তবে এই পরিকল্পনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে প্রয়োজন হলে সিরিয়ায় হামলা চালানোর সিদ্ধান্তে সমর্থন দেয়ার জন্য মার্কিনিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক টেলিভিশন ভাষণে ওবামা এসব কথা বলেন।
ভাষণে, সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর বিরুদ্ধে মার্কিন জনমতের অবস্থান ও কংগ্রেসের সম্ভাব্য বিরোধিতার মুখে নিজের অবস্থান থেকে সরে, রাশিয়ার প্রস্তাব মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ওবামা বলেন, “সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের রাসায়নিক অস্ত্র আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণে তুলে দেয়ার ব্যাপারে রুশ প্রস্তাব সিরিয়ায় সীমিত আকারের হামলা চালানোর বিবেচনা বাদ দেয়ার সুযোগ তৈরি করেছে। ”
“গত কয়েকদিনে আমরা আশাব্যঞ্জক কিছু সম্ভাবনা লক্ষ্য করেছি,” হোয়াইট হাউস থেকে দেয়া ভাষণে বলেন তিনি।
ভাষণে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সম্ভাব্য মার্কিন হস্তক্ষেপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরে এর সঙ্গে মার্কিন স্বার্থ কিভাবে জড়িত তারও পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি প্রয়োগের সিদ্ধান্তে মার্কিন কংগ্রেসের ভোটাভুটি স্থগিত রাখার জন্যও বলেন তিনি।
তিনি বলেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের ও অন্যান্য শক্তিগুলোর যুদ্ধজাহাজ সাড়া দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে।
“ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা ব্যর্থ হলে, আসাদ সরকার দেখবে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার না করার কোনো কারণ নেই। এভাবে একবার শুরু হলে অন্যান্য স্বৈরাচারী সরকারও রাসায়নিক অস্ত্রের মালিক হতে তা ব্যবহার করতে দ্বিতীয়বার ভাববে না।
”
১৬ মিনিটের এই বক্তৃতায় নিজের সিরীয় নীতি নিয়ে ওবামা এ পর্যন্ত সবচেয়ে স্পষ্ট ও যুক্তিযুক্ত বক্তব্য দিয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অগাস্টে নিজ নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রেসিডেন্ট আসাদকে দায়ী করে ওয়াশিংটন। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে সিরিয়ায় সীমিত পরিসরে সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেন ওবামা।
কিন্তু সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানের বিরুদ্ধে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের বিরোধিতা ও নিজ দেশের বিরুদ্ধ জনমতের চাপে এ বিষয়ে কংগ্রেসের সমর্থন কামনা করেন ওবামা। কিন্তু কংগ্রেসের ভোটেও তিনি হামলার বিষয়ে সমর্থন পাবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে রাশিয়ার প্রস্তাব তাকে নিঃশ্বাস নেয়ার মতো কিছুটা সুযোগ তৈরি করে দেয়।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার হুমকির মুখে ও হামলা হলে গৃহযুদ্ধের ভারসাম্য বিদ্রোহীদের পক্ষে চলে যাবে এমন সম্ভাবনার মুখে রাসায়নিক অস্ত্র আন্তর্জাতিক মহলের হাতে তুলে দিতে রুশ প্রস্তাব মঙ্গলবার সকালেই মেনে নেয় আসাদ সরকার।
রাশিয়ার প্রস্তাব সিরিয়া কতোটা পালন করবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও রাশিয়া সিরিয়ার শক্তিশালী মিত্র হওয়ায় রাশিয়ার কথা আসাদ শুনবেন বলেই মনে করেন ওবামা।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য কোনো সময়সীমা নির্ধারণ না করে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ত্যাগে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।