.
ঢাকা কলেক্টরেটের প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট মো:মফিজুর রহমান ২০০৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় রাহেলার মৃত্যু কালীন জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন । এবং তা ১১ সেপ্টেম্বর আদালতে দাখিল করা হয়। ব্যাক্তিগত কৌতুহল থেকে এই জবানবন্দিটি সংগ্রহ করার দীর্ঘ চেষ্টার পর আজ হাতে পেলাম। রাহেলার প্রতি মমতা প্রদর্শনের পাশাপাশি চাঞ্চল্যকর রাহেলা হত্যা মামলা সম্পর্কে অনেকে খুঁটি নাটি জানতে চান মনে হওয়ায় রাহেলার মৃত্যুকালিন জবানবন্দিটি এখানেও দিয়ে দিলাম।
মৃত্যৃকালীন ঘোষণা/জবানবন্দি
আমার নাম রাহেলা,(২২ বছর), স্বামী চাঁন মিয়া।
গ্রাম:ছায়াবিথি,বাড্ডা,সাভার। জাহাঙ্গীরের বাড়িতে ভাড়াটিয়া। ঘটনা গত রবিবার। দুপুর দেড়টা। আমি আর্মিদের চিড়িয়াখানা দেখতে গিয়েছিলাম আমার বান্ধবী মরিয়ম সাথে ছিল।
সকাল ৯টার সময় আমি সাভার বাস স্ট্যান্ডে যাই। ঐখানে বান্ধবী মরিয়ম আসে। মরিয়মসহ রিক্সায় চিড়িয়াখানায় যাই। চিড়িয়াখানায় বেড়ানো শেষে মরিয়ম চিড়িয়াখানা হতে বাসায় হলে যায়। আমি হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলাম।
চিড়িয়াখানা হতে একটু সামনে এগুলে লিটনের সাথে আমার দেখা হয়। লিটন আমাকে জিজ্ঞাসা করে ”ভাবি কোথায় যান?বাপের বাড়ি না শ্বশুড় বাড়ি?”আমি বলি শ্বশুড় বাড়ি যাবো। তখন লিটন বলে ”চলেন এক সঙ্গে যাই”। এরপর সে আমাকে এস এইচ হলের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইট দিয়ে ভেতরে নিয়ে যায়। আমি যেতে চাইনি।
লিটন আমাকে জোর করে ভেতরে নিয়ে যায়। এম এইচ হল সংলগ্ন ডোবার পাশে জঙ্গলে নিয়ে যায়। লিটন আমাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। আমি প্রচণ্ড ভাবে বাঁধা দেই। কিন্তু লিটন আমাকে জোর পূর্বক গলা চেপে ধরে ধর্ষণ করে।
ধর্ষণ করার পর লিটন আমাকে গলার বাম পাশে কোপ দেয়। আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়। ঐ সময় লিটন একাই ছিল। এরপর লিটন চলে যাওয়ার একটু পর ঘুরে এসে দেখতে এসেছিল আমি মরে গেছি কিনা। তখন সে আমার নাকের নথ ও গলার চেইন নিয়ে যায়।
আমি বিষয়টা বুঝতে পারছিলাম। কথা শুনতে পাচ্ছিলাম। আমি উপুড় হয়ে পড়ে ছিলাম। আমি মানুষজনকে ডাকাডাকি করেছি। কিন্তু কেউ কথা শুনে এগিয়ে আসেনি।
আমি উঠে দাঁড়াতে বা চলা ফেরা করতে পারছিলাম না। আজ ১/৯/০৪ তারিখ সকালে লিটনসহ আরো ৩/৪জন এসে আমার গায়ে আগুন ধরাতে চেষ্টা করে। আমি চেঁচিয়ে পানি খেতে চাই । ওরা আমার চুলে ও গায়ে আগুন ঘরাতে চেষ্টা করে। গায়ে আগুন দেয়।
এরপর তারা চলে যায়। লিটনের সাথে যারা ছিল আমি চিনতে পারিনি। আমি উপুড়স হয়ে থাকলেও কণ্ঠস্বর শুনে লিটনকে চিনতে পারি।
.. . রাহেলার জবানবন্ধি এপর্যন্তই।
এরপর মফিজুর রহমানের স্বাক্ষর ও ছোট একটু নোট।
সেখানে লেখা,পড়ে শোনালে সে শুদ্ধ বলে স্বীকার করে। কিন্তু মারাত্মক আহত থাকায় হাত নাড়াতে না পারায় স্বাক্ষর করতে পারেননা। এরপর নোটটি নিজের স্বাক্ষরে সত্যায়িত করেছেন মো:মফিজুর রহমান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।