সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন এক সময়ের বিএনপি নেতা হুদা। ‘ধান গাছ’ লোগোধারী দলটি গঠনের সরকারের মদদ রয়েছে বলে বিএনপির অভিযোগের মধ্যে তার এই ঘোষণা এল।
বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট- বিএনএফ গঠনের শুরুতে নাজমুল হুদা যুক্ত থাকলেও পরে তিনি নিজেকে এ থেকে সরিয়ে নেন।
বর্তমানে বিএনএফের নেতৃত্বে রয়েছেন আবুল কালাম আজাদ। বিএনপির এক সময়ের নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহানারা বেগমকেও এর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যায়।
ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা সোমবার বিকালে রাজধানীর তোপখানা সড়কে তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিএনএফ গঠনে নিজের উদ্দেশ্য এবং বর্তমানে তা ‘বিলুপ্তিতে’ নিজের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করেন।
“আমি যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমার প্রয়াত নেতা শহীদ জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত সংগঠন জাতীয়বাদী ফ্রন্টকে সুপ্ত অবস্থা থেকে রাজনৈতিক দল হিসেবে পুনরুজ্জীবিত করেছিলাম। ”
“এখন দলটির প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বিএনএফের সেই উদ্দেশ্যকে সম্পূর্ণভাবে নস্যাৎ করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সেজন্য আমি বিএনএফ বিলুপ্ত ঘোষণা করছি। ”
আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে বিএনএফ।
তাদের দলীয় পতাকা ধানের শীষ প্রতীকধারী বিএনপির প্রায় অনুরূপ।
বিএনএফ গঠনকে বিএনপি ভাঙার ‘ষড়যন্ত্র’ দাবি করে দলটিকে নিবন্ধন না দিতে নির্বাচন কমিশনকে ইতোমধ্যে হুঁশিয়ার করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বিএনএফকে নিয়ে জটিলতায় পড়া সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ রোববার বলেছেন, এই দলটি নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করেছে কি না, সে বিষয়ে ইসির কর্মকর্তাদের তথ্য যাচাইয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বিএনএফকে নিবন্ধন না দিতে নাজমুল হুদা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
“নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানাচ্ছি, আমার অধীনে বিএনএফের যে নিবন্ধনের আবেদন করা হয়েছিল, তা অবিলম্বে নাকচ করে দিন।
আহ্বায়ক হিসেবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমি বিএনএফের আবেদন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। ”
আত্মপ্রকাশের ঘোষণার সময় বিএনএফের আহ্বায়ক নাজমুল হুদা বলেন, দল ‘বিলুপ্তির’ সিদ্ধান্ত জানিয়ে একটি চিঠি তিনি শিগগিরই ইসিতে পাঠাবেন।
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপি থেকে ২০১০ বহিষ্কৃত হন সহসভাতি নাজমুল হুদা। ২০১২ সালের অগাস্ট মাসে তিনি বিএনএফ গঠনের ঘোষণা দেন। এরপর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিজেকে ওিই দল থেকে সরিয়ে নেন।
নাজমুল হুদা বলেন, “বিএনএফের উদ্দেশ্য বিএনপিকে ধ্বংস করা নয়, বরং ১৮ দলীয় জোটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এর শক্তি বৃদ্ধি করা, যাতে নির্দলীয় সরকারের আন্দোলন সফল হয়। ”
“২০১২ সালে আমি দলটির প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে আবুল কালাম আজাদকে নিয়োগ দিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখজনক হল, তিনি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। ”
সংসদ ভেঙে আগামী নির্বাচনের দাবির বিষয়ে নিজের আগের দল বিএনপির সঙ্গে একাত্মতা জানান নাজমুল হুদা।
“প্রধানমন্ত্রীকে বলব, অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিঢে বিরোধীদলীয় নেতাকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করুন।
নির্বাচনকালীন ক্ষমতা ওই কমিশনের হাতে ন্যস্ত করে সব দলের সমান সুযোগ সৃষ্টি করুন। ”
নাজমুল হুদা বলেন, “জাতিসংঘসহ সবাই চায়, সব দলের অংশগ্রহণে আগামী সংসদ নির্বাচন হোক। শুধুভারত এখনো এই দাবির পক্ষে কোনো সমর্থন জানায়নি।
“আমি আশা করব, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারত অবিলম্বে দেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবির পক্ষে সমর্থন জানাবে ও বর্তমান সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে এই দাবি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।