুব বেশী। এসব স্থানে এইধরনের লিফলেট বিতরণের জন্য কয়েকশ মহিলা, পুরুষ এবং তরুন আছে। আমি বেশ কয়েকবার কয়েকজন বিতরণকারিকে জিজ্ঞেশ করে জেনেছি তারা কেউ কেউ দৈনিক ভিত্তিতে অথবা মান্থলী চুক্তিতে লিফলেট বিতরনের নিয়োজিত।
রিজিয়া নামের এক বোরখাওয়ালী এবং ছালাম নামের এক কিশোরকে জিজ্ঞেশ করে জানতে পারি-তারা লেখাপড়া জানেনা, এইসব লিফলেটে কি লেখা আছে তাও জানেনা। তবে বুঝতে পারে-ঐসব লিফলেটে খারাপ কিছু লেখা আছে বলেই বাসের ড্রাইভার, হেল্পার এবং যাত্রীরা ওদের দেখলেই বেজায় খারাপ ব্যবহার করে। তারপরও এই কাজে নিয়োজিত শুধু রুজী রোজগারের জন্য। যে প্রতিষ্ঠানের লিফলেট বিলি করা হয়-তাদের লোকজন দুড়ে দাঁড়িয়ে দেখে লিফলেট ঠিক মত বিলি করা হচ্ছে কিনা।
এইসব লিফলেট, পোস্টারের বিজ্ঞাপন দেয়া হয় খুব আকর্ষনীয় ভাবে।
যেমন-আমেরিকা কানাডা, জার্মান, লন্ডন সহ বিভিন্ন দেশ জয় করে বিশ্ববিখ্যাত হাকীম ডাঃ ------ বর্তমানে শনির আখড়ার---- চিকিতসা কেন্দ্রে রোগী দেখেন। পৃথিবীর যাবতীয় জটিল অসুখের-যেমন সবধরনের যৌন রোগ(বিস্তারিত লিখলামনা), পুরাতন আমাশয়, মহিলাদের বন্ধাত্ব,হাঁপানী, টিউমার, ক্যান্সার, এইডস, টিউমার, HBs(Ag)+Ve ধরা পরেছে-তাহলে আর দেরী নয়-এক্ষুনি চলে আসুন...... ইত্যাদি রোগ মাত্র সাত দিনের চিকিতসায় গ্যারান্টি সহকারে করা হয়। বিফলে মুল্য ফেরত! উল্যেখ্যযে-সম্পুর্ন কম্পুটারের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হয়। "জটিল রোগীদের জন্য রিতিমত মেডিকেল বোর্ড বসাইয়া চিকিতসা করা হয়"।
অশ্লীল, কুরুচিকর, বিরক্তিকর, অমার্জিত অথবা আপত্তিকর শব্ধগুলো ব্যাবহার করে যেকোন বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বিজ্ঞাপন নিতীমালায় সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ।
প্রচলিত আইন যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করা হলে এধরনের প্রতারণা এবং অশ্লীলতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব। রুচিহীন এসব লিফলেট, পোস্টার শুধু মনের এবং দৃস্টির দুষণই করেনা সাধারন মানুষকে প্রতারিত করে। সিটি কর্পোরেশন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা একটু সচেতন হলে এইধরনের নোংড়ামী বন্ধ করা যেত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।