সময় হয়েছে আজ আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠার; দৃপ্ত শপথ করে সম্মুখে পা ফেলে ছুটে চলার চিরন্তন সত্য ও সুন্দরের পথে......
উৎসর্গ: চির সত্যের পথে চলিত সকলকে
দৃষ্টি জীবনে আনে সুখের বৃষ্টি। দৃষ্টি মানুষের মনে অনুভূতির মাত্রা প্রবল করে। এই দৃষ্টি দিয়েই আমরা দেখি প্রকৃতি। উপভোগ করি রূপ, রস, গন্ধ। দৃষ্টির প্রভাব পৃথিবীতে সর্বদাই বিরাজমান।
কেউ কারো প্রেমে পড়ে দৃষ্টিতে। শিল্পীর শৈল্পীকতা ধরা পড়ে দৃষ্টিতে। আবার চোখের দৃষ্টির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় সকল সৌন্দর্য। প্রকৃত সৌন্দর্য দেখতে হলে প্রয়োজন অন্তর্দৃষ্টির। যাদের অন্তর্দৃষ্টি যত বেশী প্রবল, তারা তত বেশী সৌন্দর্য উপভোগকারী।
পৃথিবীতে দৃষ্টি'র বেশী অভাব না থাকলেও শুভ তথা অন্তর্দৃষ্টি'র অভাব লক্ষ্যনীয়। 'সভ্যতা ও সুসভ্যতা'র মাঝে যেমন বিস্তর প্রভেদ বিদ্যমান, তেমনি 'দৃষ্টি ও অন্তর্দৃষ্টি'র মধ্যে তেমনি পার্থক্য বিদ্যমান। পর্যটক, ফটোগ্রাফার, চিত্র শিল্পী ও সত্যাণ্বেষীদের কাছে সর্বদাই শুভ তথা অন্তর্দৃষ্টি'র কদর বেশী। শিল্পী তার গভীর দৃষ্টি দিয়েই ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলে অপরূপ ছবি। আর দর্শকরাও তেমনি সুন্দর দৃষ্টি দিয়েই দেখে তার আঁকা সেই ছবি।
দৃষ্টি মনের ওপর নির্ভর না করলেও শুভ তথা অন্তর্দৃষ্টি সর্বদাই মনে ওপর নির্ভরশীল। মনের গতিবিধির মাধ্যমেই অন্তর্দৃষ্টি আবর্তিত হয়। মন ভালো না হলে অনেক সুন্দর দৃশ্যও সুন্দর লাগে না। আবার, মন ভালো হলে অনেক সময় তেমন সুন্দর দৃশ্য না হলেও সুন্দর লাগে।
দৃষ্টিতে সবসময় ন্যায়-অন্যায় ধরা পড়ে না।
ন্যায়-অন্যায় ধরা পড়ে অন্তর্দৃষ্টি'র মধ্যে দিয়ে। যার অন্তর্দৃষ্টি যত প্রবল সে তত বেশী সত্য ও সৌন্দর্য উপভোগ করে। আবার অন্তর্দৃষ্টি'র কারণে অনেক মানুষ অপ্রিয় হয়ে যায়। তারা কেবল তাদের কাছেই অপ্রিয় হয় যারা শুধু মুখেমুখে সত্যের বুলি আওরায়। কেউ যদি তার গভীর দৃষ্টি দিয়ে কারো কোনো ভুল ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করে তখন তাকে আমরা বলি 'প্রতিক্রিয়াশীল'’।
শুধু কি এ পর্যন্তই? না, তাতেও তারা ক্ষান্ত হয় না। যা ইচ্ছে তাই বলে বেড়ায়। ক্ষতি করতে উদ্যত হয়। অনেক প্রতিক্রিয়াশীল'রা নিজ স্বার্থের প্রতি লক্ষ্য রেখে থেমে য়ায়। আবার অনেক প্রতিক্রিয়াশীল'রা কোনো কিছুতেই দমিত হয় না।
"তারা ভালোবাসে মানুষকে
ভালোবাসে আন্দোলন
ভালোবাসে চিন্তা করতে,
তাদের সংগ্রামকে তারা ভালোবাসে। "
এই প্রতিবাদীরা তথা প্রতিক্রিয়াশীলদের দোষ এখানেই যে, কেন তারা অন্যের ভুল ও অন্যায় তুলে ধরে। যখন কোনো ব্যক্তি কাউকে যা ইচ্ছে তাই বলে বেড়ায় বা বলে ফেলে; তখন সেই প্রতিবাদী বা সত্যভাষী ব্যক্তি যদি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তখন তথাকথিত প্রগতিশীল'রা এই সত্যভাষীকে নিন্দা ও ধিক্কার জানায়। তারা বলে উদ্দেশ্যমূলক মনোভাব নিয়েই নাকি এসব লিখে বা প্রতিবাদ করে। আবার অনেকের কাছে তার এই প্রতিবাদ দৃষ্টিকটুতে পরিণত হয়।
বলতে গেলে এক পর্যায়ে চরমভাবেই উপেক্ষিত হয়। আবার যারা অন্তর্দৃষ্টি'র মাধ্যমে সত্য অনুধাবন করে বা করতে পারে তারা সর্বদাই দেয় এই ব্যক্তিকে বাহবা। এই সত্যভাষী'রা বা প্রতিক্রিয়াশীল'রা একটি কথাই বলে- "দুষ্টু লোকের কাছে দৃষ্টিকটু হলে বল কি করি?" আসলেই প্রগতিশীলতার মুখোশধারীদেরকে প্রতিক্রিয়াশীলদের তেমন কিছই বলার থাকে না। কিন্তু তারা সর্বদাই সত্য বলে যায়। যে ব্যক্তি যত বেশী সত্যভাষী, সে ব্যক্তি তত বেশী অপ্রিয় ও নির্যাতিত।
এই প্রতিক্রিয়াশীল'রা জানে যে তারা এভাবে সর্বদাই উপেক্ষিত হবে। তবুও তারা নৈতিকতা ও বিবেকের তাড়নায় তাদের এই প্রতিবাদ চালিয়ে যায়। এনেদিতে চায় চির শ্বাস্বত সত্যের অমিয় ধারা।
সকল সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে প্রয়োজন অন্তর্দৃষ্টি'র। আর সত্য নামক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে প্রয়োজন বিবেক তাড়িত অন্তর্দৃষ্টি'র।
তবেই দৃষ্টির সার্থকতা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।