জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিন নিয়োগ প্রত্যাহারের দাবিতে রেজিস্ট্রার ও ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে টানা চার দিন ধরে অবরুদ্ধ রেখেছেন উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। এদিকে শিক্ষকদের আন্দোলন আর উপাচার্যের একগুঁয়েমি সিদ্ধান্তের কারণে ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে একদিকে শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে, অন্যদিকে রেজিস্ট্রারকে অবমুক্ত করতে কর্মবিরতি পালন করছে অফিসার সমিতি। ফলে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ায় অচল হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ডিন নিয়োগ বাতিলের দাবিতে নিয়োগ ফাইলসহ রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবু হাসানকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন তৈরি পর্যন্ত টানা চার দিন অর্থাৎ প্রায় ৭৬ ঘণ্টা ধরে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ রয়েছেন তারা। তবে এ সময়ের মধ্যে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য কিংবা ট্রেজারার কেউই খোঁজ নেননি তাদের। অন্যদিকে নির্ধারিত সময়ের (৩০ সেপ্টেম্বর) মধ্যে পদত্যাগ না করায় ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে ১ সেপ্টেম্বর থেকে উপাচার্যের বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষকরা। নিজ বাসার সামনে শিক্ষকদের অবস্থানের প্রতিবাদে স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই পাল্টাপাল্টিভাবে অবস্থান করছেন উপাচার্য। এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, 'একজন নির্বাচিত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষকদের এ ধরনের অবস্থান নাগরিক অধিকার ও আইনের পরিপন্থী। একজন শিক্ষকও যদি আমার বাসার সামনে অবস্থান করেন তাহলে আমি বাসভবনে প্রবেশ করব না।' এদিকে গতকাল বিকাল ৫টায় সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঠানো একটি বিজ্ঞপ্তিকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন শিক্ষক ফোরামের সদস্য সচিব অধ্যাপক কামরুল আহসান। এ সময় উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান। রেজিস্ট্রারকে অবরোধমুক্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ডিন নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেই রেজিস্ট্রারকে অবরোধমুক্ত করা হবে। অন্যদিকে অবরোধের চার দিন পেরিয়ে গেলেও রেজিস্ট্রারকে অবমুক্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রেজিস্ট্রার ও উপ-রেজিস্ট্রারকে অবমুক্ত করার দাবিতে বুধবার থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ ও কর্মবিরতি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও উপ-রেজিস্ট্রারকে অবমুক্ত করা না হলে কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেন সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম মো. শরীফ। এদিকে শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে অধিকাংশ বিভাগেই ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
তবে আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া কিছু শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। একদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষক, অন্যদিকে অফিসার সমিতির কর্মবিরতিতে অচল হয়ে পড়েছে গোটা ক্যাম্পাস। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম। ফলে চরম সেশনজটের আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।