আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ত্রিভুজের "ছাগু" হয়ে উঠা (সম্ভাব্য শেষ পর্ব - প্রথম অংশ)

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি

পূর্বসূত্রঃ- অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন এ বলে যে “ত্রিভুজ”কে বেশী পাত্তা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টা আমি একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখি। বাংলাদেশের সর্বত্র যেখানে মুক্তিযুদ্ধের চিহ্ন ছড়িয়ে আছে। দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, মানুষের জীবন যাপনে যেখানে মুক্তিযুদ্ধ দৃশ্যমান - সেখানে একজন টিনএজার কিভাবে শিবিরের অনুসারী হয় - কিভাবে রাজাকারদর্শনকে জীবনের দর্শন হিসাবে গ্রহন করে - সেটা জানার একটা জিজ্ঞাসা কাজ করছিল মনে। পেলাম ত্রিভুজকে।

আশরাফ বা অন্যান্যদের নেড়ী কুত্তার মতো মাঝে সাজে একটা ব্যাক-কিক দিয়ে শান্ত করা যায় - কিন্তু ত্রিভুজরা সেই গোত্রে পড়ে না। ছাত্রজীবনে এক সহপাঠিকে দেখেছিলাম - কিভাবে ধীরে ধীরে রাজাকারে মেটাফরমিস হয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকেই “ত্রিভুজের ছাগু হয়ে উঠা” লেখার শুরু। শুরু করি ত্রিভূজের একটা বক্তব্য দিয়ে - “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিক্রি করে এক শ্রেণীর মানুষ ক্ষমতায় যাওয়াসহ বিভিন্ন ধান্ধাবাজী করতে দেখে মুক্তিযুদ্ধের সত্যেকার ইতিহাস জানার ব্যপারে আগ্রহী হয়েছিলাম। সেই লক্ষ্যে যখন ইতিহাসের বইপত্র চষে বেড়াচ্ছি, তখনই একদিন আশরাফ রহমান নামের এক ব্লগার এমন কিছু তথ্য প্রকাশ করলেন, যা আমার জানা ইতিহাসের পুরো বিপরীত অবস্থানে দেখতে পেলাম”।

" লক্ষ্য করে দেখুন - ব্লগে এমনকি একজনও আছে যে বলেছে যে - অমুক দলকে ভোট দিন কারন তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। বলা হচ্ছে প্রচৃর বইপত্র চষে বেড়িয়েছেন কিন্তু কিসের আশায়, (মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কি চষে বেড়ানোর মতো পুরোনো ইতিহাস?)- অবশেষে “আশরাফ”এর ব্লগ থেকে কিছু জানলেন। এখানে লক্ষ্যনীয় যে ত্রিভুজ প্রচলিত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে “ধান্ধাবাজি” হিসাবে বিবেচনা করেই নতুন কিছু খুজঁছিলেন এবং পেয়েছে এক ব্লগারে থেকে। এটা হলো একটা চরম মিথ্যাচার। মিথ্যাকথা কত সুন্দর করে বলতে হয় - ছেলেটা সেটা রপ্ত করেছে সুচারুভাবে।

আশরাফ যে কথাগুলো বলেছে - তা বিগত ৩০ বছর যাবত সংগ্রাম, ইনকিলাব এবং বিটিভিতে প্রচারিত হয়েছে বহুবার। ড. আফতাব আহম্মেদ. এরশাদুল বারীরা থেকে থেকে ইতিহাস নিয়ে এই বিপরীত প্রচার চালিয়েছেন। এখানে পরিষ্কার যে - ত্রিভুজ মিথ্যা বলেছে - হয় সে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন পড়াশুনা করেনি অথবা এই বিপরীত বিষয়গুলো জানতো - আশরাফের কাধেঁ বন্দুক রেখে একটা সুবিধা নেবার চেষ্টা করছে। এবার আসা যাক - জামাতের ক্যাডার আশরাফ কি তথ্য দিয়ে তার মনোচক্ষু খুলে দিয়েছে বলে দাবী করা হয়েছে তার একটা বিষয়ে। আশরাফ বলছে - “সত্যি বলতে কী, শেখ মুজিব কখনও বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি”।

এই থিয়োরীএ পক্ষে সে যে লোকগুলোর বক্তব্য যোগার করেছে তারা হলো - ১) আওয়ামীলীগ নেতা এম.এ.মোহাইমেন (এটা উনার মনে হয়েছে - অর্থাৎ একটা থিয়োরী এবং সেটা প্রমান করার প্রয়োজন মনে করেননি লেখক) ২) মতিউর রহমান রেন্টু (এই লেখকের বিষয়ে যা তথ্য পাওয়া যা - মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিষয়ে তার বক্তব্য উপস্থাপন করা আর তসলিমা নাসরিনের কাছ থেকে মুসলমানদের ইসলাম শেখার কথা বলা সমান) ৩) ইন্দিরা গান্ধী ( সেটার কনটেক্স বিবেচনায় নিলে বুঝা যাবে কেন মিসেস গান্ধী এই কথা বলেছিলেন) এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, ত্রিভুজকে কষ্ট করে কেন এই রেফারেন্স যোগাড় করতে হলো। কারন তার বিশ্বাসটাকে প্রতিষ্ঠিত করা জরুরী ছিল। এই বিষয়ে পরে আসছি। একটা প্রাসংগিক কথা বলা দরকার - আমেরিকার ইতিহাসবিদ হাওয়ার্ড জীনের জনপ্রিয় “পিপলস হিস্টোরী” কনসেপ্ট থেকে বলা যায় - প্রকৃত ইতিহাস পাওয়ার জন্যে সেই সময়কালের জনমানুষের বক্তব্য ও পারিপার্শিক অবস্থাকেই বেশী গুরুত্ব দিলে প্রকৃত ইতিহাস জানা যাবে। আমরা যদি ১৯৭১ এর ইতিহাস দেখতে চাই আমাদেরকে সেই সময়ে গিয়ে দেখতে হবে - সেই সময়ের সাধারন মানুষ কি করছিলো।

শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এবং তাকে ক্ষমতা দেওয়া নিয়ে ইয়াহিয়া তাল বাহানা করছিলো। বিপুল ভোটে নির্বাচিত শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রীত্ব না দেবার পক্ষে যুক্তি খুঁজছিলো পাকিস্থানী সামরিক সরকার। সেই সময় সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষনা দিয়ে আইন-অমন্য করার মতো রিস্ক নেওয়াটা যুক্তিসংগত ছিল না, সেটা একজন বুদ্ধিমান মানুষের জন্যে তেমন গবেষনার বিষয় নয়। উনি বাংলাদেশে স্বাধীনতায় বিশ্বাস করতেন কিনা সেই বিষয়ে “পিপলস হিস্টোরী” কি বলে? ৭ই মার্চ ১৯৭১ সালে রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে শেখ মুজিবুর রহমানের উচ্চরিত শব্দগুলো - “এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম ...” এই কথা শুনেনি এমন মানুষ এখনও বাংলাদেশে আছে কি? এখন আমাদের কাছে একদিকে লক্ষ মানুষের সামনে উচ্চারিত “স্বাধীনতার সংগ্রাম” কথাগুলো গ্রহন যোগ্য না রেন্টু নামের অখ্যাত এক বটতলার লেখকের থিয়োরী বেশী গ্রহন যোগ্য হবে? সেটা বিবেচনার দাবী রাখে - অবশ্যই শেখ মুজিবকে যারা বিতর্কিত করতে চান তাদের জন্যে খড়কূটোর মতো রেন্টর ইতিহাসই বেশ মূল্যবান সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হবে সন্দেহ নেই। (পরের অংশ দেখুন..)


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.