আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপচে পড়া জীবনঃ ৬

দিলের দরজা ২৪/৭ খুইলা রাখি মাছি বসে মানুষ বসে না। মানুষ খালি উড়াল পারে! এক দিন আমি ও দিমু উড়াল, নিজের পায়ে নিজে মাইরা কুড়াল...
আমার ক্রেডিট কার্ড ঘষে মন্ট্রিয়লের এক গ্যাস ষ্টেশন থেকে বেশ কিছু ডলার উধাউ করে দিয়েছে চোরেরা। একটা চিঠি পাঠিয়েছে কার্ড কম্পানী, সইকরে ফ্যাক্স করতে বলেছে কানাডায়। কলাবাগান থেকে পান্থ পথ হয়ে ধানমন্ডি ৭ পর্য্যন্ত খুজ লাম কোথাথেকেও ফ্যাক্স করতে পারলাম না। এক যায়গায় তিরিশ টাকা মিনিট বলে কয়বার ট্রাই করে বলল যাবে না।

পরে সুন্দর বন কুরীয়ারের এক দোকানে গিয়ে শুনলাম ফ্যাক্স করার লোক একটু বাইরে আছে। আমি ও বাইরে দাড়ালাম, পাশেই বিশাল এক এপার্টমেন্ট টাওয়ার। হুশ করে এক দলা কফ আমার জিন্সের প্যান্টের বা পায়ের গোড়ালির কাছে লেপ্টে গেল। উপরের দিকে তাকিয়ে মনটা যার পর নাই খারাপ হয়ে গেল। একি তাজ্জব কান্ড! এই বিশাল ইটের ভাটার ভেতর থেকে কার যেন মনে হইল ওয়াক করিয়া এক দলা থুতু এমন ফেলে দিতে! সাতটার মধ্যে ভেবেছি বাংলা একাডেমিতে যাবো অপর বাস্তবের প্রকাশনায়, মনটা সত্যি সত্যি খারাপ হয়ে গেল।

এক পান সিগারেটের দোকান থেকে কাগজ চেয়ে নিয়ে পথের পাশে বসে বসে ঢাকার আসমান থেকে বর্ষিত এই কংক্রিট জাহান্নামের কফকাশ পরিস্কার করলাম। ফ্যাক্স অলা আইসা আয়েশ কইরা ফ্যাক্স মেশিনের প্লাগ লাগাইল, কাঁচের ঢাকনার ভেতর থেইকা ফ্যাক্স মেশিন বের করে স্টার্ট দিয়া কইল কই করবেন? আমি কইলাম কানাডায়। সে বলল মিনিট চল্লিশ ট্যাকা। আমি বললাম আরেক যায়গায় ত তিরিশ ট্যাকা কইল। ফ্যাক্স অলা ধমকের সুরে কইল তাইলে আরেক যায়গায় যান।

আমি মনের দুঃখে দুইশ টাকা দিয়ে পাঁচ মিনিট লাগিয়ে দুইটা পাতা পাঠালাম। ঠিক মত গেল কিনা বুঝতে পারি নাই। প্রিন্ট আউট যেটা দিল সে খানে যে যায়গায় পাঠাইলাম সেই যায়গার নাম্বার কোন উঠে নাই। কি তর্ক করব বুঝতে পারলাম না। দোকানি আমাকে কি কি সব অর্থহীন বোঝাচ্ছে, বেকুবের মত ঐখান থেকে বেরিয়ে এলাম।

আর ত পারি না এই ধুরন্দর শহরে... দুই টা রিক্সা পাল্টে ঢাকার অসহ্য জানজট ঠেলে মোটামুটি ঠিক সাতটার মধ্যেই বই মেলায় পৌছাতে পারলাম। নজরুল মঞ্চে মোড়ক খোলা হবে অপরবাস্তব ৩ এর। সবাই লোকাল টক কে লোকাল টক কে করছে, কৌশিক মশয় বক্তিমা দিচ্ছেন। আমি এমন একটা আনন্দ মুহুর্তের একটা সুন্দ ছবি তুলতে নজরুল মঞ্চের ঘেরায় দাড়িয়ে হাত যতটা উচু করা যায় তাই করে ছবি তুলবার চেষ্ট করছি। আমার পাশে শান্ত দাড়িয়ে ছিল।

ও আমাকে ইশারা দিয়ে দেখাল আমার বা কাধ বরাবর বটগাছের কোন এক বাসিন্দা হাগিয়া দিয়াছেন! এই শহরে এমন বিকেল আমার একার নয় আরো অনেকেরই হয়ত কাটে এই বলে মনকে শান্তনা দেবার একটু চেষ্টা করলাম। আজ বিকেলটা কোন ক্রমেই আর ভালো কাটল না।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।