দিলের দরজা ২৪/৭ খুইলা রাখি মাছি বসে মানুষ বসে না। মানুষ খালি উড়াল পারে! এক দিন আমি ও দিমু উড়াল, নিজের পায়ে নিজে মাইরা কুড়াল...
তখন রাত এগারোটা পয়ত্রিশ। বৃষ্টির রাত, রাস্তা ঘাট জন শূন্য হয়ে পড়বারই কথা। সলিমুল্লাহ রোডের এ মাথা ও মাথা প্রায় ফাঁকা। একটা রিক্সায় যাত্রী এক জন বসে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে, গলির এ মাথা ও মাথায় কোন বাহন নেই।
মানিক মিঞা এভিন্যূ পুরাটা পার হতে আজ নিশ্চয় ঝামেলা হবে!
ঐ খালি যাইব নাকি ভাই, মনিপুড়ি পাড়া? না যাবে না রিক্সা। আরে চলেননারে ভাই! না ফিরেও তাকাল না।
বৃষ্টির মিটার বেড়ে গেছে, ইশ! কোনার দোকানটায় সাটার টানল দোকানী সাথে আরেকজন, রাস্তায় আমি ছাড়া আরত কেউ নাই।
ঐ খালি।
ইশ পাটা ডেবেই গেল, মোজায় পানি ঢুকে গেছে।
যাইব নাকি মনিপুড়িপাড়া?
চল্লিশ ট্যাকা।
সীটে বসা প্যাসেঞ্জার ভাড়া গুনতে গুনতে বলে যায়, একবারে পঞ্চাশ টাকাই চাইয়া বইতা!
কি রে ভাই, রাস্তার এই মাথার থেইকা ঐ মাথা চল্লিশ ট্যাকা চান কোন বুঝে? বিশট্যাকার ভাড়া, ত্রিরিশ ট্যাকা চলেন।
আর পাঁটা ট্যাকা দিয়েন।
আবার পাঁচ ট্যাকা কিসের?
মানিক মিয়ার চেক বক্সটা পার হতেই পুলিশ গুলো কানি নজরে দেখছে। বারোটা বাজতেছে প্রায় পাড়ার গেইটা ত বারোটায় বন্ধ করে দেয়! ফোন আবার কে করল?
হ্যালো হ্যা আপু, পৌছাইতেছি।
এইত মানিক মিয়ার মাঝামাঝি।
সামনের সাদা প্রাইভেটটার পেছনের দরজাটা খোলা রাখছে কেন! সিম কার্ডটা খুইলা রাখা উচিত ছিল। ঐটা গেলে শেষ।
ভাইরে মহল্লার গেইটটা বন্ধ কইরা দিব।
পর্দাটা লই নাই, বৃষ্টির ঝাপটা লাগছে।
একটা কালো ক্যাব মোড় ঘুরতাছে,
রং সাইড দিয়া যানরে ভাই পরের গলি দিয়া।
গলির ভেতরে অন্ধকার, রাস্তাটাও সেইরকম। ঝাকি লাগলে শরীর লইড়া ওঠে। ডাইন দিকে যান। পাঁচটার থেইকা বারোটা পাক্কা সাত ঘন্টা, কামের মইধ্যে চার দিনের লাইগা ধান্দা একটা ফিট হইছে।
পয়সা বেশী না, তাও কানা মামাই ভালো। বাসায় গিয়াই ভাত খাইতে হবে খিদা লাগছে খুব।
ডাইনে রাখেন।
পকেটে হাত দিয়া কায়দা কইরা একটা এশ টাকার নোট নির্বচন কইরা বাইর করি।
চল্লিশ ট্যাকা রাখেন।
বুক পকেট থেকে পলিথিনে মোড়া টাকার থলিটা বের করে। ভীজে চুপসে গেছে, ফু দিয়ে খুলতে গিয়ে খক করে একটা কাশি দিল। দুইটা বিশ টাকা আর দুইটা দশ টাকার নোট ঠিক আছে কিনা দেখতে দেখতে হাটা দিলাম। এত দয়ালু হলে চলে না। এই শহরে আমারে কে কয় পয়শা দিয়া জিগায়! আমারে এমন হাতেমতাই হলে চলবে না।
জানি না কেন রাইত দুইটার সময় লোকটার জন্য চিন্তা হচ্ছে। কাশির ধরনটা সুবিধার ছিল না, এই বৃষ্টিতে আরো কয়টা ক্ষেপ মারতে হইব কে জানে? ষাটটা টাকা ভাংতি টেবিলের ওপর এখন পড়ে আছে। বাইরের বৃষ্টির আওয়াজটা যতই কানে আসছে খালি রিক্সাঅলার কথা মনে হচ্ছে। টাকা গুলোর দিকে তাকাতে অস্বস্তি লাগছে!
উপচে পড়া জীবন
ছবিঃ Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।