আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

=পরবাসী মননে শান্তি-স্বপ্ন-বাস্তবতা (২)

কাব্য-দিনের কথাঃ স্পর্শের আগুনে! অন্যদিগন্ত: www.fazleelahi.com

পূর্ব পর্বগুলো পড়ুন- !@@!462546 !@@!462547 !@@!462548 !@@!462549!@@!462550 !@@!462551 !@@!462552 !@@!462553 !@@!462554!@@!462555 !@@!462556 !@@!462557-!@@!462558-!@@!462559 (!@@!462560) স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে (ধারাবাহিক সত্য ঘটনাবলী) ============================= শুরু হলো তদবীর, দিনে যোগাযোগ, ফোন ও অন্যান্য নিতান্তই আত্মসম্মানবোধ বজায় থাকামূলক প্রচেষ্টা এবং রাতে 'সালাতুল ইস্তেখারা'; কারণ, শক্তিমানদের যুলুমের শিকার যখন এমন কেউ হয়, যেখানে তার এর বাইরে কিছুই করার থাকে না, তখন মাথা গরম করে সিদ্ধান্তে পৌঁছার চাইতে ধৈর্য্যই সঠিক পন্থা। 'এক্সিট সীল' পড়ার পর পাসপোর্টধারীকে এমাসের মধ্যেই দেশ ত্যাগ করতে হবে, অথচ একমাস পূর্ণ হওয়ার আর মাত্র তিন/চার দিন বাকী। বন্ধুদের সাথে চলে আমার খুবই সাধারণ আলাপচারিতা, হাসিতামাশা, একথায় সবকিছুই স্বাভাবিক; অনেকেই আশ্চর্য হয়ে বলে- 'ফজলে এলাহি ভাই, আপনার এতবড় বিপদ, আপনি কয়েকদিনের মধ্যে দেশে যাচ্ছেন নিতান্ত অনিচ্ছায়, অথচ আপনি দিব্যি হাসছেন, কিভাবে পারছেন?' বলি- 'কেন হাসবো না, আমার প্রতিপালক যদি আমার জন্য এদেশে আরো রিয্ক রেখে থাকেন, তো পৃথিবীর এমন কোন শক্তি নেই যে, আমাকে এখান থেকে বের করে দেবে। আর যদি তিনি আমার জন্য এদেশ থেকে ক'দি পর বের হওয়া নির্ধারণ করে থাকেন, তো পৃথিবীর কারো সাধ্য নেই যে, আমাকে এখানে এক মুহূর্তও ধরে রাখবে; অতএব চিন্তা কি, আমার প্রতিপালনের দায়িত্ব তো তাঁরই(আল্লাহর)। ' তো অবশেষে একদিন সালাতুল ফজরের পর সূর্যোদ্বয়ের অপেক্ষায় থাকলাম, তারপর ইস্তেখারার সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়লাম।

স্বপ্নে আসলো স্পন্সরের অফিস কক্ষ, টেবিলে বসা স্পন্সর আর পাশে দাঁড়ানো তার মিসরী ড্রাইভার, তত্ত্বাবধায়ক পাশ ফিরে স্পন্সর পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি কাগজ আমার হাতে দিয়ে বললেন নতুন স্পন্সর যেন তার নিকট ফোন করেন। ঘুম ভাঙ্গলো, মনে মনে আল্লাহকে বললাম- যেন সত্যি হয়। দিন চলে গেল, প্রতিদিনের মতই বন্ধুর দোকানে বসে বসে গল্প করে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ বন্ধুর ফোন বেজে উঠলো, খোঁজ করলো আমাকে, বললো তাড়াতাড়ি চলে আস অমুকের দোকানে। গিয়ে দেখি এ অফিস নয় বরং ইয়ানবোর কাঁচা বাজারের রাস্তাটি, রাস্তার একপাশে দাঁড়ানো তত্ত্বাবধায়কের গাড়ী, সে গাড়ীতে বসা আর তার ড্রাইভার গাড়ীর পাশে দাঁড়ানো, পাশ ফিরে আমার হাতে প্রয়োজনীয় তিনটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে ঠিক স্বপ্নের সবকিছুর মতই বললেন- নতুন স্পন্সরকে বলতে যেন তার নিকট ফোন করেন। আমি স্তম্ভিত! মনে মনে সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রশংসায় পঞ্চমুখ, কি আশ্চর্যভাবে মিলে গেল স্বপ্নের সাথে বাস্তবতা, শুধু স্বপ্নে ছিল অফিস কক্ষের চেয়ার টেবিল আর এখানে গাড়ী, চরিত্র তিনজন মিললো, কাগজ তিনটি মিললো, অবস্থানও মিললো, এমনকি পার্শ্ব ফেরা এবং কথাটাও হুবহু মিলে গেল।

সোবহানআল্লাহ্। সেদিনের পর থেকে আমার ঈমান আরো দৃঢ় হলো যে, দয়াময় আল্লাহর নিকট প্রাণের নির্যাস মিশিয়ে কিছু চাইলে তিনি ফিরিয়ে দেন না; আজ না হোক কাল তা দেবেনই, নিশ্চিত। প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণীও সত্যে পরিণত হলো, যেমনটি তিনি বলেছেনঃ ((যখন তোমাদের মধ্যে কেউ কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজের পদক্ষেপ নেয়ার ইচ্ছা করে, সে যেন দু'রাকা'আত নফল সালাত আদায় করে এবং এ দো'আ পড়ে. . . . (ইস্তেখারার দো'আ)। )) [ইবনে মাজাহঃ ১৩৮৩]। ইস্তেখারা বলতে বুঝায় 'কল্যাণের ইঙ্গিত প্রার্থনা'।

প্রবাসের দ্বিতীয় বছরও যখন ব্যবসা শুরু করবো কি করবো না, ভাল হবে না মন্দ হবে; তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলাম, তখন ইস্তেখারার মাধ্যমে স্বপ্নে দেখতে পেলাম যে, আমি সেই ব্যবসাই করছি, তারপর যতদিন করলাম ভালই পাওয়া হলো। সুতরাং মুমিনদেরও উচিত সব ভালকাজের পূর্বে ইস্তেখারা করা এবং অন্য মুমিনদের সাথে পরামর্শ করা। কারণ, 'যে ব্যক্তি সৃষ্টিকর্তার নিকট ইস্তেখারা করে এবং সৃষ্টজীবের মাঝে মুমিনদের সাথে পরামর্শ করে আর তার কর্মে দৃঢ়পদ থাকে, সে কখনো অনুতপ্ত হয় না। ' (((চলতে দিন না, কি বলেন?))) ছবির জন্য !@@!463063 যেখানে। ছবি ইয়ানবো পাওয়ার প্লান্ট, তৈল শোধনাগার ইত্যাদির; রাতের এই আলোক মনোরমতা আমি দারুন উপভোগ করতাম।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।