গলাবাজ আর সত্যিকারের লেখক এই ব্লগে টিকে থাকে, আমি কোনটাই না
তোমার শখ কি?
এ প্রশ্নটা খুব অহরহ করা হলেও যাকে করা হয় সে ঠিক বুঝে উঠতে পারেনা কোন শখের কথাটা বলবে। অনেক সময় নিজেই খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যায় নিজের শখ। আবার বেশিরভাগ সময়েই শখ গুলো খুব ক্ষণস্হায়ী হয়, তাই সেগুলো চলে গেলে আবেদন কমে আসে।
একবার খুব সখ হলো বাগান করার, বাসায় পাওয়া বিচিত্রার সব কাটিং যোগাড় করে অনেক খানি জমানো হলো। বাগানের কাজে হাত দেয়ার আগেই নিজেকে বেশ বিখ্যাত গোছের কিছু মনে হতে লাগলো।
একদিন স্কুল থেকে ফিরেই বলা নেই কওয়া নেই সামনে বেশ খানিকটা শুকনো খটখটে জায়গা ছোট্ট কোদাল দিয়ে কোপাকুপি শুরু করে দিলাম। কি বুনবো ভাবছি আর এ ঘর সে ঘর করতে করতে এক ঠোন্গা সরিষা পেলাম। সেগুলোই হলো আমার প্রথম চাষাবাদ।
স্ট্যাম্প জমানোর জন্য জান প্রাণ দিয়ে দিলাম একবার। যাকেই পাই পারলে প্রথমেই বলি, আপনার কাছে স্ট্যাম্প আছে? ভাই আপুকে বলি খামের ভিতরে করে যেন পাঠায়।
বিশেষ কৌশলে পানিতে চুবিয়ে খাম থেকে ওগুলো ছাড়ানো শিখলাম। শেখা হয়নি কেবল কিভাবে স্ট্যাম্প বদলা বদলি করতে হয়। আমার মাথায় তখন এতটুকু বিদ্যা হয়নি যে দুইটা করে একই স্ট্যাম্প থাকলেই কেবল বদলানো যায়। আমার এক চালাক বন্ধু এই সুযোগে আমার অনেক গুলো ওয়ান এন্ড অনলি পিস স্ট্যাম্প হাপিস করে দিলো।
ঘুড়ি জমানোর ইচ্ছা জাগলো একবার।
তাও আবার কেটে উড়ে আসা গুলো। কাজটা অতোটা সোজা না। কারণ যারা উড়ায় তারা ঘুড়ি কেটে যাওয়ার সাথে সাথে সেটাকে ওয়াচে রাখে, আর প্রায় সবাই গাছে ওঠার ও ওস্তাদ। আমি ছাদে বসে ঘুড়িগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতাম আর আশা করতাম কখন একটা দুটো গোত্তা খেয়ে ছাদেই পড়বে। অবশ্য এমন ভাবেই অনেকগুলো জমিয়েও ফেললাম।
তবে ছাদে বৈকালিক বাতাস খাওয়ার নাম করে যে ছেলে ঘুড়ি ওড়ানোর মতো ভয়ন্কর কাজে লিপ্ত এ খবর আমার আম্মাজান জানার পরে সেগুলো আমাকে রপ্তানী করতে হয়েছিলো।
স্টীকার নেশায় পেয়ে বসলো একবার। স্কুলের সামনের মজার খাবার বাদ দিয়ে নিত্য নতুন চকমকে ঝকঝকে স্টীকার কেনা শুরু হলো। ঐ কেনা পর্যন্তই অবশ্য কারণ বাসায় কোথাও লাগাতে গেলে নিজের নিরাপত্তার বিষয়টাও চলে আসে। পোলাপাইনের চাহিদা বুঝে স্কুলের হুজুর স্যার বইয়ের দোকান স্টীকারে বোঝাই করে ফেললো।
দুদিনেই আমার কাছে স্টীকার গোডাউন হয়ে গেলো। বন্ধুরা কাছে পিঠে ঘোরে, বদলাতে চায়। ততদিনে অবশ্য স্ট্যাম্পে ধরা খেয়ে বদলা বদলি করার নিয়ম শিখে গেছি।
স্কাউটিং করার ইচ্ছা জাগলো মনে। কি সুন্দর পোশাক, রুমালে পিন লাগানো থাকে, একটা ভাবই আলাদা।
স্কুলে একজন ভদ্রলোক এলেন। তিনি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেবেন। বেচারা পুরো জোকার, দেখলেই হাসি পায়। একটু পর পর বলছিলো, 'তোমাদের বুজতে অবে, স্কাউট সম্পূর্ণ আলেদা'। স্কাউটের প্রতিষ্টাতার ইয়া বড় নাম মুখস্হ করতে দিলো আর সারা বিকাল লেফট রাইট।
দুই বিকালেই যাবতীয় ভাব বাস্পীভূত।
ছবি কৃতজ্ঞতা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।