হঠাৎ শুন্যতা ...................
আমার প্রথম হলে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা হয় ইন্ডিয়া তে। তখন আমি বেশ ছোটো। খেয়াল আছে, সিনেমাটি ছিলো অমিতাভ বচ্চনের। বাংলাদেশে প্রথম হলে ঢুকি টারমিনেটর টু দেখতে। এরপর কিছু সিনেমা দেখা হলেও চখে আটকে আছে গৌতমের ছবি, সত্যজিৎ এর “অরণ্যের দিনরাত্রী”-র সিকুয়্যাল “আবার অরণ্যে”-তে।
প্রকৃতীর ড্রামাটিক পরিবেশ এর সাথে কছু মানষের পিকনিক ও কিছু এ্যাডভেঞ্চার, কিছু অতীত স্মৃতী সব মিলিয়ে পুরো সময় মনযোগ ধরে রাখে।
বাংলাদেশের নতুন সিনেমার মাঝে দেখা হয়েছে শশুর বাড়ী জীন্দাবাদ, ব্যাচেলর, জয়যাত্রা এবং হালে দারুচিনি দিপ। তবে শেষ তিন টি সিনেমা ঘরেবসে টিভিতে দেখা।
শশুর বাড়ী জীন্দাবাদ হল দেবাশিস নির্মীত এফডিসি ট্রেন্ডের কমিক মেকিং। একদমই হাস্য রসাত্মক।
ফলে কোন গভির আঁতলামির জায়গা এখানে নাই।
ব্যাচেলরের নির্মান করেছেন ফারুকী। বলা যায় একটু নতুন ডাইমেন্সন আনা হল বাংলা সিনেমা জগতে। যথেষ্টো আদ্রিত হল ছাত্র ও যুব মহলে। পশ্চীমবঙ্গতেও সাড়া ফেললো এটি।
আরবান কথ্য ভাষায় সংলাপ নতুন একটি মাত্রা পেল। যদিও এটি নিয়ে বিতর্কও কম নয়।
তৌকির নির্মীত জয়যাত্রা সাধীনতা যুদ্ধ কেন্দ্রিক একটি ছবি। একটি নৌকায় করে কিছু বিভিন্ন ধর্মাবলম্বি মানুষ ও পরিবার মুক্তাঞ্চলের খোঁজে নদী পথে পরিভ্রমন করে চলেছেন।
ছবিটির ক্যামেরার কাজ উন্নত মানের হলেও শিল্প নির্দেশনায় পরিপক্কতার অভাব বোধ হয়।
বিশেষ করে গেরিলা যুদ্ধের চিত্রায়ন টি একেবারে ট্রেডিসনাল এফডিসি মানের হয়েছে। তবু তৌকির এর প্রথম নির্দেশনা হিসেবে খারাপ ছিলনা। যদিও তাঁর মত মানুষের নিকট আমাদের প্রত্যাশা ঢের বেশি ছিল।
অবশেষে কিছুদিন আগে মুক্তি পেল তৌকিরের দারুচিনি দিপ। হুমায়ুন আহাম্মেদের একটি বহুল পঠিত বই।
তরুন কিছু ছেলে-মেয়ের সেইন্টমার্টিন দিপে ঘুরতে যাবার গল্প। যাদের জীবনযাত্রা বিভিন্ন সামাজিক অবস্থানে। বিভিন্ন ব্যাক্তিগত ও দলগত চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে তারা রওনা হয় সপ্নের প্রবাল দিপ...দারুচিনি দিপ... সেইন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে। তৌকির সকল তাবড়- তাবড় অভিনেতাদের নিয়েছেন সিনেমাটি তৈরী করতে। যথেষ্ঠ পরিমানে আউট ডোর শুটিং ছিলো।
কিন্তু তার পরও আমার কাছে মুল গল্প থেকে সিনেমাটি অনেক বেশি দুরের মনে হয়েছে। মনে হয়েছে উপযুক্ত অভিনেতা উপযুক্ত চরিত্রটি পাননি। ফলে ঠিক যেন প্রানবন্ত ছিলোনা তাদের অভিনয়। বানিজ্যিক দিকটি খেয়াল রেখে কিছু মডেল অভিনেত্রী আনা হয়েছিল ফলে অভিনয়ের দিকটি ছিল একদম কাঁচা । অপর দিকে সম্পর্ক বিহীন ভাবে নাচ-গান এফডিসির কথা মনে করে দিয়েছে।
রবীন্দ্র- নজরুল এর গানের চিত্রায়ন বড়ই ঠূনকো লেগেছে। এবং বলা যায়, শিল্পোনির্দেশনা ও চিত্রায়ন জয়যাত্রার বিপরীত মূখী। নির্দেশক এই সিনেমার মাধ্যমে তার অভিঙ্গতার গ্রাফের অধঃগতী টানলেন। সিনেমাটির শেষে বলতেই হল... হায় তৌকির।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।