যে জানেনা এবং জানে যে সে জানেনা সে সরল, তাকে শেখাও। যে জানেনা এবং জানেনা যে সে জানে না, সে বোকা-তাকে পরিত্যাগ কর।
প্রিয় ব্লগার বন্ধুরা
লক্ষ্মীপুর জেলার মজুচৌধুরী হাটে সুবিধাবঞ্চিত জেলে শিশুদের জন্য স্থাপিত মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতনের জন্য একটি গঠনতন্ত্র আবশ্যক। এই প্রয়োজনীয়তা থেকে আমি একটি খসড়া গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করে আপনাদের উদ্দেশে পোস্ট দিলাম। আপনাদের পরামর্শ, মতামত এবং সহযোগিতায় গঠনতন্ত্রটি সমৃদ্ধ হবে- এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
আপনাদের সুচিন্তিত মতামত খুব খুব দরকার। গঠনতন্ত্রটি ফাইনাল করে ২৬ মার্চ তারিখে আমরা স্কুলের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা করছি....
মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন
গঠনতন্ত্র
ভূমিকা :
১. মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন লক্ষ্মীপুর জেলার মজু চৌধুরী হাটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের উপর স্থাপিত একটি স্কুল। মেঘনা নদী এবং এর তীরে বসবাসরত জেলে সন্তানদের পড়াশুনার সুবিধার কথা চিন্তা করে স্কুলটি স্থাপন করা হয়। ২০০৮ সালের ১৪ জুন তারিখে স্কুলটি স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বাংলাদেশের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে স্কুলটি স্থাপন করা হয়েছে।
২. মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে এই প্রতিষ্ঠানটির স্থাপনা একটি মহতী উদ্যোগ। মেঘনা নদীর একটি শাখাকে শাসন করার জন্য দুইটি স্লুইস গেট আছে। এই স্লুইস গেট দুইটির মাঝখান দিয়ে একটি কাঁচা রাস্তা মেঘনা নদীর বুকে পশ্চিমে গিয়ে আনুমানিক ৫০০ গজ দূরে নদীর বুকে এক টুকরো চরের মতো জেগে আছে। রাস্তার এই মাথাটিকে কেন্দ্র করে প্রায় ত্রিশ/চল্লিশ বছরের পুরনো একটি জনপদ গড়ে উঠেছে। প্রায় ৫০/৬০ মাঝি পরিবার মেঘনা নদীর বুকে নৌকার মধ্যেই বসবাস করে আসছে।
তাদের সন্তানরাও এই নৌকাতেই জন্মগ্রহণ করছে এবং এখানেই বড় হচ্ছে।
৩. এই স্থানটি থেকে ২/১ কিলোমিটারের মধ্যে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও জেলেপাড়ার অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে কিংবা আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে শিশুরা স্কুলে যায় না। মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে আরও প্রায় শ’দেড়েক ঘর আছে যাদের সন্তানরাও শিক্ষা বঞ্চিত। একটি প্রাথমিক জরিপ পরিচালনা করে দেখা গেছে এই জনপদে কমপক্ষে প্রায় ছয়-সাতশ শিশু আছে যারা স্কুলে যায় না। এই শিশুদের শিক্ষার প্রাথমিক স্তরের সাথে পরিচিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে ‘মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন’ এর যাত্রা শুরু হয়।
৪. স্কুলের উদ্যোক্তা জনাব মোঃ আখতারুজ্জামান ভূঁইয়া এবং জনাব মাহবুব আজাদ খান নিজস্ব প্রচেষ্টায় এবং লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় অধিবাসীদের সহায়তায় স্কুলটি গড়ে তুলেছেন।
প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা :৫. মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতনের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং উপদেষ্টা পরিষদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এ প্রতিষ্ঠানের কাজ পরিচালিত হবে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কার্যকরী ব্যবস্থাপনার জন্য ম্যানেজিং কমিটি সময়ে সময়ে নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হিসেবে এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাদান সম্বন্ধীয় ও প্রশাসনিক বিষয়াদির জন্য প্রধান শিক্ষক/অধ্যক্ষ দায়ী থাকবেন।
ম্যানেজিং কমিটির গঠন :
৬. প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা একটি পর্ষদের উপর ন্যস্ত থাকবে এবং এই পর্ষদকে ম্যানেজিং কমিটি নামে অভিহিত করা হবে।
প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ম্যানেজিং কমিটির উপর অর্পিত থাকবে। ম্যানেজিং কমিটির গঠন নিম্নরূপ :
(১৪ সদস্যের ম্যানেজিং কমিটি থাকবে। সভাপতি, সহসভাপতি, কোষাধ্যক্ষ এবং সদস্য-সচিব স্থানীয়ভাবে নির্বাচিত হবে। বাকি ১০ জন সদস্য পদ উন্মুক্ত থাকবে। ব্লগার বন্ধুদের মধ্য থেকে কেউ ম্যানেজিং কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে চাইলে নাম, বর্তমান কর্মস্থল, বর্তমান ঠিকানা, ই-মেইল, মোবাইল নাম্বার সহ ই-মেইল করুন
ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ ও পুনর্গঠন : ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ ০২ (দুই) বছর।
চলমান ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার একমাস আগেই নতুন ম্যানেজিং কমিটির পুনর্গঠন কার্যক্রম শেষ করতে হবে যাতে পূর্ববর্তী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন থেকেই নতুন কমিটি কার্য পরিচালনা শুরু করতে পারে।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য পদের অযোগ্যতা :
ক) বাংলাদেশের নাগরিক নন এমন কোন ব্যক্তি।
খ) যৌক্তিক বা সন্তোষজনক কারণ ছাড়া ম্যানেজিং কমিটির পর পর দুটি সভায় অনুপস্থিত থাকলে।
গ) অনৈতিক বা রাষ্ট্রবিরোধী কাজে জড়িত হলে।
উপরোল্লিখিত কারণে যে কোন সদস্যকে অপসারণের ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার থাকবে।
সাময়িক শূন্যতা
ম্যানেজিং কমিটির কোন সাময়িক শূন্যতা পদ শূন্য হওয়ার তারিখ থেকে এক মাসের মধ্যে পূরণ করা হবে। নতুনভাবে মনোনয়ন/নির্বাচনের মাধ্যমে শূন্য পদ পূরণ করা হবে। এভাবে মনোনীত/নির্বাচিত সদস্য ম্যানেজিং কমিটির অবশিষ্ট মেয়াদকালের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। উপযুক্ত সদস্য নির্বাচন করা না গেলে শূন্য পদটি শূন্য থেকে যাবে।
ম্যানেজিং কমিটির সভা
প্রতি বছরে ম্যানেজিং কমিটির অন্তত ৩ টি সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভাপতি এবং সহসভাপতির সাথে আলোচনার ভিত্তিতে সভার তারিখ নির্ধারিত হবে। সদস্য সচিব/নির্বাহী সচিবের মাধ্যমে সভার সাত দিন আগেই সভার আলোচ্যসূচি সংবলিত চিঠি, ই-মেইল, ভয়েজ মেসেজ সকল সদস্য বরাবর পৌঁছানো হবে। প্রতিষ্ঠানে বা সভাপতি/সহসভাপতি/উপদেষ্টা সদস্যদের যে কারও কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হতে পারে। ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমেও সভা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম পূর্ণ হবে।
সভাপতি/সহসভাপতি সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং কোন সিদ্ধান্তে পক্ষ-বিপক্ষে সমান সংখ্যক সদস্য ভোট দান করলে সভাপতি/সহসভাপতি অতিরিক্ত ভোট প্রদান করবেন। সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার সাত দিনের মধ্যে নির্বাহী সচিব/সদস্য সচিব, সভাপতি/সহসভাপতির দ্বারা স্বাক্ষর করিয়ে সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন করাবেন।
এছাড়াও গঠনতন্ত্রে -
নির্বাহী পরিষদ- ৭ সদস্য বিশিষ্ট (প্রয়োজনে বাড়ানো যাবে। স্কুল পরিচালনায় সরাসরি যুক্ত থাকতে পারবে এমন ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত হবে)
উপদেষ্টা পরিষদ- ১০১ সদস্য বিশিষ্ট (প্রয়োজনে বাড়ানো-কমানো যাবে। ব্লগার বন্ধুদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
)
অন্যান্য যে বিষয়গুলো থাকবে-ম্যানেজিং কমিটির ক্ষমতা ও দায়িত্ব
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সহসভাপতি, সদস্য-সচিব ও কোষাধ্যক্ষের ক্ষমতা ও কাজ
নির্বাহী কমিটির সভাপতি, সহসভাপতি, নির্বাহী সচিবের ক্ষমতা ও কাজ
উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের ক্ষমতা ও কাজ
প্রতিষ্ঠানের আয়ের উৎস
স্কুলের ইউনিফর্ম/পোশাক
শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা
শিক্ষার্থীদের সুবিধাদান ও অন্যান্য বিষয়
একাডেমিক কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনা
অভিভাবক-শিক্ষক সংযোগ
অর্থনৈতিক নিয়মকানুন
তহবিলের নিরাপত্তা
লিখিত দলিলসমূহের নিরাপত্তা
বাজেট এবং খরচ অনুমোদন
খরচের সীমা
ক্রয় নীতিমালা
আর্থিক অন্যান্য বিষয়াদি নিষ্পত্তি
গঠনতন্ত্রের উন্নয়ন
নতুন কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন হলে কিংবা কোন কিছু বাদ দিতে হলে দয়া করে আপনার সুচিন্তিত পরামর্শ দিন এবং মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতনের সাথে যুক্ত থাকুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।