আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ত্রিভুজের ১৮০ ডিগ্রি, চতুরভুজের ৩৬০ ডিগ্রি আর নিধিরামের ০ ডিগ্রি



দোস্ত হাসিব একটা প্রশ্ন করসিল "মাগ" আর মহিলা শব্দের মধ্যে অশ্লিল কোনটা। অথবা, 'ছেরি' শব্দটা ও 'মেয়ে' শব্দটার পার্থক্য কি? 'শিল্পসুষমা'র মানদন্ডে এগুলার অবস্থান কোথায় ? জবাবটা হাসিব পায়নাই, কারন এ ব্লগে কোন কারনে পয়েন্টেড কোয়েস্চেন পড়লে সকলে ইদার বাথরুমে জরুরি কাজ পড়ে না হলে টাইম শেষ হইয়া যায়। যেহেতু পায় নাই তাই জবাবটা হাসিবই দিসে, "লেখার সময় এই শব্দগুলান ব্যবহার করি তাহলে কি সেইটারে কি সাহিত্য বলবেন?, নাকি ভালগারিজম? নাকি অশ্লিলতা বলবেন? আমার পুর্বপুরুষ গাওগেরামে যেই ভাষা বলতো (মানে ঐ অঞ্চলে যেইটা প্রমিত) সেই ভাষায় লেখার রাইট নিশ্চয়ই আমার আছে । যদি ইন্টারন্যাশনাল এটিকেটের সাথে ঐগুলান না মিলে তাইলে কি আমাগো গাওগেরামের পূর্বপুরুষেগো সমাজচ্যুত ঘোষণা করবেন। " বন্ধুবর অমিত মিয়া এরপরে কইসেন আমরা কেন সব কিছুতে শ্লীলতা বা অশ্লীলতা খুজতে যামু- আমগো এ চিন্তাধারা কি মুক্ত চিন্তার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবনা।

আর ১৮০ ডিগ্রি বা ৩৬০ ডিগ্রি মতাদর্শ অনূযায়ী সুষমামন্ডিত শিল্প করিতে গেলে অজন্তা, কোণার্কের মূর্তীগুলোর গায়ে বোরখা পরাইয়া নোটিস লাগাইয়া দিতে হবে এই মর্মে যে "এখানে কি আছে বুঝিয়া লউন"। ব্রেইনিয়াক, যার লেখার সাথে পরিচয় নাই, তিনি বলিয়াছেন, লেখার ক্ষেত্রে টার্গেট অডিয়েন্সের উপর নির্ভর করে সেটাকে শ্লীল না অশ্লীল বলা হবে, আমার তাই ধারণা, কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের এবং প্রাপ্তমনস্কদের জন্য বললে সেখানে অশ্লীলতা অভিযোগ হয় কীভাবে? এইটাতো বুঝঈ যায় যে সেখানে 'অশ্লীলতা' থাকবে, তারপরে কি 'অশ্লীলতার' মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে? আপনার খারাপ লাগলে পড়বেন না। পাবলিক ন্যুইসেন্স এ্যাক্ট তো এইজন্যই যে এক্ষেত্রে মানুষের চয়েস করার উপায় থাকছে না, তাকে দেখতেই হচ্ছে, এখানে তো সেরকম কিছু না। আরিফুল ইসলাম তুহিন যার সাথে দা কুমড়া সম্পর্ক আমার বেশীর ভাগ সময়ে বলেছেম যে যৌনতাকে ঘিরে শালীনতার প্রশ্ন অতি হাস্যকর এবং গতশতকীয়!জয়েসের ইউলিসিস যা কি না গত শতকের সেরা উপন্যাস হিসাবে বিবেচিত হয় তাও নিষিদ্ধ ছিলো। শার্ল বোদেলেয়ার এর প্রথম কাব্য(ক্লেদজ কুসুম) এর জন্যে তাকে আদালতের মুখ দেখতে হয়েছিল।

জীবন একটি পরিপূর্ন প্যাকেজ,এখানে অশালীনতার কোনও সার্বজনীন সংজ্ঞা থাকার কথা নয়। জীবনানন্দের "অন্ধকার" পড়েছেন?অশালীন মনে হতে পারে রক্ষনশীলদের কাছে। অশালীনতার সংজ্ঞা অনেকটাই ব্যাক্তিনির্ভর এবং পারিপার্শিকতার উপর নির্ভরশীল। এ প্রসঙ্গে একটা কথা বলা যায় সাহিত্যের মূল্যবিচার শালীনতা দিয়ে হয় না,মননশীলতা দিয়ে হয়। পর্নোগ্রাফী সাহিত্য নয় কারন তা মননশীলতাহীন।

বিতর্কে কাম নাই আমার আমি শুধু বলতে পারি। আমি ১৮০ ডিগ্রি বা ৩৬০ ডিগ্রির গদ্য আর পদ্যতে বিশ্বাসি না। মুক্ত চিন্তা মুক্ত বাজারে বিশ্বাসি। বাজারে যদি চাহিদা থাকে তাহলে যোগান থাকবে না হলে আমার সাহিত্যর কারবার উল্টাবে। শালীনতার সিলিং আর ফ্লোরে আমার বিশ্বাস নাই কারন তা সাহিত্যর কালোবাজার বানায়, মুক্ত চিন্তাকে বাধাগ্রস্ত করে সর্বোপরি আমাদের কে পুরানো ছাচে চিন্তা করতে শেখায়।

যারা শালীনতার সিলিং আর ফ্লোরে বিশ্বাসী, তাদের কে সালাম, আপনার ত্রিভুজের ১৮০ ডিগ্রি আর চতুরভুজের ৩৬০ ডিগ্রি করেন, আমারে আমার ০ ডিগ্রিতেও থাকতে দেন কারন। সব কিছুর শুরু শুন্যতে আর শেষ অসীম।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.