হয়তো আমি কোন কিছু সম্পর্কে নিশ্চিত নই
আবেগ আর যুক্তি সবসময়ই হাত ধরে চলে পরস্পর। কোনো সন্দেহ নেই, কারো সাথে আলোচনার সময় আবেগটিকে কুঠুরিবদ্ধ রেখে যুক্তিমারফত আলোচনা চালিয়ে যেতে পারাটাই সবচাইতে উত্তম পন্থা। আগামী দিনগুলোতে রোবট সমাজে এই চর্চা চলবে হয়তো, কিন্তু মনুষ্য সমাজে আবেগ বাদ দিয়ে আলোচনা চালানো দুর্বিসহ।
মানুষের আবেগের পরিসীমা আছে, প্রত্যেকেই তার নিজস্ব বলয়ের আবেগ দ্বারা আবর্তিত হয়। যে শিক্ষার্থীকে কোনোদিন কোনো আন্দোলনে দেখা যায়নি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শামসুন্নাহার হলের পুলিশি হামলার ঘটনায় তাকে দেখা গেছে মিছিলের লাইনে- সামনের কাতারে।
অথচ এই একই শিক্ষার্থী এর আগ পর্যন্ত সবসময়ই সোচ্চার থেকেছে মিছিলের বিরুদ্ধে, মিটিং কালচারের বিরুদ্ধে। কারণ একটাই- এতে তার আবেগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার বোন আহত হয়েছে, তার প্রেমিকা রক্তাক্ত হয়েছে। কোনো ঘটনা যখন আবেগকে নাড়া দেয়, তখন সেটির প্রতি নিস্পৃহ থাকা যায় না।
আমাদের জাতীয় জীবনে সবচাইতে বড় আবেগের ঘটনা মুক্তিযুদ্ধ। যারা সে সময় জন্মায়নি, উত্তরাধিকার সূত্রে তাদের অধিকাংশেরও এটিই বড় আবেগীয় পূর্বপ্রজন্ম।
ফলে পূর্বপ্রজন্মের আবেগে যখন মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের হাত পড়ে, তখন তাদের নিজেদের সামাল দেওয়া কঠিন হয়। আবেগের সাথে যুক্তিকে বোধ করে সেই বিরুদ্ধ হাতকে সামাল দিতে হয়, কখনো মোলায়েমভাবে, কখনো কঠোরভাবে।
সা.ইন-এ চলছে এক অদ্ভুত অবস্থা! রাজাকারগোষ্ঠী দু'দিন পরপর একেকটি ইস্যু বের করে উত্যক্ত করা শুরু করে, আর সা.ইন কর্তৃপক্ষ এই ফাঁদে পা দেয়। কতো আর সহ্য করা যায়! নির্বোধদের অযৌক্তিক-পাগলীয়-অপরাধমূলক বক্তব্য শুনলে খুব ঠাণ্ডা মাথার মানুষদেরও মাঝে মাঝে মনে হয়- এদের সাথে যুক্তি দিয়ে কথা বলে লাভ নেই। অবশ্য মানুষের অপরিসীম ঘৃণার মাঝে যারা বেঁচে থাকে, তাদের দু'একটা গালি দিলেও লাভ নেই।
রাজাকার উপাধির পরও যাদের লজ্জ্বা হয় না, তাদেরকে স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে ধরা যায় না।
ফলে জন্মহীন এসব অমানুষ অন্যদেরকে বিরক্ত করতেই আনন্দ পায়; বুঝি তাদের এই আনন্দ একাত্তরে তাদের রাজাকার পিতাদের আনন্দের সমতুল্যই মনে করে। তাই দিনের পর দিন অপরিসীম উৎসাহে বিকৃত আনন্দ উপভোগ করতে থাকে। যন্ত্রণা আমাদের। ভদ্র (!) ভাষায় কথা বলতে হবে, তাদের উৎপাত সহ্য করতে হবে, না হলে তা সা.ইন-এর রুলস ব্রেক হয়ে যাবে! আমরা হয়ে যাবো ব্যান।
অথচ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সুস্পস্ট নীতিমালা থাকলে এবং সে অনুযায়ী মডারেশন থাকলে এই অবস্থার সৃষ্টি হতো না। মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়, কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করেই এদের সুযোগ দেয় না তো! কী জানি, হতেও পারে। হয়তো এটাও একটা ব্যবসা বাড়ানোর ধান্ধা, হয়তো কর্তৃপক্ষ অসহায়। কিন্তু যে প্রতিকার নিজের কাছে রয়েছে, সেখানে অসহায় হওয়াটাও অপরাধ।
তবে একজনকে ব্যান করলেই বাদবাকি সবাইকে লেখালেখি বন্ধ করতে হবে, এটার পক্ষে আমি নই।
কর্তৃপক্ষ ব্যান করলো একজনকে, আমরা সবাই নিজেরা নিজেদের ব্যান করলাম- জিতলো কারা? ওরা তো আমাদের বন্ধ করে রাখতেই চায়। আমরা কেন ওদেরকে এই সুযোগ দিচ্ছি? আত্মব্যান হওয়ার এই সংস্কৃতি বন্ধ করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবমাননাকর লেখা কীভাবে বন্ধ করা যায়, সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা বা লেখা আসা অনেক জরুরি।
(নাজিদ উদদীনের লেখায় প্রকাশিত মন্তব্যটি কিছুটা যোজন-বিয়োজন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আবেগ বহন করার জন্য যারা অতীতে ব্যান হয়েছে-বর্তমানে ব্যান হচ্ছে-ভবিষ্যতে ব্যান হবে, তাদের প্রতি সহমত প্রকাশে এই পোস্ট। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।