বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ঋণের সুদ মওকুফ এবং মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা দিতে সরকার এই তহবিল গঠন করতে চেয়েছে। ”
পুঁজিবাজারের জন্য এর আগে সরকারি উদ্যোগে বড় অংকের মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও বড় অংকের অর্থ নিয়ে ‘পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ গঠনের প্রক্রিয়া এই প্রথম।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকর পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই তহবিলে ৯০০ কোটি টাকা দেয়ার একটি প্রস্তাব সরকারকে দেবে।
“তবে এই তহবিল গঠন বা পুনঃঅর্থায়ন স্কিম এখনও চূড়ান্ত কিছু নয়।
সরকার রাজি হলেই এটা কার্যকর হবে”, বলেন ডেপুটি গভর্নর।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি তুলে ধরেন এস কে সুর চৌধুরী এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ২০১০ ও ২০১১ সালে পুঁজিবাজারে ধসের কারণে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলো লোকসানে পড়ে। এসব প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের যে ঋণ দিয়েছে, তার সুদের ৫০ শতাংশ মওকুফ এবং বাকি ৫০ শতাংশ ব্লক একাউন্টে রেখে ১০ শতাংশ সুদে ঋণ পুনঃতফসিল করে আদায়ের পরামর্শ দেয় সরকার।
এজন্য প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের কাছে একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল চায়।
আর সরকার বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে সুপারিশ দিতে বলে।
সুর চৌধুরী বলেন, “আমরা সরকারের প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে দেখেছি, বাংলাদেশ ব্যাংক এ ধরনের তহবিল পরিচালনা করলে বাজারে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১ টাকা বের হলে বাজারে তার মূল্য ৩ টাকা হয়।
“এজন্য আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লভ্যাংশের যে টাকা প্রতি বছর সরকারকে দেই, সেই অর্থ থেকে ৯০০ কোটি টাকা এই তহবিলের জন্য দেয়া হবে। সরকার তার বাজেট থেকে এই অর্থ বরাদ্দ দেবে।
”
ডেপুটি গভর্নর জানান, তহবিলের যোগান দিলেও এর পরিচালনার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পৃক্ত হবে না। সরকার আইসিবি ও বিএসইসির মাধ্যমে এটি পরিচালনা করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরবর্তী মুদ্রানীতিতে বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
২০১০ সাল থেকে পুঁজি বাজারে ব্যাপক উত্থানপতন শুরু হয়। পরের বছর তা বড় ধরনের ধসের রূপ নেয়।
২০১২ সালের মার্চে গড় লেনদেন হাজার কোটি টাকায় থাকলেও বছর শেষে তা তিনশ কোটি টাকায় নেমে আস। এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ২৮ হাজার কোটি টাকা।
লোকসানের চাপে গত বছর প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ক্ষদ্র বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়ে যান।
এই হতাশা কাটাতে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) ক্যাপিটাল মার্কেট মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন করে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য প্যাকেজ বাস্তবায়ন শুরু হয়।
পরিবর্তন করা হয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচকও ।
অবশ্য সরকারের এতো উদ্যোগের পরও আস্থা ফেরেনি পুঁজিবাজারে। গড় লেনদেন এখনো পাঁচশ কোটি টাকার নিচে।
দশম সংসদ নির্বাচনের আর সাত মাস বাকি থাকতে এই ‘পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ গঠনের পেছনে কোনো ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে এস কে সুর চৌধুরী বলেন, “সরকার প্রথম বছরেও জনতুষ্টির কাজ করে, শেষ বছরেও করে। অতএব আমাদের বিবেচনায় বিষয়টি রাজনৈতিক বিবেচনায় করা হয়নি।
”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।