আমাদের সমাজে কাজের ছেলেমেয়েদের কোন সম্মান নেই বললেই চলে। উপরন্তু বিভিন্নভাবে চলে নির্যাতন। পত্রিকায় প্রায় কাজের ছেলেমেয়েদের উপর নির্যাতনের খবর আসে। মাঝে মাঝে নির্যাতনের এমনসব ছবিও আসে যা দেখ আঁতকে উঠি।
আমাদের বাসায় যত কাজের ছেলেমেয়ে আসে সবাইকে মা সুনসান করে রাখে।
সবাইকে খাটেই ঘুমুতে দেয়া হয়। এমনকি মেয়ে হলে, বাসায় বাবা না থাকলে মার সাথে ঘুমায়। ছেলেরা অধিকাংশ সময়ে আমার সাথে ঘুমায়। কাজের ছেলে মেয়েদের জন্য এতো বদান্যতা পছন্দ করেন না আমাদের বাড়ীওয়ালা আপা। উনার ৬ বছরের পিচ্চি মেয়েটা আমাদের বাসার কাজের মেয়েকে ডাইনিং টেবিলে বসে খেতে দেখে বলে উঠে, "এই তুই ডাইনিং এ খাস কেন? নীচে বসে খা।
"
বাড়ীওয়ালা আপা তার কাজের মেয়েদের সাথে কেমন ব্যবহার করেন তাতো বুঝা যাচ্ছে তার নিজের ৬ বছরের মেয়ের ব্যবহারের মাধ্যমেই। খাবার দাবার তো তাদের জন্য আলাদা না হলেও ভাল খাবারের কিঞ্চিতই তারা পেয়ে থাকে। রান্নাঘরই হচ্ছে তাদের থাকার ঘর। এগুলো ছাড়াও অনেক বঞ্চনাতো আছেই। কিন্তু নিজের কাজের মেয়েদের সাথে যা করেননা কেন আমাদের কাজের মেয়েকে তিনি যথেষ্ঠ সম্মান করেন।
একদিন রাতে আপার বাসায় অনেক মেহমান ছিল। আমাদের কাজের মেয়েটিও উনার বাসায় ছিল। অনেক রাত পর্যন্ত কাজ শেষ না হওয়ায় মেয়েটি সে বাসাতেই ঘুমায়। সকালে যখন বাসায় আসে তখন মা ওকে জিজ্ঞাসা করেছিল, তুই কোথায় ঘুমিয়েছিস? মেয়েটির উত্তরে মা আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল। বাড়ীওয়ালা আপা ওকে উনার সাথে নিজের খাটেই ঘুমাতে দিয়েছেন।
এটা কি কোন বৈপরিত্য? কিছুটা বৈপরিত্য হলেও, আসলে আমাদের ব্যবহার ও সম্মানের কারণেই বাড়ীওয়ালা আপা আমাদের কাজের মেয়েটিকে সম্মান দিতে বাধ্য হয়েছেন। আসুন, আমরা সবাই বাসার কাজের ছেলেমেয়েদের সাথে ভাল ব্যবহার করি। তাদের প্রতি সদয় হই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।