আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কৃষ্ণচূড়া



কৃষ্ণচূড়া ভালোলাগে। অসম্ভব ভালো লাগে। এ ভালোলাগার কোন শেষ নেই। কেন ভালো লাগে আমি জানি না। আমার কাছে কোন ব্যাখ্যা নেই।

এর একটা কারণ হতে পারে আমাদের বাড়িতে কৃষ্ণচূড়ার গাছ ছিল। আমি ছোট থেকেই অবাক বিস্ময়ে কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখতাম। আমাদের বাড়িতে আরোও অনেক ফুল গাছ ছিল। ওই সব ফুল আমাকে টানতো না। যখন গ্রীস্মের এ সময়টাতে কৃষ্ণচূড়া ফুটতো।

গোটা পাড়ায় আমাদের বাড়িটা রাস্তা থেকেই চোখে পড়তো। কারণ কৃষ্ণচূড়া মাথা উচু করে উকি দিচ্ছে। তখন অবশ্য তখন এতো দালান কোঠা হয়নি। ফলে রাস্তা থেকে সহজেই বাড়িটা দেখা যেত। কেউ যদি জিজ্ঞস করতো- তুমি কোন বাড়ির ছেলে? আমি হাত উচিয়ে দেখাতাম-- ওই যে লাল লাল ফুল ফুটে আছে-- আমাদের বাসা।

আমি কৃষ্ণচূড়া দেখতাম। ভর দুপুরে ঝা ঝা রোদ কৃষ্ণচূড়ার নিচে দাড়িয়ে থাকতাম। এটাই আমার ভালো লাগতো। অবশ্য মাঝে মাঝ ভয় পেতাম। ভর দুপুর ছেলেকে ঘরে আনার জন্য আমার মা কৌশল করে বলতেন, ওই গাছে ভূত থাকে।

এ কারণেই অল্পস্বল্প ভয়। এইচএসসি পাশের পর বাড়ি ছাড়লাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে উঠলাম। শীতের সময়। সেবার প্রচণ্ড শীত পড়েছিল ক্যাম্পাসে।

বোধকরি সারা দেশেই। সারাদিন হলেই থাকি। বাইরে বের হলেও রীতিমতো গরম বস্ত্রের বস্তা পড়ে ঘুরাফেরা করি। মাফলার, টুপি দিয়ে জড়িয়ে রাখি নাক কান গলা। কোথায় কি? কোন গাছ দেখার সুযোগ হয়নি।

নতুন জায়গা। নতুন বন্ধু। নতুন পরিবেশ। সারাদিন ধুন্ধুমার আড্ডা। হঠাৎ গ্রীস্মে আবিস্কার করলাম ক্যাম্পাসের উত্তর দিকে লালের সমারোহ।

এ কি! কৃষ্ণচূড়া গাছ। আমি আবারও কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখি। দুপুর বেলায় গাছের নিচ ধরে সোজা উত্তর দিকে হাটা দিই। একা একাই। মাথার ওপরে লাল লাল কৃষ্ণচূড়া।

প্রখর রৌদ্র। গরমে গা ভিজে যায়। আমার কাছে অন্যরকম ভালো লাগা। এখন চাকরির কারণে ঢাকায় থাকি। এসময়টাতে রাজধানী বিভিন্ন পথে পাশে কৃষ্ণচূড়া চোখে পড়ে।

প্রকৃতিতে এখন কৃষ্ণচূড়ার আগুণ লেগেছে। আমি দেখি। প্রকৃতির আগুণ দেখি। মাঝে মধ্যে সুযোগ পেলে নিচে দাড়িয়েও যাই। অনেকেই হয়তবা ভাবে ওই ব্যাটা ওখানে কি করে।

এই গরমে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।